“আপনারা নাকি সাপ-ব্যাঙ খান?”

মতিঝিলের শিক্ষা অফিসে আমার এক চাকমা সহকর্মী দিদিকে প্রশ্নটি করেছিলেন শিক্ষা ক্যাডারের এক কর্মকর্তা। যে ঘটনাটি বলছি, সেটি বেশ কয়েক বছর আগের। তখনও আমার শিক্ষাজীবন শেষ হয়নি। পড়াশোনার পাশাপাশি একটা প্রকল্পে কয়েক মাস খণ্ডকালীন কাজ করেছিলাম। ওই প্রকল্পেই দিদিকে পাই সহকর্মী হিসেবে। প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য দিদির সঙ্গে আমাকেও যেতে হয়েছিল শিক্ষা অফিসে।

শিক্ষা ক্যাডারের ওই কর্মকর্তার সঙ্গে যতই কাজের আলাপ করতে চাইছিলাম, তিনি ততই ঘুরেফিরে আদিবাসীদের খাদ্যাভ্যাসকে আলোচনার মূল বিষয় করে তুলছিলেন। তার ভাষায় অবশ্য ‘উপজাতি’ এবং একপর্যায়ে ‘উপজাতিদের সাপ-ব্যাঙ খাওয়া’ নিয়ে প্রশ্নটি করেই ফেললেন, যা এই ঢাকা শহরে আমার আরও অনেক আদিবাসী বন্ধুকে নিত্যদিনই শুনতে হয়।

আজও ভুলতে পারি না বয়োজ্যেষ্ঠ ওই সহকর্মী দিদির বিব্রতকর মুখটা। প্রশ্নটা করেই থেমে যাননি লোকটা। বরং নাকমুখ কুঁচকে কটাক্ষ করে বলতে থাকলেন, “এইসব খান কেমনে? আর কী কী খান আপনেরা?”

চাকমা দিদিটির চেহারায় তখন কেবল অস্বস্তি নয়, রীতমতন আতঙ্ক। শেষমেশ অসহায় গলায় বললেন, “আমরা সাপ খাই না। তবে অনেকেই খায়।”

‘আমরা’ আর ‘অনেকেই’—এই পার্থক্য কেন টানলেন, জিজ্ঞেস করা হয়নি দিদিকে। কেন তিনি নিজেকে অথবা নিজের পরিবার-পরিজনকে পৃথক করে রাখলেন পাহাড়ের অন্য জাতিগোষ্ঠীগুলো থেকে, জানা হয়নি।

আজও আমি জানি না দিদি কখনও সাপ খেয়েছেন কিনা? জিজ্ঞেস করার মতো অন্তরঙ্গতা হয়নি তার সঙ্গে। কিন্তু আমি জানি, সেদিন তার সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছিল—সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি জাতির একজন মানুষের আধিপত্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। সেদিন আমি যতটুকু সাহস করে বলেছিলাম, তা ছিল খুবই সামান্য— “আমরা খাবার-দাবার নিয়ে আলাপ করতে আসিনি। আপনি কি মনে করেন, অন্য জাতি-ধর্মের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে এভাবে প্রশ্ন করা শোভন?”

এক পর্যায়ে কথাবার্তা থেমে গেল। কাজের কাজ খুব একটা হলো না আমাদের। তবু কোনোরকমে কাজের নামে দায় শেষ করে বের হয়ে আসতেই দিদি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন। যেন অনেকটা ভার বুক থেকে নামিয়ে রাখলেন। ধরা গলায় বললেন, “মানুষ আমাকে দেখলেই খাবার নিয়ে এমন কথা তোলে। আমার নার্ভাস লাগে বহ্নি।”

খাবার নিয়ে আবারও আলাপের কারণ ঘটেছে সম্প্রতি এই ঢাকা শহরেই। বহু জনতার কোলাহলপূর্ণ এই শহরে ‘হেবাং’ নামে একটি রেস্তোরাঁ আছে। এটিকে শুধু একটি খাবারের রেস্তোরাঁ ভাববার কারণ নেই। বরং এটি এমন একটি জানালা, যার ভেতর দিয়ে আমরা দেখতে পাই পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের রন্ধনশৈলী এবং আত্মপরিচয়ের সংগ্রামও। ওই জানালাটার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে কিছু বিদ্বেষপ্রবণ মানুষ। অহেতুক বিদ্বেষ। বলছেন, রেস্তোরাঁর রান্নার গন্ধ সহ্য করতে পারছেন না তারা। গন্ধের অভিযোগ তুলে শুরু হয়েছে অপমান, হেনস্তা, এমনকি উচ্ছেদের তোড়জোড়ও।

বলা বাহুল্য, খাবারের গন্ধ তো সব রেস্টুরেন্ট থেকেই আসে। কোটিরও বেশি মানুষের শহর ঢাকায় প্রতিবেলা বহু মানুষ রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছেন। কেউ হয়তো পাঁচতারা হোটেলে খাচ্ছেন, কেউ আবার ফুটপাতের খাবারের দোকানে। ছোট-বড় মিলিয়ে হোটেল-রেস্টুরেন্টের সংখ্যা অজস্র এই শহরে। একটি পরিসংখ্যানে দেখেছি, সংখ্যাটা ২৫ হাজারেরও বেশি। ফুটপাতের খাবার দোকান হিসেবে নিলে সংখ্যাটা অনেক বেশি হবে।

সকাল থেকে শুরু করে রাত অবধি অলিতে-গলিতে এই সব রেস্টুরেন্টের রান্নার ধোঁয়া, মসলার ঝাঁজ বাতাসে মিশতে থাকে—কিন্তু তা নিয়ে কখনো প্রশ্ন ওঠে না। তাহলে আদিবাসী একটি রেস্তোরাঁর রান্নার গন্ধে এত আপত্তি কেন? এর পেছনে কি লুকিয়ে আছে জাতিগত অহং, সাংস্কৃতিক শ্রেষ্ঠত্ববোধ এবং দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা তাচ্ছিল্য ও আধিপত্য বিস্তারের মনোভাব?

বাংলাদেশের সংবিধান বলছে, “প্রত্যেক নাগরিকের নিজস্ব জীবনাচার, খাদ্যাভ্যাস, সংস্কৃতি চর্চা এবং অভিব্যক্তির স্বাধীনতা থাকবে।” কিন্তু যখন পার্বত্য চট্টগ্রামের বা গারো পাহাড়ের কোনো তরুণ-তরুণী ঢাকায় এসে একটা খাবারের রেস্তোরাঁ চালাতে চায়, তখন কেন তাদের মুখোমুখি হতে হয় জাতিগত বিদ্বেষের? এটি নিছক একটি-দুটি রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ নয়, বরং বাঙালি ব্যতীত সব জনগোষ্ঠীকে ঢাকার নাগরিক কাঠামো থেকে বর্জনের প্রক্রিয়া।

খাবারের স্বাদ কোনো জাতির একচেটিয়া সম্পদ নয়। বরং প্রতিটি খাবারই বহন করে তার জাতিসত্তা, ইতিহাস এবং পরিবেশগত বাস্তবতা। পাহাড়িদের খাবারও তার ব্যতিক্রম নয়। বাঁশকোড়ল, নাপ্পি, ভাপা মাংস কিংবা সেদ্ধ সবজির তরকারি—এ সবই একটি দীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে গড়ে উঠেছে পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও চাষাবাদের প্রেক্ষাপটে। এই স্বাদ বাঙালি খাদ্যসংস্কৃতির চেয়ে আলাদা, কিন্তু তা অপমানের কোনো কারণ হতে পারে না।

এখানে একটি দুঃখজনক বাস্তবতা চোখে পড়ে—ঢাকা শহরে ভিন্ন স্বাদ মানে এখনো বিকৃত স্বাদ, গন্ধযুক্ত এমনকি উৎকট বলে গালি খায়। এই গালি দেনেওয়ালা বাঙালিরাই লন্ডনে গিয়ে কোরমা, তন্দুরি, মাসালা ফিশ তুলে ধরে ব্রিটিশ সমাজে, প্রশংসিতও হয়। অথচ তারাই ঢাকা শহরে হেবাংয়ের মতো আদিবাসীদের রেস্তোরাঁগুলোকে বন্ধ করে দিতে চায়।

আদিবাসী অনেক বন্ধু থাকায় তাদের রান্না এবং খাদ্য সংরক্ষণ পদ্ধতির সঙ্গে পরিচয় আছে আমার। শিখেছি অনেক কিছুই। যেমন তারা মুলা সবজিটি শুকিয়ে রাখে। এটি তাদের একটি ঐতিহ্যবাহী সংরক্ষণ পদ্ধতি, বিশেষ করে যখন বাজারে মুলা পাওয়া যায় না তখনও তারা মুলা খেতে পায়। শুকিয়ে রাখা এই মুলাকে তারা ‘শুটকি মুলা’ বলে। এই শুটকি মুলা বর্ষবিদায় ও বরণের উৎসবে সবজি জাতীয় খাবার ‘পাজন’ তৈরিতে ব্যবহার করে। পাজন অবশ্য শুধু মুলা নয়, অনেক সবজির সমাহার।

পাহাড়ে পর্যাপ্ত ফ্রিজিং ব্যবস্থা না থাকার কারণে একসময় মুলা, শিম, মিষ্টি কুমড়া এবং অন্যান্য সবজি শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হতো। যখন বর্ষাকালে বাজারে যাওয়া কঠিন হতো, জুমে ফসলহানি হতো, তখন এই শুকনো সবজিগুলো খাওয়া হতো। যদিও এখন পরিস্থিতি ভিন্ন, তবুও ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ হিসেবে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রোসহ পাগাড়ের আদিবাসীরা এখনও মুলা শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখে। মূলত আদিবাসীদের খাবার অনেকটাই তাদের প্রাকৃতিক ও আর্থিক অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। শুধু মুলাই না, শিমুল ফুলও শুকিয়ে শুটকি বানিয়ে রান্না করে তারা।

খাবার নিয়ে আমারও অনেক কৌতূহল আছে। কৌতূহল আর কৌতুক এক নয়। জাত্যাভিমানী বাঙালিরা আদিবাসীদের খাবার নিয়ে যা করে সেটাকে কৌতুক নয়, রীতিমতো নিষ্ঠুরতা, জাতিগত আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা বলা চলে। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের মতো বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের আদিবাসী সাঁওতাল, ওঁরাও, মুন্ডা, পাহান সবাইকে শুনতে হয়, “তোমরা নাকি ইঁদুর খাও?”

সত্যি ওদের অনেকেই ইঁদুর খায় এবং আমাদের যারা প্রশ্নটি করে তাদের এটা জানা আছে। তবু প্রশ্ন করেন বিব্রত করার জন্যই। দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় কড়াদের গ্রাম ঝিনাইকুড়িতে কয়েকদিন থাকার সুযোগ হয়েছিল আমার। বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়া যে অর্ধশতাধিক জাতিগোষ্ঠী রয়েছে, তাদের মধ্যেও সবচেয়ে সংখ্যালঘু এই কড়া জাতিটি। তাদের সংখ্যা নারী, পুরুষ ও শিশু সব মিলিয়ে শ’খানেকের একটু বেশি।

আমি তাদের অবর্ণনীয় দারিদ্র্য প্রত্যক্ষ করেছি। বাজার থেকে হাঁস-মুরগি কিনে খাওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই। তাই সুযোগ পেলে বাড়ির পাশের ফসলের মাঠ থেকে, অথবা বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের শালবন থেকে ইঁদুর ধরে আনে। ইঁদুর যেমন সহজে পাওয়া যায় তেমনি কার্যকরী পুষ্টিরও জাগান দেয়। মূলত খাদ্যের সীমাবদ্ধতা, সহজলভ্যতা আদিবাসীদের খাদ্যাভ্যাসে তৈরি করেছে। তেমনি তারা তাদের নানান আচার অনুষ্ঠানেও এ খাবার খায় কারণ এসমস্ত খাবার তাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।

খাবার নিয়ে কৌতূহলের কথা বলছিলাম। আমার ভাগ্নি খেয়া জন্ম থেকেই বেলজিয়ামে বড় হচ্ছে। কিছুদিন হলো বাংলাদেশে এসেছে বেড়াতে। তার সঙ্গে কয়েকদিন আগে, আমার মামার বাসায় দেখা হয়ে গেল, ঝিনাইকুড়ির মেয়ে পূজা কড়ার। খেয়া আর পূজা দুজনই বাংলা জানে। তবে বাংলা তাদের প্রধান ভাষা নয়, তবু ওরা বাংলাতেই গল্প করার চেষ্টা করছিল। খেয়ার বয়স ১৩ বছর, পূজা বড় জোর ১৮ বছরের। পূজার সঙ্গে দেখা হওয়ার মাত্র দুয়েকদিন আগে আমার চাকমা বন্ধু পদ্মিনীর বাসায় বাঁশকোড়ল খেয়ে এসেছে খেয়া এবং গল্প করে বেড়াচ্ছে খাবারটা ওর কত ভালো লেগেছে। পূজাও একজন আদিবাসী জেনেই ওর কৌতূহল হলো এবং জানতে চাইল, “তোমরা কি খাও, তোমাদের ফুড হ্যাভিট কী বল?”

পূজা কুঁকড়ে গেল ওই প্রশ্নে। চুপ করে থাকল বেশ কিছুক্ষণ। আমার মামা পূজাকে বলল, “তুমি বল তোমরা যা যা খাও, তার অতিরিক্ত দুটো জিনিস খাই আমরা, একটি শুকর, অন্যটি ইঁদুর। খাবার নিয়ে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই।” পরে খেয়াকে বলল, ‘কারও কাছে ফুড হ্যাভিট নিয়ে হুট করে জানতে চাইতে নেই। এতে তাচ্ছিল্য প্রকাশ পায়।”

আমার ধারণা খাদ্যাভ্যাসের জন্য যে কাউকে তাচ্ছিল্য করা যায়, এটা খেয়া বুঝতে পারেনি। পূজাও বুঝতে পারেনি, খাদ্যাভ্যাসের জন্য লজ্জা পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ওদের একজন জন্ম থেকেই বড় হচ্ছে ইউরোপের একটি দেশে। অন্যজন আজন্ম আছে বাংলাদেশে, যেখানে তাকে বারবার তুচ্ছ করা হয়েছে, ইঁদুর খাওয়ার ‘অপরাধে’।

মিরপুরের হেবাং রেস্তোরাঁটিও এই কারণে হয়তো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে। বন্ধও হয়ে যেতে পারে। অথচ ঢাকায় থাকা আদিবাসী রেস্তোরাঁগুলোর মধ্যে এটি অনেক বেশি পরিচিত। হেবাংয়ের ফেইসবুক পেইজ থেকে দেওয়া একটি পোস্ট চোখে পড়ল, যার সারসংক্ষেপ–রেস্টুরেন্টের ওপরতলায় ৫ মাস আগে নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে। রেস্টুরেন্টের রান্না করা শামুক আর কাঁকড়ার গন্ধে তাদের সমস্যা হয়, যার কারণে এই সব রান্না বন্ধ করতে বলেন তারা। নয়তো রেস্টুরেন্ট সরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেন। পোস্টে লেখা হয়েছে, “মূলত আমাদের হেবাংয়ের বিন্ডিংয়ে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা না থাকায় এমন সমস্যা হয়। তাই পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাড়ির মালিককেও অনুরোধ করা হয়েছে ব্যাপারটার সমধান করার জন্য। এজন্য কাজীপাড়া থেকে শেওড়াপাড়ায় রেস্টুরেন্টটি সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।”

হেবাংয়ের রেস্তোরাঁটি যে ভবনে সেটিতে ওঠা-নামার জন্য একটিই সরু সিঁড়ি রয়েছে। হেবাংয়ের রান্নাঘরটি সিঁড়ির পাশে এবং সেখানে কোনো ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা নেই। এর ফলে রান্নার গন্ধ ও তাপ সিঁড়িতে চলে যায়। নতুন ভাড়াটিয়ারা উত্তেজিত হয়ে রান্নাঘরে গিয়ে ভিডিও ধারণ করেন। কাঁকড়া ও শামুক রান্না নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন।

প্রশ্ন হলো, এই ‘গন্ধ’ নিয়ে কটূক্তি আসলে কার গায়ে লাগে? রন্ধন প্রক্রিয়ার নাকি সংখ্যালঘু সংস্কৃতির অস্তিত্বে?

বাংলাদেশের সংবিধান বলেছে, সব নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদা রয়েছে। সংবিধানের ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “আইনের দৃষ্টিতে সকল নাগরিক সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।” ২৮ অনুচ্ছেদ বলেছে, “কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, জন্মস্থান কিংবা নারীত্ব বা পুরুষত্বের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করতে পারবে না।” কিন্তু বাস্তবে এই প্রতিশ্রুতিগুলো কতটুকু প্রতিফলিত হয়?

রাষ্ট্র আমাদের সংবিধানে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সংবিধানের ২৩(ক) অনুচ্ছেদ বলছে, “রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।” ২০১০ সালের ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন’ ও আদিবাসী সংস্কৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রণীত।

কিন্তু সংরক্ষণের বদলে বাস্তবতা হচ্ছে—ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর খাবারকে ঘৃণার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করা। মূল সংকট হচ্ছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি সমাজের একটি অংশ নিজেদের স্বাভাবিকতাকে একমাত্র গ্রহণযোগ্যতা হিসেবে চাপিয়ে দেয়। এই আধিপত্য থেকেই আদিবাসীদের খাবার, ভাষা, উৎসব, এমনকি চেহারাকেও আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews