গত বুধবার নায়ক শাকিব খান একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বুবলীর সঙ্গে তাঁর অধ্যায় পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। শাকিব খানের এ বক্তব্য প্রসঙ্গে পরদিন বৃহস্পতিবার বুবলী ফেসবুক পোস্টে জানালেন ভিন্ন কথা, তাঁদের এখনো সম্পর্ক রয়েছে। একই সঙ্গে শাকিবের দিকে বেশ কিছু অভিযোগের তীর ছুড়ে দেন বুবলী। এবার সেসব অভিযোগের জবাব দিলেন শাকিব খান। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি জানান, বুবলী মিথ্যাচার করছে। শাকিব খানের বলা কথা এখানে তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

আপনি বলছেন বুবলী অধ্যায় শেষ, কিন্তু বুবলী বলছেন আপনাদের এখনো সম্পর্ক রয়েছে। এবার আপনিই বলুন সত্যটা কী?

আমি কিছু বলতে চাই না। সে যখন বলছে আমাদের মধ্যে এখনো সম্পর্ক রয়েছে তাহলে সে-ই প্রমাণ দিক। কারণ সে তো একজন শিক্ষিত মেয়ে। সে এয়ারহোস্টেজ, টিভিতে নিউজ প্রেজেন্টার ছিল, তাই তার মতো একজন শিক্ষিত মেয়ের কাছে তো কোনো মিথ্যা বলার মতো বোকামি কেউ আশা করবে না।

কিন্তু একসময় তো আপনাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল, যার ফলশ্রুতি আপনাদের সন্তান শেহজাদ, কিন্তু এই সম্পর্কের অবনতি হলো কীভাবে?

দেখুন, সে আমাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করে সম্পর্ক, সন্তান, অর্থবিত্ত, নাম সবই করেছে। আমিও তাকে অন্ধ বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু শেহজাদকে জন্ম দেওয়ার পর আমেরিকা থেকে দেশে এসে সে নানা স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে পড়ল। নানা জনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলল। যা মিডিয়াসহ সবাই জানে। একই সঙ্গে সাড়ে ৩ কোটি টাকার ফ্ল্যাট এবং ৫৬ লাখ টাকার গাড়ির মালিক হলো, হঠাৎ করে এমন বিত্ত-বৈভবের মালিক হওয়া কীভাবে সম্ভব। কেউ যদি বিনা কারণে বিশ্বাসভঙ্গ করে বা বিশ্বাসঘাতকতা করে তাহলে তার সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে কনটিনিউ করা যায় আপনারাই বলুন। আমি আসলে সরল মনে অনেককেই বিশ্বাস করেছি। কিন্তু সবাই আমার সরলতাকে দুর্বলতা ভেবে ধোঁকা দিয়েছে। অকৃজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে। আমি এখন আর কারও সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতে চাই না। আর কোনো মানসিক চাপ সহ্য করতে চাই না। শুধু দুই সন্তান জয় ও বীরকে নিয়ে বাকি জীবনটা সাধারণ মানুষের মতো পরম শান্তিতে কাটাতে চাই।

শেহজাদের জন্মের কথা বুবলীই প্রথম প্রকাশ করেছেন, এর আগে আপনারা বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন কেন?

দেখুন, পার্সোনাল বিষয়কে আমি কখনো ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করতে চাই না। তাই কাউকে কিছু বলিনি। কিন্তু বুবলীকে তো কাউকে বলতে বারণ করিনি। সে কেন তখন এ নিয়ে কিছু বলল না। সে এতটাই ক্রিটিক্যাল মাইন্ডের যে, গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর আমার ছেলে জয়ের জন্মদিনে তার বেবি বাম্পের ছবি প্রকাশ করে আমাকে বিব্রত ও ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করল। একই সঙ্গে নানাজনের সঙ্গে তার  অবৈধ সম্পর্কের স্ক্যান্ডাল চাপা দিতেই সে তখন হুট করে তার বেবি বাম্পের ছবি প্রকাশ করে বসল। তার মনে যদি কোনো দুষ্ট বুদ্ধি না থাকত তাহলে সে তো আগেই এই ছবি প্রকাশ্যে আনতে পারত। এখন আবার কোন স্বার্থ হাসিল করতে আমার সঙ্গে সম্পর্কের কথা তুলে সে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছে।

একসময় বুবলী বলেছিলেন অপুর সঙ্গে আপনার বিয়ের কথা গোপন করে আপনি তার সঙ্গে সম্পর্ক করেছেন, এই অভিযোগ কী সত্য?

তার এই অভিযোগ একদম মিথ্যা। সবাই জানে আমার ও অপুর বিয়ের কথা, অথচ সে জানে না, এটি চরম মিথ্যা ছাড়া আর কি হতে পারে। এ নিয়ে তখন তো অপু তাকে গালাগালও করেছে। একজন লোকের বিয়ে করা বউ থাকার পর কী সে আরেকটি বিয়ে করতে পারে। বুবলী তো নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য আমাকে শুধু সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করছে। এখনো সে নিজেকে আমার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধারের অপচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। আবারও বলছি সে প্রমাণ করে দিক সে আমার স্ত্রী। বুবলী এখন আমার স্ত্রী নয়, এ কথা আমি আর কতবার বলব।

তাহলে আপনাদের ডিভোর্স হয়েছে?

সেটা সে-ই বলুক। সে যখন এখনো নিজেকে আমার স্ত্রী দাবি করছে, তাহলে সে-ই প্রমাণ করে দিক বিষয়টি।

বুবলী তার সাম্প্রতিক স্ট্যাটাসে দাবি করেছেন গত ঈদে তিনি আপনার বাসায় গেছেন, আপনাকে নিজের হাতে খাইয়েছেন, একসঙ্গে আপনারা ঘুরে বেড়িয়েছেন, কথাটি কী সত্য?

দেখুন, আমাকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করার জন্য এটিও তার একটি পাতা ফাঁদ ছিল। তার সঙ্গে সম্পর্কের পর এক দিনের জন্যও সে আমাদের বাসায় থাকেনি। আমার বাসার কারও সঙ্গে তার কথাও হয়নি। আগে পরিচয়ও ছিল না। সে জোর করে আমার বাসায় এসে

সিন ক্রিয়েট করার চেষ্টা করে। শেহজাদের জন্মদিনেও সে জোর করে আমার বাসায় এসেছে। শেহজাদকে তার ন্যানিই আমার বাসায় নিয়ে আসে। অথচ ঈদের দিনও পরিকল্পিতভাবে বুবলী আমার বাসায় এসেছে। যেখানে আমার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্কই নেই, সেখানে আমার বাসায় সে আসবে কেন? ঈদের দিন বাসায় কেউ এলে তাকে তো আর বের করে দেওয়া যায় না। অথচ এর আগে একবার তাকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া হয়েছিল। যাক, ঈদের দিন সে এসেছে। স্বাভাবিকভাবেই একসঙ্গে বাসার সবাই বসে খেয়েছি। তারপর শেহজাদকে নিয়ে গাড়িতে করে যখন বেড়াতে বের হচ্ছিলাম তখন বুবলীও গাড়িতে উঠে পড়ে এবং পেছনের সিটে বসে থাকে। তার রান্না করা বা তার হাতে কোনো খাবারই আমি খাইনি। আসলে সেদিন ঈদের সুযোগ নিয়ে সে আমার বাসায় এসেছিল। মিথ্যা বলে আবার আমাকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করার জন্য এবং পরে সে ফেসবুকে মিথ্যা স্ট্যাটাস দিয়ে তাই করার চেষ্টা করেছে।

তার এই স্ট্যাটাস দেওয়ার পেছনে আর কোনো কারণ আছে বলে আপনি মনে করেন?

হ্যাঁ, আরও কারণ আছে, বর্তমানে আমি ‘প্রিয়তমা’ নামের যে ছবিতে অভিনয় করছি, সেই ছবিটির ঘোষণা কিন্তু অনেক আগেই দেওয়া হয়েছিল এবং এতে তার নায়িকা থাকার কথা ছিল। এই ছবিতে এখন তার পরিবর্তে অন্য নায়িকা কাজ করাতে সে এটি সহ্য করতে পারছে না। তাকে তো এই ছবিতে নেওয়াই হতো। কিন্তু তার নানা অপকর্মই তো তাকে এসব সুযোগ হাতছাড়া করিয়ে দিয়েছে। এ কারণে আমার ওপর প্রতিশোধ নিতে সে এখন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, মিথ্যা রটনাসহ সবই করছে। সে চায় আমি যেন তার দেওয়া মানসিক চাপে পাগল হয়ে যাই। আর সুস্থভাবে বাঁচতে না পারি এবং আমার সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

বুবলীর দাবি আপনিই তাকে চলচ্চিত্রে নিয়ে এসেছিলেন, সত্যি কী তাই?

এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা। আমি তাকে চিনতামও না, সে তার মেকাপ আর্টিস্টকে দিয়ে আমার মেকাপ আর্টিস্টকে বলাত সে আমার সঙ্গে নায়িকা হিসেবে ছবিতে কাজ করতে চায়। আমার মেকাপ আর্টিস্ট আমাকে এসে বলত টিভিতে খবর পরে একটি মেয়ে আপনার সঙ্গে দেখা করতে ও আপনার সঙ্গে অভিনয় করতে চায়। আমি এসব কথাকে কখনো পাত্তা দিইনি। এভাবে অনুরোধ করাতে করাতে প্রায় ৫-৬ মাস কেটে গেল। এক দিন এফডিসিতে ‘রাজনীতি’ ছবির শেষ দিনের শুটিং করছিলাম। হঠাৎ বিকালের দিকে আমার মেকাপ আর্টিস্ট এসে বলল ওই মেয়েটা আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য সকাল থেকে এসে বসে আছে। তখন মেকাপ রুমে অভিনেতা আহমেদ শরীফ, প্রয়াত সাদেক বাচ্চু ও এ ছবির পরিচালক বুলবুল বিশ্বাসসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। আমি মেকাপ আর্টিস্টকে বললাম আচ্ছা তাকে নিয়ে এসো। মেয়েটি এসে আমাকে তার ইচ্ছার কথা জানাল। শুনে বললাম ভবিষ্যতে সুযোগ হলে দেখব। পরে যখন ‘বসগিরি’ ছবিটি নির্মাণ হতে যাচ্ছিল সেই ছবিতে নির্মাতা একজন নতুন নায়িকা খুঁজছিলেন তখন আমি তাকে বললাম বুবলীর কথা। নির্মাতাই তখন তাকে এনে কাজ করালেন।

এখন বুবলীকে নিয়ে আপনার বলার কী আছে?

আমি তাকে বলব সে যেন এই নতুন স্ট্যাটাসের নাটক বন্ধ করে। সে বলেছে আমার বিরুদ্ধে সে নাকি মুখ খুলবে, আমি তাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, সে যেন মুখ খুলে। আমি তো সন্তানের স্বার্থে মুখ বন্ধ করে তার দেওয়া সব মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করে আসছি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে আর মুখ বুঝে থাকব না। সে ও তার পরিবার আমার ওপর যা ঘটিয়েছে সব খুলে বলতে সে যেন আমাকে বাধ্য না করে। আমি আবারও তাকে বলছি সন্তানের ভালোর দিকে তাকিয়ে সে যেন এসব নোংরামি বন্ধ করে। আমার জীবদ্দশায় আমি তার ছায়াও আর দেখতে চাই না।  আমার ধারেকাছে আসা এবং আমার বাসায় প্রবেশের কোনো অধিকার তার নেই। তার আর কোনো নাটক আমি দেখতে চাই না।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews