রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন কয়েক হাজার রোগী। এদের মধ্যে কেউ কেউ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) গুরুতর অবস্থায় স্থান পান। রোগীর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়লে স্বজনরা শেষ মুহূর্তে আশ্রয় নেন সৃষ্টিকর্তার প্রার্থনায়। প্রচেষ্টা থাকে প্রিয়জন যেন ঈমান ও শান্তি নিয়ে দুনিয়া ছাড়েন।
তবে আইসিইউ এমন একটি ইউনিট, যেখানে নির্ধারিত সময় ছাড়া স্বজনদের প্রবেশের অনুমতি নেই। ফলে মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে স্বজনরা ধর্মীয় বাণী শোনাতে চাইলেও তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়ে উঠত না। এবার এ চিত্রে পরিবর্তন এনেছে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত ২৭ মে থেকে রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুপথযাত্রী রোগীদের হেডফোনের মাধ্যমে ধর্মগ্রন্থের বাণী শোনানোর ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। মুসলিম রোগীদের জন্য রয়েছে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত। হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্যও নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থ থেকে বাণী শোনানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে রামেকের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু মোস্তফা হেনা লেখেন, ‘২০১১ সালে রামেক হাসপাতালে আইসিইউ চালু হওয়ার পর থেকেই স্বজনরা অনুরোধ করে আসছিলেন, মৃত্যুপথযাত্রী রোগীদের শেষ সময়ে ধর্মীয় বাণী শোনানোর ব্যবস্থা রাখতে। তবে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এতদিন তা সম্ভব হয়নি। আল্লাহর অশেষ কৃপায় এবং একজন ব্যক্তির বিশেষ অনুদানে এবার সেই ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হলো।’
তিনি আরও লেখেন, ‘সোমবার দুজন মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে হেডফোনে রেকর্ড করা কুরআনের তিলাওয়াত শোনানো হয়েছে। এতে রোগীর স্বজনরা মানসিক শান্তি পেয়েছেন।’
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আইসিইউ একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল স্থান। রোগী যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকেন, তখন ধর্মীয় বাণী মানসিক প্রশান্তি এনে দিতে পারে। ডা. আবু মোস্তফার এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’