দেশে কর্মসংস্থান ও রপ্তানি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে তৈরি পোশাক খাত। কভিড-১৯-এর প্রভাবে এই খাতে দেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, যা পোশাক খাতে মোট শ্রমিকের ১৩.৯৫ শতাংশ।

‘কভিড-১৯ বিবেচনায় পোশাক খাতের দুর্বলতা, সহনশীলতা এবং পুনরুদ্ধার : জরিপের ফলাফল’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এন্টারপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্টের (সিইডি) ম্যাপড ইন বাংলাদেশ (এমআইবি) যৌথভাবে এই সমীক্ষা পরিচালনা করে। গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত এই সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। সঞ্চালনা করেন এমআইবির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সৈয়দ হাসিবুদ্দিন হাসিব।

সমীক্ষায় বলা হয়, পোশাক খাতের ২৫ লাখ ৬২ হাজার শ্রমিকের মধ্যে সাড়ে তিন লাখের বেশি শ্রমিক করোনার এই সময়ে কাজ হারিয়েছেন। এই সময়কালে ২৩২টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, যার মধ্যে ১৮০টি বিজিএমইএর সদস্য। ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের ৬১০টি পোশাক কারখানার ওপর এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। পোশাক খাতের সংগঠনের সদস্য—এমন কারখানার সংখ্যা ৮২ শতাংশ এবং সদস্য নয় এমন কারখানা ১৮ শতাংশ। মোট পোশাক কারখানা তিন হাজার ২১১টি।

সমীক্ষায় আরো বলা হয়, কয়েকটি বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ওপর অতিনির্ভরতার কারণে অনেক বড় কারখানাও এ সময়ে বন্ধ হয়েছে গেছে। দেখা গেছে ৫০ শতাংশের বেশি কারখানা বড় বড় কয়েকটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এ ছাড়া কোনো পোশাক খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠনের সদস্য নয় এমন কারখানাগুলো সবচেয়ে বেশি বন্ধ হয়েছে। ফলে ৭৮ শতাংশ উদ্যোক্তাই সংকটে পড়েছেন।

সরকারের প্রণোদনার তথ্য তুলে ধরে সমীক্ষায় বলা হয়, পোশাক খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠনের সদস্য নয় এমন এবং নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের বেশির ভাগ কারখানা ব্যাংকিং জটিলতার কারণে ঋণসুবিধা পায়নি। ৯০ শতাংশ কারখানার বিপরীতে মাত্র ৪০ শতাংশ ছোট কারখানা এই আবেদন করে। কার্যাদেশ বাতিলের পর ১৬ শতাংশ কারখানা অর্ডার ফেরত পেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্রেতারা দাম কমিয়ে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে সুপারিশে বলা হয়, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক খাত পুনরুদ্ধারে বিদেশি ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে ন্যায্য বাণিজ্যচর্চা নিশ্চিত করতে হবে। বড় কারখানার তুলনায় ছোট কারখানা পুনরুদ্ধারের গতি অনেক ধীর। ক্রেতারা রপ্তানি আদেশ না দিলে এসব কারখানার কর্মকাণ্ড স্থ্থবির হয়ে পড়বে।

সংলাপে সিপিডি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে ঝুঁকির বোঝা একতরফাভাবে শুধু উৎপাদক দেশকেই নিতে হয়। অথচ মাত্র দুই ডলারে কেনা পোশাক ২২ ডলারে বিক্রি করে ব্র্যান্ডগুলো। এটা অর্থনীতির কোনো নীতিতে পড়ে না। এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের বোঝাপড়া ও দর-কষাকষিতে ঘাটতি আছে। তিনি বলেন, ২০ থেকে ৩০ বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করার পর কত টাকা বেগমপাড়ায় গেছে আর কত টাকা শিল্পের সংকটকালে ব্যয় হয়েছে তার একটা গবেষণা থাকা দরকার। পোশাক খাতের ক্ষতি ও মুনাফা নিয়ে গবেষণা করা দরকার।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews