টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা কয়েকদিন ধরে দিনের তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। তীব্র গরমে খেটে খাওয়া মানুষ ও শিশু-বৃদ্ধরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের গত তিনদিনে টাঙ্গাইলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় না থাকায় এবং বৃষ্টিপাত না হওয়ায় তাপদাহ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। আগামী ১৩ মে পর্যন্ত বৃষ্টির আভাস না থাকায় তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ফলে চলমান গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। হাসপাতালগুলোতে হিটস্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

টাঙ্গাইল আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ কার্যালয়ে দিনে দুইবার অর্থাৎ সকাল ৬টা ও বিকাল ৩টায় আবহাওয়ার পরিমাপ নির্ধারণ করা হয়। রকিবার বিকাল ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শনিবার তাপমাত্রা ছিল ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শুক্রবার টাঙ্গাইলে তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদদের মতে, এটা দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহেরই প্রভাব। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে এখন একটি গ্রীষ্মকালীন উচ্চচাপ বলয় কাজ করছে। ফলে দিনের বেলায় সূর্যের তীব্রতা বাড়ছে এবং তাপমাত্রাও ওঠানামা করছে।

সরেজমিন টাঙ্গাইল শহর এবং আশপাশের উপজেলাগুলোতে রবিবার গরমে জনজীবনে স্থবিরতা লক্ষ করা গেছে। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল অনেকটাই কম ছিল। যারা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই মাথায় কাপড় বা ছাতা ব্যবহার করছেন। প্রচণ্ড গরমে রিকশাচালক, দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষজন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. খায়রুল হাসান জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে হাসপাতালগুলোতে তাপজনিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এর মধ্যে হিটস্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগী রয়েছে। এসব সমস্যা নিয়ে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।

তিনি জানান, গরম থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। এই সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান করা, সরাসরি রোদে না যাওয়া, হালকা ও সুতির কাপড় পরিধান করা এবং শিশু ও বয়ষ্কদের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি।

টাঙ্গাইল আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. জামাল উদ্দিন জানান, বর্তমানে দেশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামী ১৩ মে’র আগে টাঙ্গাইলের তাপমাত্রা ওঠানামার মধ্যে অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews