লিওনেল মেসির বহুল প্রতীক্ষিত গোট ইন্ডিয়া ট্যুর ২০২৫-এর তৃতীয় পর্বে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে উপচে পড়ে ভিড়। কলকাতা ও হায়দ্রাবাদ পর্বের পর মুম্বাই সফরটি ছিল ক্রীড়া, উত্তরাধিকার ও সংস্কৃতির মিলনমেলার উদ্যাপন। তবে সন্ধ্যার এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানের মেজাজে আসে অপ্রত্যাশিত মোড়—মঞ্চে সম্মাননা পর্ব চলাকালে বলিউড অভিনেতা টাইগার শ্রফ ও অজয় দেবগন দর্শকদের একাংশের কাছ থেকে দুয়োধ্বনির মুখে পড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এক পর্যায়ে তাদেরকে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
সম্মাননা পর্বে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া:
অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক পর্বে টাইগার শ্রফকে মঞ্চে ডাকা হয় প্রজেক্ট মহাদেবা-র সঙ্গে যুক্ত যুব আইকন হিসেবে—যা মহারাষ্ট্রজুড়ে তরুণ ফুটবল প্রতিভা খোঁজা ও প্রশিক্ষণের উদ্যোগ। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ যখন তাঁকে সম্মাননা প্রদান করছিলেন, তখন স্টেডিয়ামের একাংশ থেকে শোনা যায় দুয়োধ্বনি, যা সাময়িকভাবে কর্মসূচিতে বিঘ্ন ঘটায়।
পরবর্তীতে জ্যেষ্ঠ অভিনেতা এবং বিজেপি সমর্থক অজয় দেবগন মঞ্চে এলেও একই রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় তাকে। ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাস তুলে ধরা তাঁর চলচ্চিত্র ‘মাইদান’—যেখানে কিংবদন্তি কোচ সৈয়দ আবদুল রহিমের অবদান ফুটে ওঠে—এই প্রেক্ষিতেও দর্শকদের একাংশের প্রতিক্রিয়া ছিল নেতিবাচক।
অপমানজনক এই ভিডিওটি দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিপে দেখা যায়, দু’জন অভিনেতাই সংযত ভঙ্গিতে পরিস্থিতি সামলান। মেসি সংক্ষিপ্তভাবে তাঁদের অভিবাদন জানিয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে থাকেন, আর আয়োজকেরা অনুষ্ঠান এগিয়ে নিয়ে যান।
উচ্ছ্বাসের মুহূর্তও কম ছিল না:
বিতর্কিত মুহূর্ত সত্ত্বেও গোটা সন্ধ্যাজুড়ে উচ্ছ্বাসের অভাব ছিল না। বলিউড অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান তাঁর দুই ছেলে তৈমুর ও জাহাঙ্গীরকে নিয়ে মেসির সঙ্গে একটি মিট-অ্যান্ড-গ্রিট সেশনে অংশ নেন। পরিবারসহ মেসির সঙ্গে ছবি তোলার সময় স্টেডিয়ামে করতালি ও ক্যামেরার ফ্ল্যাশে ভরে ওঠে পরিবেশ।
রাতের সবচেয়ে বড় উল্লাস আসে মেসির সঙ্গে শচীন টেন্ডুলকার-এর সাক্ষাতে। ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি মেসিকে টিম ইন্ডিয়ার জার্সি উপহার দেন—যা দর্শকদের আবেগ ছুঁয়ে যায়। পাল্টা সম্মান হিসেবে মেসি শচীনকে একটি ফুটবল উপহার দেন, দুই কিংবদন্তির পারস্পরিক শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে।
উল্লেখ্য, মুম্বাই পর্ব শেষে মেসি এবার যাচ্ছেন নয়াদিল্লি। তাঁর সঙ্গে থাকবেন লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পল। সফরের শেষ ধাপে জাতীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং আরও কিছু জনসমাগমমূলক কর্মসূচি থাকার কথা।