কুমিল্লায় এবারো মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষীরাও। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি এ আলু যাচ্ছে ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। জেলার সাতটি উপজেলায় এবার মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ৫৬০ হেক্টর। স্থানীয় জাতের পাশাপাশি হাইব্রিড জাতের মিষ্টি আলুর চাষ করেছেন চাষীরা। তবে স্থানীয় জাতের আলুর ফলনই বেশি হয়েছে বলে জানান তারা।

চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন এলাকায় অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে থেকে শুরু হয় মিষ্টি আলুর চারা বপন। ফাল্গুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে থেকে মিষ্টি আলু মাটির নিচে পরিপক্ক হয়। আর চৈত্র ও বৈশাখ মাস আলু তোলায় ব্যস্ততা থাকবেন চাষী ও পরিবারের লোকজন।

মিষ্টি আলুর রাজ্য হিসেবে পরিচিত কুমিল্লার বুড়িচংয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষেত জুড়ে চলছে মিষ্টি আলু তোলার উৎসব। রোদের তেজ উপেক্ষা করে পুরুষেরা কোদাল দিয়ে মাটি কুপিয়ে আলগা করছেন। আর নারী ও শিশুরা আলু কুড়িয়ে এক জায়গায় স্তুপ করে রাখছেন। মিষ্টি আলু নিতে আসা ব্যাপারীরা ক্ষেতে বসেই আলু মেপে বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে নিয়ে রাখছেন। সন্ধ্যার সময় ট্রাকে করে এসব আলু দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাবে।

কৃষক রমিজ মিয়া বলেন, এ মৌাসুমে দেড় একর (১৪০শতাংশে) জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করেছি। প্রতি একরে ২৫০ মণ করে দেড় একর জমিতে ৩৭৫ মণ মিষ্টি আলুর ফলন হয়েছে। বাজারে দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। প্রতি মণ মিষ্টি আলু পাইকারি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। দেড় একর জমিতে চারা বপন ও আলু তোলা পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। বিক্রি হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। লাভ হয়েছে ৯০ হাজার টাকা।

একই গ্রামের কৃষক রকিব উদ্দিন, আলী মিয়া, মনির মিয়া বলেন, আগে এসব জমিতে বাদাম ও মিষ্টি লাউ করতাম। এতে লাভ হাতো না। পরে এ বছর আমারা মিষ্টি আলু চাষ করে লাভবান হয়েছি। আগে যেখানে বাদাম ও মিষ্টি লাউ করে লোকসান হতো। এখন লাভের মুখ দেখে আমারা খুশি। আলু বিক্রি করতে আমাদের কোনো কষ্ট করতে হয় না। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে জমি থেকে আলু তোলার পর জমিতেই বিক্রি করে দেয়। পরে পাইকাররা এ আলু বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে জমা করে। সন্ধ্যার সময় ট্রাক ভরে আলু দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকার জুরাইন থেকে আসা এক মিষ্টি আলুর পাইকার কামাল মিয়া বলেন, কুমিল্লার মিষ্টি আলুর চাহিদা বেশি। কারণ ওই আলু বালু মাটিতে হওয়ায় মিষ্টি হয় খুব বেশি। ওই মিষ্টি আলু ঢাকায় ৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়। বৈশাখ মাস পর্যন্ত এ জেলা থেকে আলু নেয়া যায়। এরপর এলাকায় আর আলু থাকে না।

বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ রশীদ বাসসকে বলেন, এ বছর মিষ্টি আলু উৎপাদন ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জমির অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এবং বর্তমান বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষকরা খুশি।

সূত্র : বাসস



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews