খাগড়াছড়ির প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মসজিদের নাম খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় শাহী জামে মসজিদ। ১৮৪০ সালে টিন সেটের এই মসজিদ ১৫০ বছর পেরিয়ে এখন সুবিশাল পাকা মসজিদে রুপান্তরিত হয়েছে। পাহাড়ে এই মসজিদকে ঘিরে সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহ-অবস্থান বিরাজ ছিল।
তথ্য অনুসন্ধান করে জানা গেছ , প্রয়াত তৎকালীন লাল মিঞা কারিগরের মেজ ছেলে প্রয়াত হাজী বাদশা মিঞা সওদাগরের একক প্রচেষ্টায় এই মসজিদটি ১৮৪০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তিনি তৎকালীন অবিভক্ত তিন পার্বত্য জেলার একমাত্র রাঙামাটি জেলা থেকে সেই সময়ের ডিসি আলী হায়দরের সার্বিক সহযোগিতায় মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। এসময় তাকে ব্যবসায়ী প্রয়াত হাজী মকবুল হোসেন সওদাগরসহ অনেকে সহযোগিতা করেছিলেন।
মসজিদটি পৌর শহরের মাঝখানে অবস্থিত। সুবিশাল তিনতলা বিশিষ্ট নানা কারুকাজে সুসজ্জিত মসজিদ ভবন। মিনার সুউচ্চ ও আলোক সজ্জিত হওয়ায় আলুটিলা পাহাড় থেকে দাঁড়িয়ে দেখা যায় এই মসজিদ। শহরের ঠিকানাও চিহিৃত করা যায় সহজে এই মসজিদের মিনার দেখে।পুরনো এই মসজিদে সেই সময় থেকে অনেকেই মানত করত। মনোবাসনা পূর্ণ করতে সকল ধর্মের মানুষ মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করতো। হাজী বাদশা মিঞা সওদাগর মৃত্যুবরণ করার পর থেকেই তার বড় ছেলে হাজী মো. শাহ আলম এ মসজিদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতেন। তার বয়স হওয়ায় বর্তমানে কার্যকরী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন মরহুম বাদশা মিঞা সওদাগরের ভাতিজা হাজী মো. জাহেদুল আলম।
তিনি জানান, মসজিদের নিজস্ব জায়গায় রয়েছে বেশ কয়েকটি মার্কেট। বিশাল এ মসজিদে একজন খতিবসহ আটজন লোকবল রয়েছে। এখানে সকালে ছোটদের মকতবে পড়ানো হয়। মসজিদে প্রায় ৫ হাজার লোকের এক সাথে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সুন্দর পরিপাটি ও নান্দনিক আলোকসজ্জায় সজ্জিত মসজিদটি রাতের বেলায় ঝিকঝিক করে, যা এখানকার পর্যটক ও নানা ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে সৌন্দর্যের রুপ রেখা হিসেবে দেখা দেয়। নানা কালের সাক্ষী হয়ে আছে এই মসজিদ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই