আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। ১২ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। বেশিরভাগ আসনে এরই মধ্যে প্রার্থীও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। বিএনপিরও ২৭২ আসনে প্রার্থী দেয়া শেষ। নানা হিসাব-নিকাশের কারণে এখনো ২৮টি আসনে প্রার্থী দেয়নি দলটি। আগামী বৃহস্পতিবারের (১৮ ডিসেম্বর) মধ্যে সেটিও চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে।
বুধ ও বৃহস্পতিবার শরিক দল এবং জোটের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে আসনের বিষয়ে এই সিদ্ধান্তে আসবে বিএনপি। জানা গেছে, বেশ কিছু আসনে সমমনা দলগুলোকে তারা ছাড় দেবে। যদিও সেই সংখ্যা এখনো চূড়ান্ত নয়। আলোচনা করেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসা হবে। রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে যুগপৎ আন্দোলনের সহযোগীদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে, এমন বার্তাও সমমনা নেতাদের দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রার্থী এবং সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বিবেচনায় নিয়ে শরিকদের মধ্যে বিজয়ী হওয়ার মতো যোগ্য প্রার্থীর জন্য আসন ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আসন ছাড়াই শুধু নয়, তাদের জেতানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাও করা হবে।
বৈঠকে শরিকদের আসন চূড়ান্ত করা নিয়ে আলোচনা ছাড়াও রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে বিএনপি কীভাবে সরকার গঠন করবে ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। আসন ছাড়ার ব্যাপারে বিএনপি বেশ ইতিবাচক ছিল বলে জানা গেছে। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে দলটি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, সেই ঐক্য অব্যাহত রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আর আসন সমঝোতা নিয়ে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা আগামী বৃহস্পতিবার মধ্যে মীমাংসা হবে। ’
১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘বুধ ও বৃহস্পতিবার আসন নিয়ে আলোচনা হবে। সেখানে আসন নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের সমাধান হবে। ’
প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর বিএনপি প্রথম পর্যায়ে ২৩৭ আসনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে। বিতর্ক ওঠায় পরদিনই মাদারীপুর-১ আসনের ঘোষিত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার নাম স্থগিত করা হয়। ৪ ডিসেম্বর আরও ৩৬ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। এর মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনও রয়েছে।
এই দু’দফা দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার আগে সমমনা কোনো নেতার সঙ্গে বিএনপি আলোচনা করেনি বলে অভিযোগ আছে জোট ও দলগুলোর নেতাদের। শনিবারের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানায় তারা। তাদের অভিযোগ, অবমূল্যায়ন ও অবজ্ঞা করা হয়েছে তাদের।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘শরিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আসন চূড়ান্ত হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ’
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে জাতীয় সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আসন ছাড়ের বিষয়ে ইতিবাচক বিএনপি। এ ক্ষেত্রে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে বলেও জানিয়েছে।’