মানচিত্রে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর

  • Author,

    ভিজ্যুয়াল জার্নালিজম টিম

  • Role,

    বিবিসি নিউজ

  • ২৯ মিনিট আগে

নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য ইউক্রেনের শহরগুলোকে টার্গেট করেছে রাশিয়া।

সর্বশেষ আপডেট

  • কিয়েভ, খারকিভ, লাভিভ এবং ওডেসহঅন্যান্য শহরগুলোতে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে
  • জাপোরিশা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল
  • দেশটির পূর্বে বাখমুতের চারিদিকে প্রচণ্ড লড়াই চলছে
  • দক্ষিণে যুদ্ধের সম্মুখভাবে খেরসনের দিকটি মূলত স্থিতিশীল

ইউক্রেনজুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের শহরগুলোর নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। এতে অন্তত নয়জন নিহত হয়েছে।

কিয়েভ, ওডেসা এবং খারকিভের ভবন ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া ৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা কয়েক সপ্তাহ ধরে একসঙ্গে হামলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ

লাভিভে পাঁচজন নিহত হয়েছে, অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে রয়েছে দনিপ্রো, খেরসন এবং ঝিটুমির।

রাশিয়া বলেছে, হামলায় কিনঝাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।

পারমাণবিক এনার্জি অপারেটর ইউরেটমের মতে, জাপোরিশিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে একটি হামলায় ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থেকে কয়েক ঘন্টার জন্য প্ল্যান্টটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

এক বছর আগে এটি রাশিয়ার দখলে যাওয়ার পর থেকে ষষ্ঠবারের মতো ডিজেল জেনারেটরে পরিচালিত প্ল্যান্টটি কমপক্ষে ১০ দিন চলার মতো যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে।

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান আইএইএ প্ল্যান্টের নিরাপত্তা সম্পর্কিত জরুরি সতর্কতা জারি করেছে। রাফায়েল গ্রসি বলেন, "এটা কিভাবে হতে দেওয়া যায়... একদিন এগুলো ফুরিয়ে যাবে"

বাখমুতের চারিদিকে লড়াই

রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করা দেশটির নিয়মিত সেনা ও ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটেদের তীব্র চাপের মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুত ধরে রেখেছে।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ

বুধবার, ওয়াগনার গ্রুপের নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন জানান, তার বাহিনী পূর্ব বাখমুতের পুরোটাই দখল করেছে।

“হাতে পাওয়া দৃশ্যমান অনেক প্রমাণের সঙ্গে দাবিটি সামঞ্জস্যপূর্ণ” বলে জানিয়েছে দ্য ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার (আইএসডব্লিউ)

অনেক সামরিক বিশ্লেষক বলছেন, শহরটির কৌশলগত গুরুত্ব সীমিত।

তবে আইএসডব্লিউ বলছে, "রাশিয়ান বাহিনী শহরটি দখল করে নিলেও বাখমুতের বাইরে দ্রুতই কোনো অগ্রগতির সম্ভাবনা নেই।"

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গত ডিসেম্বরে উল্লেখ করেশহরটি দখল হলে "ক্রামাতোরস্ক এবং স্লোভিয়ানস্কের শহুরে এলাকাগুলো রাশিয়ার হুমকির মুখে পড়বে"।

পশ্চিমা কর্মকর্তারা ধারণা করছে, বাখমুত এবং এর আশেপাশে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছে।

বসন্তকালে রাশিয়া যে জোরদার হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, বর্তমান আক্রমণকে তারই একটি অংশ বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর নেভাল অ্যানালাইসিস মাইকেল কফম্যান বলেছেন, এখন পর্যন্ত রাশিয়ার অর্জন ‘হতাশাজনক’৷

তবে রাশিয়ান সেনাদের অবস্থান ব্যাপক শক্তিশালী করায় পাল্টা আক্রমণ চালানোর জন্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় দুর্বলতা খুঁজে পেতে ইউক্রেনকে বেশ বেগ পেতে হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

দক্ষিণে স্থিতিশীল সম্মুখভাগ

দেশটির দক্ষিণে খেরসনকে ঘিরে কামান হামলা অব্যাহত রয়েছে। দনিপ্রো নদীর বাম তীর বা পূর্ব দিক থেকে নভেম্বরে রাশিয়ান সেনাদের প্রত্যাহার করা হয়।

মার্কিন সরবরাহকৃত হিমার্স মাল্টিপল রকেট লঞ্চার দিয়ে সজ্জিত ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলা রাশিয়ার অবস্থানকে অস্থিতিশীল করে তোলে।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ

ইউক্রেন বলেছে, বুধবার তাদের বাহিনী খেরসনের পশ্চিমে রাশিয়ান গোলাবারুদের একটি ডিপো ধ্বংস করেছে।

তবে শহরের চারিদিকে কম সময়ে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেইকারণ রাশিয়া এই অঞ্চলে তার সৈন্য এবং সরঞ্জামগুলোর জন্য শক্তিশালী প্রতিরক্ষা তৈরি করেছে।

তবে শহরটিকে ঘিরে রাশিয়ার বাহিনী নিজেদের সৈন্য ও সরঞ্জামের জন্য যে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বলয় তৈরি করেছে তা খুব কম সময়ের মধ্যে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলেই ভাবছেন অনেক বিশ্লেষক।

এক বছরেরও বেশি লড়াই

২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ভোর হবার আগে ইউক্রেনের শহরগুলোতে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হয়েছিল।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ

রাশিয়ার স্থল সেনারা দ্রুত এগোতে থাকে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইউক্রেনের বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়।

তারা কিয়েভের শহরতলির দিকে অগ্রসর হয় এবং সোমের আশেপাশে দেশের উত্তর-পূর্বের বেশিরভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

রাশিয়ান বাহিনী খারকিভে বোমা বর্ষণ করে এবং পূর্ব ও দক্ষিণে খেরসন পর্যন্ত অঞ্চল দখলের পর বন্দর শহর মারিউপোলকে ঘিরে ফেলে।

কিন্তু প্রায় সবখানেই তারা ইউক্রেনীয়দের শক্তিশালী প্রতিরোধের মুখে পড়ে এবং খাবার, পানি এবং গোলাবারুদের ঘাটতিসহ মনোবল ভেঙে পড়া রাশিয়ান সৈন্যদের নিয়ে গুরুতর লজিস্টিক সমস্যার সম্মুখীন হয়।

পশ্চিমাদের সরবরাহ করা অস্ত্র যেমন এনলো অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক সিস্টেম দ্রুত মোতায়েন করে ইউক্রেনীয় বাহিনী, যা রাশিয়ার এগোনো রুখে দিতে অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়।

ইউক্রেন আরও পশ্চিমা অস্ত্র পাওয়ার পর অক্টোবরের দিকে যুদ্ধের নাটকীয় পরিবর্তন হয়। কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হওয়ায় রাশিয়া উত্তর দিক থেকে সৈন্য পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়।

খারকিভ থেকে রাশিয়াকে পিছিয়ে দেয়া এবং খেরসনে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে ইউক্রেন প্রথম বড় কোন সাফল্য পায়।

আক্রমণের এক বছর পর খেরসন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আপাতত পূর্বদিকে রাশিয়ার অগ্রগতি অনেকাংশে রুখে দিয়েছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews