জ্যৈষ্ঠের শুরুতে বাজারে চলে এসেছে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল আর জামরুলসহ গ্রীষ্মের নানা ফল। আগ্রহের সঙ্গে ক্রেতারা সেগুলোর জাতপাত আর দাম শুনছেন। মৌসুমি ফলের স্বাদ নিতে দাম চড়া হলেও কিনে বাসায় ফিরছেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে উঠছে এসব ফল। বিক্রি হচ্ছে পাইকারি ও খুচরা দরে। যদিও পাইকারির চেয়ে খুচরা বিক্রেতারা দাম হাঁকছেন দ্বিগুণ।
কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতারা আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুল, সফেদাসহ বিভিন্ন ফলের ডালা সাজিয়ে বসেছেন। ক্রেতারা দামদর জিজ্ঞেস করছেন। বেশি দাম শুনে কেউ ফিরে যাচ্ছেন, কেউ আবার পরিমাণে অল্প হলেও কিনে বাসায় ফিরছেন।
বাজারে এখন দেখা মিলছে হিমসাগর, গোবিন্দভোগ ও কলমি আমের। চুয়াডাঙ্গা থেকে হিমসাগর আর গোবিন্দভোগ এনেছেন কারওয়ান বাজারের গ্রিন ফ্রুটসের বিক্রেতা জামাল হোসেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “হিমসাগর পাইকারিতে কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আর কলমি ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।”
তবে একই আম মহাখালী কাঁচাবাজারে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। বিক্রেতারা বলছেন, দাম নির্ভর করে আকৃতি আর ধরনের ওপর।
কারওয়ান বাজারের খান ট্রেডার্সের বিক্রেতা আল আমীন বিক্রি করছেন গোবিন্দভোগ আম। তিনি বলেন, “রাজশাহী ও দিনাজপুর থেকে মোকামে আম এনেছি। বিকিকিনি ভালোই।”
গোবিন্দভোগ আম প্রতি কেজি ৫০ টাকা করে বিক্রির কথা বলেন তিনি।
খুচরায় দাম বেশির কথা তুললে আল আমীন বলেন, “পাইকারি আর খুচরা দামে তফাত আছে। খুচরা আমরাও ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করি। বিক্রেতাদের পরিবহন খরচ, দোকানভাড়ার বিষয়ও আছে।”
বাজারে গ্রীষ্মের ফলের মধ্যে দাম বেশি লিচু আর জামের। কারণ হিসেবে এবার ফলন কমের কথা বলছেন বিক্রেতারা।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “এ বছর লিচুর ফলন মারাত্মক কম হয়েছে। ফলে বাজারে আসতে না আসতেই লিচুর সময় শেষ। আর কয়েকদিন পর পাওয়া যাবে না।”
তিনি বলেন, দিনাজপুর থেকে লিচু এনে বিক্রি করেন। মান ও আকৃতিভেদে একশ লিচু ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। আরেকটু ভালো মানের হলে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকাতেও বিক্রি করেন।
সিরাজুল ইসলামের দোকান থেকে ছেলের জন্য লিচু কিনেছেন ক্রেতা রফিকুল ইসলাম। তার কথায়, “একশ লিচু নিলাম ৪০০ টাকা দিয়ে। আপাতত এটা স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বাসায় বাচ্চাটা খালি লিচু-লিচু করে, এজন্যই কেনা।”
দামি ফলের কাতারে রয়েছে জাম। কারওয়ান বাজারে বড় আকারের জাম পাইকারিতেই বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি দরে। খুচরায় ক্রেতারা দাম হাঁকছেন ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত।
কারওয়ান বাজারে বিক্রেতা জয়নাল হোসেন বলেন, “জাম আসলে খুব বেশি পাওয়া যায় না। জাম তো আর অত চাষ হয় না। গাছও নেই আগের মত। কেনা বেশি, তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।”
জ্যৈষ্ঠের প্রথমে বাজারে উঠেছে কাঁঠাল। আকৃতিভেদে প্রতিটি ১৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আরিফ হোসেন বলেন, “কাঁঠালের দাম একটু বাড়তি। মাত্র আসতে শুরু করছে। ধীরে-ধীরে আরও আসলে দাম কমবে।”
কারওয়ান বাজার থেকে ৩০০ টাকায় একটি কাঁঠাল কেনেন. মকবুল নামের এক ক্রেতা। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “মৌসুমের প্রথম কাঁঠাল কিনলাম আজকে। এলাকার বাজারে উঠে নাই এখনও। দামটা একটু চড়া।”
মৌসুমি ফলের মধ্যে বাজারে খানিকটা কম দামে মিলছে জামরুল। কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আব্দুস শহীদ বলেন, তিনি প্রতি কেজি জামরুল খুচরা ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। পাইকারিতে পাঁচ কেজির দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা। বড় সাইজের জামরুলের দাম আরেকটু বেশি।