ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বার্লিনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় মিত্রদের সাথে বৈঠক করার সময় ইঙ্গিত দিয়েছেন, পশ্চিমা নিরাপত্তা গ্যারান্টির বিনিময়ে কিয়েভ ন্যাটোতে যোগদানের দীর্ঘস্থায়ী উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে প্রস্তুত।
রোববারের (১৪ ডিসেম্বর) আলোচনাটি এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ ও জামাতা জ্যারেড কুশনার ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনার জন্য জার্মানের রাজধানী বার্লিনে পৌঁছেছেন।
আলোচনার আগে জেলেনস্কি প্রস্তাবটিকে কিয়েভের একটি ছাড় হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধক হিসেবে ন্যাটো সদস্যপদের জন্য চাপ দিয়ে আসছে। তিনি বলেছেন, এর পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় অংশীদার ও অন্যান্য মিত্ররা আইনত বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রদান করতে পারে।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ‘শুরু থেকেই ইউক্রেনের আকাঙ্ক্ষা ছিল ন্যাটোতে যোগদান করা, এগুলোই প্রকৃত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু অংশীদার তা সমর্থন করেনি।’
তিনি বলেন, ‘তাই আজ ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা গ্যারান্টি, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য অনুচ্ছেদ ৫-এর মতো গ্যারান্টি এবং ইউরোপের পাশাপাশি কানাডা, জাপান থেকে নিরাপত্তা গ্যারান্টি আরেকটি রাশিয়ান আক্রমণ প্রতিরোধ করার একটি সুযোগ।’
তিনি আরো বলেন, ‘এবং এটি ইতোমধ্যেই আমাদের পক্ষ থেকে একটি সমঝোতা। এই ধরনের গ্যারান্টি অবশ্যই আইনত বাধ্যতামূলক হতে হবে।’
এই সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হিসেবে মনে করা হচ্ছে। দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই ন্যাটোর সদস্যপদ চেয়ে আসছে, যদিও মস্কো জোটের সম্প্রসারণকে হুমকি হিসেবে দেখছে। রাশিয়ার ঘোষিত যুদ্ধের লক্ষ্যগুলোর একটির সাথে সিদ্ধান্তটি সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও কিয়েভ অঞ্চল ছেড়ে দেয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে চলেছে।
জেলেনস্কি বলেন, তিনি একটি ‘মর্যাদাপূর্ণ’ শান্তি এবং রাশিয়া আর কখনো আক্রমণ করবে না এমন দৃঢ় আশ্বাস চাইছেন। তিনি মস্কোর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের শহর ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে ধারাবাহিক আক্রমণের মাধ্যমে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার অভিযোগও করেন।
সূত্র : আল জাজিরা