সারা বিশ্বে মানুষ যাতে নির্যাতনের শিকার না হয় তার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসে আলাপ আলোচনা হয় এ দিবসে। জাতিসংঘ ঘোষিত দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসটি উৎসর্গ করেছে বিশ্বব্যাপী যারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তাদের উদ্দেশে। নির্যাতিতদের পুনর্বাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক পরিষদের সদর দফতরটি ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহাগেন এ অবস্থিত৷ এখানে ২৭ জন এবং ব্রাসেলস শহরে দুইজন কর্মী কাজ করেন নির্যাতিতদের জন্য৷ এরা শলাপরামর্শ দিয়ে, দান এবং অর্থ সংগ্রহ করে গোটা বিশ্বে নির্যাতিতদের পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তুলতে সাহায্য করে থাকেন৷ 

নির্যাতিতদের জন্য গঠিত পুনর্বাসন কেন্দ্রে সরাসরি সাহায্য দিয়ে থাকে ৷ কিন্তু তবুও এটা যথেষ্ট নয়৷ বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও নির্যাতিতদের অনুকূল নয়৷ তাই হাসপাতালের ডাক্তাররা তাদের স্বাভাবিক কাজের বাইরে ঐচ্ছিকভাবে এবং কোন ফি না নিয়ে নির্যাতিতদের চিকিৎসা করে থাকেন৷ কিন্তু এ কাজে তাদের প্রয়োজন অর্থ আর এই অর্থের বিরাট যোগানদাতা হল ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং নির্যাতিতদের জন্য গঠিত জাতিসংঘের স্বেচ্ছা তহবিল৷ যেসব দেশে নির্যাতন চালানো হয় সেসব দেশে সাহায্য যোগাতে এই দুটি সংস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷

নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক পরিষদ বলছে, যারা নির্যাতনের শিকার তাদের সাহায্য করা গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে শুধু তারা নয় তাদের পরিবার এবং সমাজের অনেকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরে অধীন জাতিসমূহ ক্রমান্বয়ে স্বাধীনতা অর্জন করলেও সারাবিশ্বে সহিংসতা ও সংঘাত বন্ধ হয়নি। রক্ত উন্মাদনা যেন দেশে দেশে এক ভয়ংকর হানাহানি ও রক্তারক্তিকে অব্যাহত রেখেছে। এই কারণে বিশ্বের অসংখ্য মানুষ নিহত ও আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী তাদের বিরোধীদের ওপর সীমাহীন ক্রোধে ভয়ানক দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। সেইসব দেশে নাগরিকদের জীবন ও সম্পদ মারাত্মক হুমকির মুখে। একনায়কদের দোর্দণ্ড প্রতাপে বিরোধী মতের মানুষদের গুম, খুনসহ মিথ্যা মামলায় এক অবর্ণনীয় বন্দিজীবন কাটাতে হয় বছরের পর বছর। বাংলাদেশে প্রায় ১৬ বছর ধরে চলেছে গণতন্ত্রকে বন্দী করে ভয়াবহ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন।

আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে বাংলাদেশকে সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ সকল প্রকার নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছিল। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নানা কালাকানুন দ্বারা ছিল শৃঙ্খলে বন্দী। এদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। চিকিৎসাধীন মুমূর্ষু দেশনেত্রীর সুচিকিৎসাকেও বর্বর আওয়ামী সরকার নির্দয়ভাবে বাধা প্রদান করেছিল। গোটা দেশটাই ছিল বাকরুদ্ধ, ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে আবদ্ধ। ফ্যাসিবাদী সরকারের অগণতান্ত্রিক ও অসহিষ্ণু আচরণের প্রতিবাদ করলেই লেলিয়ে দেয়া হতো পেটোয়া বাহিনী। মানবতাকে উচ্ছেদ করে আওয়ামী সরকারের পোষ্য সন্ত্রাসীরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করে বলেই নারী শিশুসহ সাধারণ মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। 

একমাত্র গণতান্ত্রিক সমাজেই মানুষের সার্বিক অধিকার নিশ্চিত হয়। আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলেও গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সুষ্ঠু চর্চার কর্মপ্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। এখন ‘মব জাস্টিস’ নামে এক হিংস্র উন্মাদনা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার পরিবেশকে বিপন্ন করবে। আর যেন একমাত্রিক রাষ্ট্রের পুনঃপ্রবর্তন না হয় সেজন্য গণতন্ত্রকে গতিশীল ও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। মানবতা, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সুমহান ঐতিহ্য আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য গণতান্ত্রিক শক্তির অটুট ঐক্য বজায় রাখা অতীব জরুরি।  

নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিবসটির তাৎপর্য অপরিসীম। প্রতি বছর ২৬ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক এই দিবসটি পালিত হয়। এই দিবসটি নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সংহতি জানানোর জন্য পালিত হয়।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews