খাদ্য ও চর্মরোগ

আমরা অনেকেই ছোটবেলা থেকে শুনে অভ্যস্ত যে চর্মরোগ হলে অনেক রকম খাবার খাওয়া যায় না। এলার্জিক হোক না হোক, গড়পড়তা অনেক খাদ্য নিষেধ মেনে চলতে হয়। আবার অনেকে চর্মরোগটি খাদ্য-নিষেধ না হওয়া সত্ত্বেও মনে করে থাকে যে এলার্জিক কিছু খেলেই তার চর্মরোগটি বেড়ে যায়। এদেশে এই ধরণের মতবাদ এখনও বেশ চালু রয়েছে। চর্মরোগটি খাদ্য সংপৃক্ত নয়- এটা বললে রোগীরা অনেক সময় চিকিৎসকের জ্ঞান নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে। কেননা চিকিৎসা বিষয়ক জ্ঞানী ভাবাপন্ন অনেকের পাশাপাশি কবিরাজ, হাকিম, বৈদ্য, কোয়াকদের দৌরাত্ম্যে সকল ধরণের চর্মরোগে খাদ্য নিষেধ- এক প্রকার ধ্রুব সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কিছু কিছু চর্মরোগ আছে যা কিনা সত্যি সত্যি নির্দিষ্ট কিছু খেলে বেড়ে যেতে পারে, অথবা ওই খাদ্য নিজ থেকেই এলার্জি উৎপন্ন করে থাকে। কিছুকিছু খাদ্যের প্রোটিন অংশ খাওয়া গেলে বা স্পর্শ লাগলে আমাদের শরীরে এক প্রকার তড়িৎ বা দীর্ঘায়িত ইমিউনোজিক্যাল এলার্জিক বিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। শিশুদের এটি বেশি দেখা যায় এবং একাধিক খাদ্য থেকেও হতে পারে। আবার এটি হতে পারে বংশানুক্রমিক। খাদ্য সংপৃক্ত এই জাতীয় চর্মরোগের মধ্যে নানা ধরণের আরটিকেরিয়া, স্পর্শ ও ফটো এলার্জি, এটোপিক সহ কিছু একজিমা, ডারমাটাইটিস হারপিটিফরমিস, ইত্যাদি অন্যতম। আবার কিছুকিছু খাদ্য সরাসরি মারাত্মক শ্বাস কষ্ট নিয়ে এনাফাইলেক্সিস জাতীয় এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। চামড়া ছাড়াও এই খাদ্য শরীরে অনান্য তন্ত্রে আঘাত হানতে পারে। যেমন- শ্বাস-তন্ত্রে হে ফিভার, এজমা, খাদ্য-তন্ত্রে বমি বা বমিভাব, বুক জ্বালা, পাতলা বা শক্ত পায়খানা সহ পেটে ব্যথা খিঁচুনি, সামগ্রিকভাবে ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়া নিয়ে এনাফাইলেক্সিস শক, ইত্যাদি।

মনে রাখতে হবে ফুড ইনটলারেন্স বলে এক ধরণের রোগাবস্থা রয়েছে যা কিনা লক্ষণ-উপসর্গ কাছাকাছি হলেও, খাদ্য এলার্জি নয়। এলার্জিক খাদ্য পরিধি কিন্তু বিশাল। ডিম, দুধ, বাদাম, সয়া, খোলস-যুক্ত বা সামুদ্রিক মাছ, লাল মাংস, নানা প্রকারের মশলা সহ লতা-গুল্ম শাকসবজি, খাদ্যে ব্যবহৃত নানান প্রিজারভেটিভ, ইত্যাদি ছাড়াও যেকোন খাদ্য এলার্জি ঘটাতে পারে। তবে সবারই যে সবকিছুতে এলার্জি হবে তা কিন্তু নয়। গড়পড়তা সব খাদ্য বন্ধ করে দিলে শরীরে নানা সমস্যা যেমন- প্রোটিন, ক্যালরি, ভিটামিন বি, সি, ডি, জিঙ্ক, আয়রণ ঘাটতিতে নানান রোগের উদ্ভব হতে পারে। এলার্জিক খাদ্য নির্ধারণের জন্য রোগি নিজেই খাদ্য এলার্জির ইতিহাস বলতে পারে। পাশাপাশি লাগতে পারে চিকিৎসকের সাহায্য। সেই সাথে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিরোধ এবং প্রতিকারের প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে- এলার্জিক খাদ্য বা খাদ্য-সমূহ নির্ণয় করে তা গ্রহণ বা স্পর্শ থেকে বিরত থাকা। এরপর রোগের অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হয়। সাধারণ অবস্থায় মুখে খাবার এন্টি-হিস্টামিন, একজিমার জন্য স্টেরয়েড, শ্বাসকষ্টে ইনহেলার এবং জরুরি অবস্থায় এড্রেনালিন প্রয়োগ হতে পারে।

পূর্বকোণ/এসি



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews