আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ - ১৫:২৫ | প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ - ১৫:২১

সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: ঠোটের কোণায় কিংবা বর্ডারে একগুচ্ছ ফুসকুড়ি। সাধারণভাবে আমরা একে বলে থাকি জ্বরঠোস, জ্বর-ঠোসা বা জ্বরঠুঁটো। এটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ফিভার ব্লিস্টার বলেন। প্রকাশ পাবার ২-৩ দিনের মধ্যে ব্লিস্টারে ব্যথা অনুভব হলে তখন একে বলা হয় কোল্ড সোর।

লক্ষণ: ঠোটের কোণে, বর্ডারে বা বর্ডারের আশেপাশে গুচ্ছ-বদ্ধ ফুসকুড়ি, জ্বর, ব্যথা, বমিভাব কিংবা বমি, মাথাব্যথা।

কেন হয়:

আমাদের অনেকের ধারণা রাতে রাতে জ্বর আসলেই নাকি জ্বরঠোসা হয়।আসলে তা নয়। ফিভার ব্লিস্টারের কারণ হচ্ছে HSV-1 ইনফেকশন। এই ইনফেকশনের  কারণেই জ্বর আসে! তবে হ্যাঁ,জ্বরের কারণেও ফিভার ব্লিস্টার হতে পারে যদি সেই জ্বর অন্যকোন ইনফেকশনের কারণে হয় যা শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়।

যাদের বেশি হয়: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৮০% মানুষই HSV-1 এ আক্রান্ত থাকেন। কিন্তু বেশিরভাগই সুপ্ত অবস্থায় থাকে এবং দশ বছর বয়সে প্রথম প্রকাশ পায়। প্রথমবার হওয়া ফিভার ব্লিস্টার সেরে যাবার পর HSV-1 স্নায়ুকোষে লুকিয়ে থাকে এবং জীবনে বারবার এর প্রকাশ ঘটে।

নিম্নোক্ত কারণগুলোর জন্য ফিভার ব্লিস্টার পুনরায় প্রকাশিত হতে পারে: 

১. কোন ইনফেকশন। 

২. মানসিক চাপ। 

৩. মেয়েদের মাসিকের সময়। 

৪. সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি।

সাধারণভাবে ৭-১৪ দিন উপসর্গ বর্তমান থাকলেও ৮-১০ দিনের মধ্যে মধ্যে ফিভার ব্লিস্টার এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে প্রথম সপ্তাহে অ্যান্টি-ভাইরাল জেল লাগালে আরোগ্যে দ্রুত হয়।

তবে ১৪ দিনের বেশি সময় ব্যথাযুক্ত ফিভার ব্লিস্টার থেকে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। খালি চোখে দেখেই ফিভার ব্লিস্টার সনাক্ত করা সম্ভব। তবে ব্লিস্টারের ভিতরের তরল থেকে ডিরেক্ট ইমিউনোফ্লুরোসেন্স টেস্ট বা পলিমারেজ চেইন রিএ্যাকশনের মাধ্যমে ভাইরাস সনাক্ত করা যেতে পারে।

জ্বর ঠোসা সারানোর সহজ ৫ উপায়

জ্বর ঠোসা হলে তা নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগা স্বাভাবিক। কারণ এটি যন্ত্রণাদায়ক তো বটেই, সেইসঙ্গে মুখের সৌন্দর্যও নষ্ট করে। জ্বর ঠোসা বেশ পরিচিত একটি সমস্যা। আয়তনে এরা ক্ষুদ্র এবং তরলে ভরা থাকে। সাধারণত ঠোঁটেই এদের আধিক্য দেখা যায়। এই জাতীয় ফোসকা ফেটে যাওয়ার পরে একটি ক্রপ ফর্ম তৈরি করে।

জ্বর ঠোসা নিজে থেকেই নিরাময় হয়, তবে সম্পূর্ণরূপে ভালো হতে সপ্তাহ চারেক সময় নিতে পারে। দ্রুত এটি সারিয়ে তুলতে চাইলে মেনে চলুন এই সহজ ঘরোয়া উপায়গুলো-

আইস কিউব

একটি আইস কিউব নিন। এই আইস কিউবটিকে কিছুক্ষণ ঘাঁয়ের ফোলা অংশে ধরে রাখুন। কিন্তু স্ক্রাচিং করবেন না। একদিনে কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করুন।আইস কিউব আপনার ফোলা ভাবকে দূর করবে এবং দ্রুত ঘা সারিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

নারিকেল তেল

নারিকেল তেল এবং সুতির কাপড় নিন। সুতির কাপড় নারিকেল তেলে ভিজিয়ে আপনার ক্ষতস্থানে হালকা চেপে চেপে লাগান। প্রত্যেক ঘণ্টায় এটি ব্যবহার করুন। নারিকেল তেল একটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্ট। এতে ট্রাইগ্লিসারাইডস রয়েছে, যেমন লৌরিক এসিড এবং ওলিক এসিড, যা ভাইরাসকে মারতে পারে এবং ঠান্ডা কালশিটে দ্রুত অপসারণ করতে পারে।

রসুন

একটি ছোট রসুনের কোয়া নিন। রসুনের কোয়া বেটে সরাসরি ক্ষততে প্রয়োগ করুন। ভালো ফলাফলের জন্য, সকালে, খালি পেটে কাঁচা রসুনও খেতে পারেন। দিনে দুই থেকে তিনবার প্রয়োগ করুন। রসুনের নির্যাস হার্পিস সিম্পলক্স ভাইরাসএর উপর ভিরুসইডল এফেক্টেড ফেলে।

মধু

আধা চামচ মধু নিন। আপনার আঙ্গুলের সাহায্যে মধু, ক্ষতস্থানে ৫ থেকে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। দিনে দুবার ব্যবহার করুন। মধু অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রোপারটিস সমৃদ্ধ। এটি যে কেবলমাত্র সংক্রামিত কালশিটে নিরাময় করতে পারে তা নয়, ফুলে থাকা ত্বককেও শান্ত করে।

দুধ

কটন বল এবং সামান্য দুধ নিন। কটন বলটি দুধে ভিজিয়ে ঘাঁয়ের ওপরে লাগিয়ে, কিছু সময় অপেক্ষা করুন। ২ ঘণ্টা পরপর ব্যবহার করুন। দুধে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি ভাইরাল প্রপার্টি আছে। এটি কেবল সংক্রমণটি পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেই নয়, আপনার ত্বকে শীতল করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

প্রতিরোধ:

১. ব্যবহৃত পানির গ্লাস, চামচ, লিপস্টিকসহ অন্যান্য কসমেটিক্স কারো শেয়ার না করা। ২. ছোটদের চুমু না দেয়া।

৩. ব্লিস্টার স্পর্শ করলে ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলা।

৪. মানসিক চাপ মুক্ত থাকা।

৫. চুম্বন এবং ওরাল সেক্স থেকে বিরত থাকা।

৬. সানস্ক্রিন ক্রিম, লিপ-বাম ব্যবহার করা।

৭. পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews