বৈশ্বিক নারী অধিকার আন্দোলনের মতো বাংলাদেশের নারী অধিকার আন্দোলনকেও অনেক বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। তবু দাবি থেমে থাকেনি, থেমে থাকেনি অগ্রগতিও। বাংলাদেশ নারী অগ্রগতিকে মানবাধিকার ও সামগ্রিক উন্নয়নের মূল স্রোতে নিয়ে এসেছে। এর অংশ হিসেবে সরকার ১৯৯৫ সালের বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন অনুমোদন করে ১৯৯৭ সালে ‘জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি’ প্রণয়ন করে, যা ২০১১ সালে হালনাগাদ হয়। ২০১৩ সালে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়, যা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে নারীর মানবাধিকার নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট ভূমিকা প্রদান করে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো এই নীতিমালারই সম্প্রসারিত রূপ। তবে এতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংযোজিত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী নীতিমালায় অস্পষ্ট ছিল। যেমন সম্পত্তিতে সমান অধিকার, বিয়ে ও পারিবারিক জীবনে সমতা, রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীর অংশগ্রহণ এবং বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি। এই দাবিগুলো নতুন নয়, নব্বইয়ের দশক থেকেই এগুলো নারী অধিকার আন্দোলনের অংশ।
দুঃখজনকভাবে নারী অধিকারের প্রশ্নে প্রতিরোধ ও আপসের রাজনীতি সব সময়ই দৃশ্যমান। উদাহরণ হিসেবে সিডও সনদের কথা বলা যায়। এর পূর্ণ অনুমোদন গত ৪১ বছরেও হয়নি। তবে সম্প্রতি প্রতিবাদের নামে যে বিভ্রান্তি ও বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে, তা ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। অনেকের মতে, এই প্রতিক্রিয়া নারী অধিকার আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে, থামাতে পারবে না।