এখন অনেকের বাড়িতেই ওয়াশিং মেশিন আছে। চট জলদি কাপড় ধুয়ে ফেলা যায়। সময়ের অভাবে অনেকই ওয়াশিং মেশিন বর্তমানে কিনে থাকে। বেশ দামি হওয়াতে এটা সঠিকভাবে ব্যবহার করা উচিত।
বিজ্ঞাপন
কষ্টের টাকায় কেনা জিনিস তাহলে অনেক দিন ভালো থাকবে। শুধু ওযামিং মেশিন কেন? সকল প্রকার যন্ত্রেরই যত্ন নেওয়া উচিত। এবার চলুন জেনে নেই ওয়াশিং মেশিন কিভাবে যত্নে রাখবেন।
যেভাবে পরিষ্কার করবেন
ওয়াশিং মেশিনের মতো অত বড় মেশিন পরিষ্কার কথা তো মুখের কথা নয়। এটি এমন এক মেশিন যেটা ঘরের সমস্ত কাপড়, পর্দা, বেডশিট সবকিছু পরিষ্কার করে। এটি ময়লা, অপরিষ্কার পোশাক পরিষ্কার করে। ডিটারজেন্ট দিয়ে যখন মেশিনে জামাকাপড় কাচা হয়, তখন তা থেকে ময়লা পানি নল দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। তবে জানেন কী? কাপড় থেকে বের হওয়া জীবাণু প্রায় সময়ই মেশিনে থেকে যায়। এগুলি সাদা চোখে দেখা যায় না বলে আমরা খেয়াল করি না। এভাবে চলতে থাকাটা অস্বাস্থ্যকর। তাই নিয়মিত মেশিন পরিষ্কার করাটা জরুরি। কাপড় থেকে ছোট ছোট রোয়া উঠে মেশিনে থেকে যায়।
ওয়াশিং মেশিনে সাধারণত ধরন দুই রকমের হয়।
**টপ লোডিং
** ফ্রন্ট লোডিং।
দুটি মেশিন পরিষ্কার করার ধরন আলাদা। তাই টপ এবং ফ্রন্ট লোডিং, দুই ধরনের মেশিন পরিষ্কার করার কৌশলই জেনে রাখা দরকার।
টপ লোডিং ওয়াশিং মেশিন পরিষ্কার করার উপায়
১. টপ লোডিং ওয়াশিং মেশিন পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজন হবে সাদা ভিনিগার, বেকিং সোডা, মাইক্রোফাইবার ক্লথ, টুথব্রাশ।
২. ওয়াশিং মেশিনে প্রথমে পানি ভরে নিন। যতটুকু নেওয়া যায় ততটুকু ভরে নিন। মেশিনে গরম পানির অপশন থাকলে গরম পানি দিয়ে নিবেন। যদি এই অপশন না থাকে আলাদা করে পানি হালক গরম করে ঢেলে দিন।
৩. এবার ১০০ মিলিলিটার সাদা পানিতে দিয়ে দিন। এরপর দুই মিনিট ওয়াশে চালিয়ে নিন।
৪. দুই মিনিট চালিয়ে বন্ধ করে মেশিনের ঢাকনা খুলে রেখে দিন ঘণ্টাখানেক। এই তরলটি ওয়াশিং মেশিনের ভিতরে বাসা বাঁধা জীবাণুদের মারতে সাহায্য করে।
৫. এই বন্ধ থাকা অবস্থায় ভিনিগার, মাইক্রোফাইবার ক্লথ এবং টুথব্রাশ দিয়ে মেশিনের বাকি অংশ পরিষ্কার করে ফেলুন।
৬. এবার মেশিনের ঢাকনাটি তুলে বেকিং সোডা দিয়ে দিন। তারপর মেশিন আবার চালু করে দিন। দুটি সাইকেল শেষ হলে মাইক্রোফাইবার কাপড় ভিনিগার এবং বেকিং সোডা মেশানো দ্রবণে ভিজিয়ে ড্রামটি ভাল করে মুছে নিন। ঢাকা খুলে রেখে খোলা হাওয়ার ড্রাম শুকোতে দিন।
** ফ্রন্ট লোডিং ওয়াশিং মেশিন পরিষ্কার করার উপায়
১. ফ্রন্ট লোডিং ওয়াশিং মেশিন পরিষ্কার করতে সাদা ভিনিগার, ব্লিচ, বালতি, স্পঞ্জ এবং শুকনো কাপড় প্রয়োজন হবে।
২. মেশিন চালু করে পানি ভরে নিন। ঠিক যেভাবে মেশিনে কাপড় দিয়ে চালু করেন। এখানে পার্থক্য শুধু কাপড় থাকবে না।
৩. এরপর দুই কাপ সাদা ভিনিগার ডিটারজেন্ট ট্রে-তে ঢেলে দিন। এবার ওয়াশ অ্যান্ড স্পিন সাইকেলে মেশিন চালিয়ে দিন। এর ফলে মেশিনের ভিতরে বাসা বাঁধা জীবাণু ধ্বংস হবে।
৪. এই সাইকেল শেষ হলে আবার একটি ওয়াশ অ্যান্ড স্পিন সাইকেল শুরু করুন। কিন্তু এবার পানি ভরে ভিনিগারের পরিবর্তে ডিটারজেন্ট ট্রে-তে দুই কাপ ব্লিচ দেবেন। এর ফলে কোনোরকম কটু গন্ধ, জমে থাকা কাপড়ের রোয়া, দাগ ইত্যাদি দূর হয়ে যাবে।
৫. দুই নম্বর সাইকেল শেষ হলে মেশিন পানি বের করে দিলে আবার পানি ভরতে দিন। তিন নম্বর সাইকেল চালান শুধু পানি দিতে হবে।
৬. এবার একটি বালতিতে গরম পানি নিয়ে তাতে লিকুইড সোপ গুলে নিন। ডিটারজেন্টে ট্রে-টি বের করে, ওই সাবানের পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। এবার পানিতে স্পঞ্জ চুবিয়ে তা দিয়ে ট্রে-টি ভালো করে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিন।
৭. মেশিনের দরজার রবার সিলটি খুলে বের দেখে নিতে হবে এতে কোনও ময়লা লেগে আছে কিনা। থাকলে পরিষ্কার করে নিন।
৮. মেশিয়ের বাইরের অংশও সাবান পানি দিয়ে ভালো করে মুছে নিন।
৯. মেশিন যতক্ষণ না শুকিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ তার ততক্ষণ ঢাকনা বন্ধ করবেন না।
ওয়াশিং মেশিনের যত্ন
১. ওয়াশিং মেশিনে একসঙ্গে বেশি জামা-কাপড় দেওয়া উচিত নয়। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে এক বা দুই কেজি কম দিতে হবে। বেশি জামাকাপড় একসঙ্গে দিলে মেশিন দুর্বল বা খারাপ হয়ে যেতে পারে। জামাকাপড়ও ভালো পরিষ্কার হয় না।
২. মেশিনে দেবার আগে কাপড়ে সেফটিপিন বা আর্টিফিশিয়াল বোতাম থাকলে খুলে নিন। না হলে মেশিনে দাগ পড়ে যায়।
৩. মেশিনে ভিতর দুর্গন্ধ হলে পানিতে ২ থেকে ৩ কাপ লেবুর রস বা ভিনিগার মিশিয়ে মেশিনটিকে পরিষ্কার রাখুন।
৪. ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করার পর বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে দিন।
৫. ওয়াশিং মেশিনে ভোল্টেজ ওঠানামা করলে তাতে ক্ষতি হতে পারে। এজন্য ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করা ভালো।
৬. মেশিনের সঙ্গে পানির সংযোগ লাইনটি নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।
৭. কাপড় পরিষ্কারের জন্য মেশিনে অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না।
৮. পাউডার ডিটারজেন্টের পরিবর্তে লিকুইড ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলে মেশিন ভালো থাকে।
সূত্র : এই সময়।