গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় পুরো দেশ যখন তোলপাড় ঠিক তখনই বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেছেন, নাগরিক ঐক্য এর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি এই হামলার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি নুরের দেওয়া এই কর্মসূচিকে জাস্টিফাইড মনে করেন না বলে মন্তব্য করেছেন।
সম্প্রতি দেশের প্রথম সারির একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “তিনি (নুর) যে কর্মসূচিটা নিয়েছিলো এটাকেও আমি জাস্টিফাইড বলে মনে করি না। এই মুহূর্তে জাতীয় পার্টি কোন বড় দ্বন্দ্বের বিষয় নয়। সমস্যার বিষয় নয়। সেই জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার জন্য আলাদা কর্মসূচি করতে হলো? (আমার) মনের মধ্যে প্রশ্ন হয় এটাতো হওয়ার কথা না। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই কারণে তাদেরকে (জাতীয় পার্টি) নিষিদ্ধ করা হবে। এটার মধ্যে কী আছে?”
এরপর তিনি নুরের ওপর হামলার ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ওঠা বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বলেন, “আমি ফেসবুকে দেখেলাম, অনেক স্পেকুলেশন হচ্ছে এটা নিয়ে, এটা না করলে ভালো হতো। কিন্তু, সেটা আমি ধরছি যে এটা ভুল করেছে। কোন শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন তা তো না। যেভাবে তাকে হ্যাকেল করা হয়েছে এটি অমানবিক এবং অচিন্তনীয়। সামরিক বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে তাদের পেটাচ্ছে, বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে বের করে নিয়ে এসে শারীরিক নির্যাতন করছে। কল্পনাই করা যায় না।”
এই ঘটনা কেন ঘটলো এই প্রশ্ন রেখে মাহমুদুর রহমান মান্না তদন্ত এর বিষয়ে সামনে এনে বলেন, “এইটা কেন করা হলো? যদিও আমি দেখেছি সরকার একটা বিবৃতি দিয়েছে। বলেছেন যে একদম পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। তদন্তের নাম করে ১৫ দিন লাগবে। কারণ যারা যারা মেনেছে চেহারাই তো দেখা যাচ্ছে। নিশ্চয়ই অরমি হেডকোয়ার্টারে কয়েকজনকে ডেকে এখনই ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে পারতো তা নেয়নি তো তা থেকে আবার বলছে বিবৃতিটাও লোক দেখানো।”
আহত নুরুল হক নুরকে দেখতে হাসপাতালে যান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, এ বিষয়টি নিয়ে নাগরিক ঐক্য এর এই শীর্ষ নেতা গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন রাখেন।
তিনি বলেন, “তবে আসিফ নজরুল যাবার পরে তার সাথে যে আচরণটা করা হয়েছে সেটা থেকে আমি দুঃখিত হয়েছি আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ধৈর্যের অভাব শ্রদ্ধা এবং সম্মানবোধের অভাবলে আসিফ নজরুল তো এদের সহযোগী ছিলেন। আমি আন্দোলনের সময় দেখেছি যে ইনি তাদেরকে সহায়তা দিতে গেছেন। এমনকি এবারেও শিক্ষার্থীদের যে অভ্যুত্থানটা হলো সেখানেও তিনি খুব ভালো ভূমিকা পালন করেছিলেন। ঠিক আছে তিনি যে সরকার আছে সেই সরকারের আরমি। এই আরমি তো এই অর্থেই সরকারের আরমি না। সরকারটা তো সবার। এটার কোন পলিটিক্যাল পরিচয় নেই। কোন পার্টি নেই। এই আচরণটাও বলে যে আমাদের জাতি এক ধরনের অধৈর্যের মধ্যে পড়েছি। একটা ভুলের পথে অগ্রসর হচ্ছে। মানে একটা সংকট হলে সেটাকে সমাধান করবার জন্য যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সহযোগিতার মনোভাব থাকা দরকার এগুলো নাই। আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে এটা তো না হওয়ার কথা ছিল। যদিও শেষের দিকে দেখেছে দেখেছি যে গণঅধিকার পরিষদের যিনি সদস্য সচিব তিনি সম্মানের সঙ্গেই তাকে আবার গাড়িতে উঠিয়ে দিচ্ছেন কিন্তু তার দলের সব নেতাকর্মীদের আচরণ তো বোঝায় যে দলের মধ্যে এই ভদ্রতা আচরণ বিধিয়ে এগুলো শেখানো হয় না বলা হয় না দুঃখজনক।”