ছবির উৎস, Javier Hirschfeld/BBC
ছবির ক্যাপশান,
অন্যান্য সম্পর্কের তুলনায় বন্ধুত্ব নিয়ে গবেষণা খুব কম হয়েছে
Author,
মলি গোরম্যান
Role,
বিবিসি
১৯ মিনিট আগে
তখন ২০১৯ সাল, বসন্ত চলছে। সেই সময় আমি প্রথমবারের মতো আমার একটা বন্ধুত্ব ভেঙ্গে দেই। সেটি শেষ হয় তিক্ত তর্ক, কান্না ও হতাশার মাঝ দিয়ে। এরপর থেকে আমরা আর কখনও কথা বলিনি।
সেই বন্ধুত্ব ভেঙ্গে যাওয়ার বেদনা আমি অনেকদিন বয়ে বেড়িয়েছি। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এখনও মাঝে মাঝে আমার তার কথা মনে পড়ে। ভাবি, আমরা কি আবার কখনও যোগাযোগ করবো?
তবে, এখন আমি এই অনিশ্চয়তার সঙ্গেও মানিয়ে নিয়েছি। তবে যতদিন বন্ধুত্ব ছিল, সেটা দারুণ ছিল।
মজার বিষয় হলো, এই ঘটনার ঠিক পাঁচ মাস পর আমার প্রথম প্রেমের সম্পর্কও শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সেটি নিয়ে কথা বলাটা আমার কাছে তুলনামূলক সহজ লেগেছিল।
কারণ সিনেমা, গান, আর বইয়ের মাধ্যমে প্রেমের বিচ্ছেদ সম্পর্কে আমি অনেক কিছু দেখেছি বা শুনেছি। আমার ধারণা, সেইসব অভিজ্ঞতা আমাকে এই ঘটনার জন্য প্রস্তুত করেছিল।
তাই, প্রেম ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমি বুঝতে পেরেছি, বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব কমই কথা বলি। প্রেমের সম্পর্কের সমাপ্তি নিয়ে যেমন আলোচনা হয়, বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, অন্যান্য সম্পর্কের তুলনায় বন্ধুত্ব নিয়ে গবেষণা খুব কম হয়েছে। অথচ, আমাদের শারীরিক সুস্থতা, মানসিক প্রশান্তি এবং জীবনকে আরও পরিপূর্ণ করার ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব একটি বিশাল ভূমিকা রাখে।
ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার সামাজিক মনস্তত্ত্ব গবেষক গ্রেস ভেইথ বন্ধুত্বের ভাঙ্গন নিয়ে কাজ করেন।
তিনি বলেন, “মানুষ হয়তো অবাক হবে যে বন্ধুত্ব কীভাবে শেষ হয়! গবেষকরা এখন কেবল তা নিয়ে ভাবা শুরু করেছেন। এই বিষয়ে গবেষণা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।”

ছবির উৎস, Javier Hirschfeld/BBC
ছবির ক্যাপশান,
কিছু ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব একেবারে শেষ না হয়ে "বেস্ট ফ্রেন্ড" থেকে "সাধারণ বন্ধু" পর্যায়ে নেমে আসে
মিজ ভেইথ মনে করেন, বন্ধুত্বের সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা কম হওয়ার কারণে মানুষ এতে খুব বেশি অনিশ্চয়তায় পড়ে।
তারা বুঝতে পারে না যে এই ভাঙ্গনকে তারা কীভাবে সামলাবেন, বা ভাঙ্গনের পর যে আবেগীয় অনুভূতি তৈরি হয়, সেগুলোর সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নেবেন।
“বন্ধুত্ব শেষ করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট ধারা বা নিয়ম নেই,” বলেন মিজ ভেইথ।
আমাদের জীবনের প্রথম সম্পর্ক তৈরি হয় আমাদের বাবা-মা বা যারা আমাদের বড় করেন তাদের সঙ্গে।
“কিন্তু কিশোর বয়সে প্রবেশ করলে, আমাদের গুরুত্ব চলে যায় সমবয়সীদের দিকে। তখন সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা আর মর্যাদাই প্রধান হয়ে ওঠে,” বলেন কেইটলিন ফ্ল্যানেরি, যিনি নিউ ইয়র্কের স্টেট ইউনিভার্সিটি কলেজ, কোর্টল্যান্ডে মনোবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক।
তিনি বলেন, “বন্ধুরা আমাদের সারা জীবন ধরে নিজেদের পরিচয় গড়তে সাহায্য করে। তারা আমাদের জন্য একধরনের আয়না ও পথপ্রদর্শক। একই সঙ্গে, আমরা তাদের কাছ থেকে স্বীকৃতিও চাই। এ কারণেই সামাজিক সমর্থন, আনন্দ, আর সঙ্গ পাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে ওঠে বন্ধুত্ব।”
গ্রেস ভেইথ উল্লেখ করেন, বন্ধুত্বের শুরুটা সাধারণত পরস্পরের মধ্যকার মিল এবং একে অপরের কাছাকাছি থাকার ভিত্তিতে হয়।
বন্ধুত্ব ভেঙ্গে যাওয়া নিয়ে যেসব গবেষণা করা হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই হয়েছে শিশু ও কিশোরদের উপর, কারণ এই বয়সে বন্ধুত্বের ভাঙ্গন খুব সাধারণ ব্যাপার।
মিজ ফ্ল্যানেরির এক গবেষণায় ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৩৫৪ জন উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের ৮৬ শতাংশ জানিয়েছে যে তারা সম্প্রতি কোনও না কোনও বন্ধুত্ব শেষ করেছে।
বেশিরভাগই বন্ধুত্ব ভাঙ্গার কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছে ঝগড়া বা বিশ্বাসঘাতকতা। অন্যরা বলেছে, বন্ধুর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থন না পাওয়া বা সঙ্গ উপভোগ না করাই বন্ধুত্ব শেষ হওয়ার কারণ।

ছবির উৎস, Javier Hirschfeld/BBC
ছবির ক্যাপশান,
নারীদের বন্ধুত্ব গড়তে সময় লাগে
বন্ধুত্ব ভাঙ্গার কারণে উচ্চ মাধ্যমিকের কিশোর-কিশোরীরা বিভিন্ন মিশ্র অনুভূতির মুখোমুখি হয়েছে। তাদের মনে দুঃখ ছিল, কিন্তু একই সঙ্গে তারা কেউ কেউ স্বস্তি বা আনন্দও অনুভব করেছে।
এটি নির্ভর করেছে বিচ্ছেদের কারণ, কীভাবে তা ঘটেছে, এবং কে সেই সম্পর্ক শেষ করেছে তার উপর।
কিছু ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব একেবারে শেষ না হয়ে “বেস্ট ফ্রেন্ড” থেকে “সাধারণ বন্ধু” পর্যায়ে নেমে আসে।
“আমার মনে হয়, এটি মেনে নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ যে বন্ধুত্ব ভাঙ্গাটা জীবনেরই একটি অংশ এবং এটি খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার,” বলেন মিজ ভেইথ।
“কতজন বন্ধু আছে, তার উপর নির্ভর করে না এটি। বরং বন্ধুরা কতটা কাছের এবং গ্রহণযোগ্য, সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ এখানে।”
সব বন্ধুত্বের ভাঙ্গন বেদনাদায়ক বা নাটকীয় হয় না। কখনও কখনও সম্পর্ক ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়।
কয়েক দশক আগে ১৯৮০-এর দশকে এক গবেষণায় ২০ থেকে ২৮ বছর বয়সী ৯০ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে দেখা যায়, একই লিঙ্গের বন্ধুত্ব শেষ হওয়ার পাঁচটি প্রধান কারণ ছিল।
সেগুলো হলো– দূরত্ব বেড়ে যাওয়া, বন্ধুকে আর পছন্দ না করা, যোগাযোগ কমে যাওয়া, অন্য সম্পর্কের (যেমন, ডেটিং বা বিয়ে) প্রভাব, এবং সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবে মলিন হওয়া।
সাধারণ বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে দূরত্ব বেশি প্রভাব ফেললেও ঘনিষ্ঠ এবং সবচেয়ে কাছের বন্ধুত্বগুলো সাধারণত যোগাযোগের অভাব বা অন্য সম্পর্কের প্রভাবের কারণে শেষ হয়।
তবে গবেষণায় দেখা গেছে, শক্তিশালী বন্ধুত্বগুলো জীবনের এইসব পরিবর্তনের মাঝেও টিকে থাকে।
মিজ ভেইথ বলেন, “যখনই আমি কোনও বন্ধুত্বের সমাপ্তি দেখি, সেখানে এমন অনেক দিক পাই যা বন্ধুত্বকে প্রভাবিত করে। কিন্তু পাশাপাশি এমন উদাহরণও অনেক আছে যেখানে জীবনের নানা ধরনের পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে বন্ধুত্ব আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে।”
বন্ধুত্ব থেকে প্রত্যাশা ও বন্ধুত্ব ভাঙ্গার কারণগুলো লিঙ্গভেদে ভিন্ন হতে পারে।
একটি জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ (৬৬ শতাংশ) আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্ক মনে করেন যে তাদের প্রায় সব ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাদেরই লিঙ্গের। এই ধারণা পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে বেশি।
উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াকালীন মেয়েদের বন্ধুত্ব সাধারণত মানসিক নির্ভরতা ও ঘনিষ্ঠতার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। তবে ছেলেদের বন্ধুত্ব মূলত বিনোদনমূলক কার্যক্রমের ওপর নির্ভরশীল।
বন্ধুত্ব গঠনের প্রেক্ষাপটেও লিঙ্গভেদে পার্থক্য রয়েছে।
নারীরা সাধারণত একাধিক, ঘনিষ্ঠ, একজন বন্ধুর সঙ্গে আলাদা সম্পর্ক গড়ে তোলে। অন্যদিকে, পুরুষদের বন্ধুত্ব নেটওয়ার্কভিত্তিক হয়। তারা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের বন্ধু।
ফলে, পুরুষদের তুলনায় নারীরা তাদের ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে বেশি সময় ব্যয় করে বলে মনে করেন কেইটলিন ফ্ল্যানেরি।
এ কারণে নারীদের বন্ধুত্বে ঝগড়া বা বিরোধ হলে তা অনেক বেশি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
মিজ ফ্ল্যানেরি বলেন, "নারীরা সাধারণত বন্ধুত্বে বিশ্বস্ততা আর মানসিক সমর্থনের ক্ষেত্রে বেশি উচ্চ মান ধরে রাখে। আর যখন কোনও বন্ধুত্ব শেষ হয়ে যায়, তখন তারা ছেলেদের তুলনায় বেশি দুঃখ, একাকিত্ব, মানসিক চাপে ভোগে এবং বিষয়টি নিয়ে বেশি চিন্তা করে।”

ছবির উৎস, Javier Hirschfeld/BBC
ছবির ক্যাপশান,
পুরুষদের বন্ধুত্ব গ্রুপ বা নেটওয়ার্কভিত্তিক হয়
গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা ঝগড়ার পর পুরুষদের তুলনায় বন্ধুর সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে নিতে বেশি সময় নেয়। তাদের রাগও দীর্ঘসময় ধরে থাকে।
নারী ও পুরুষভেদে বন্ধুত্ব ভাঙার কারণগুলোও ভিন্ন হতে পারে।
মিডওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের বন্ধুত্ব বেশি ভেঙে যায় শারীরিক দূরত্বের কারণে।
অন্যদিকে, নারীদের বন্ধুত্বে বাধা তৈরি করে ডেটিং বা বিয়ের মতো বিষয়গুলো।
একদিন আমরা আবার কাছাকাছি আসবো, এই আশা নিয়ে কি আমাদের পুরনো বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক ধরে রাখা উচিৎ? মিজ ভেইথ ও মিজ ফ্ল্যানেরি বলছেন, তার প্রয়োজন নেই।
কখনও কখনও ছেড়ে দেওয়া ভালো।
যেমন, একটি বিষাক্ত (টক্সিক) বন্ধুত্ব শেষ করলে আমাদের ভালো হতে পারে।
"আমরা অনেক সময় বন্ধুত্বকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখি। সব বন্ধুত্ব কিন্তু আমাদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে না। বেশিরভাগ সময় এর ভালো দিক আছে, তবে আমাদের এমন বন্ধুদেরই বেছে নেওয়া উচিৎ, যারা আমাদের সাহায্য করবে," বলেন মিজ ফ্ল্যানেরি।
কিছু বন্ধুত্ব আমাদের ভালো অনুভব করায়, আবার কিছু আমাদের ক্লান্ত আর হতাশ করে।
তবে বন্ধুত্ব শেষ করার আরেকটি চ্যালেঞ্জ– কাউকে আঘাত না দিয়ে এটি শেষ করা।
একটি বিতর্কিত কিন্তু সাধারণ পদ্ধতি হলো "ঘোস্টিং"। এটি ডেটিংয়ের জগতে পরিচিত একটি শব্দ। কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক শেষ করতে তাদের থেকে হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যাওয়া হয়, যাতে অপরদিকের মানুষটির মুখোমুখি হতে না হয়। বর্তমানে বন্ধুত্ব শেষ করতেও এটি ব্যবহৃত হচ্ছে।
১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী যুবকদের ওপর করা এক গবেষণায় জানতে চাওয়া হয়েছিল, তারা কেন তাদের বন্ধুত্ব শেষ করেছে?
তাদের বলা কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল: বিষাক্ত সম্পর্ক, আগ্রহ হারানো, বিরক্তিকর লাগা, নিজেকে রক্ষা করা এবং কখনও কখনও সীমা অতিক্রম করা।
অনেক ক্ষেত্রে বন্ধুত্বের সময়কাল দীর্ঘ ছিল। কিন্তু এটি "ধীরে ধীরে ঘোস্টিং"-এর প্রবণতাকে আটকাতে পারেনি। অর্থাৎ, তারা হঠাৎ করে সম্পর্ক না ভেঙ্গে ধীরে ধীরে দূরে সরে গেছে।
যারা এই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে, তারা “দুঃখিত, হতাশ, আহত” হয়েছে। কিন্তু তবুও তারা এটিকে নিজেদের সুরক্ষার মাধ্যম হিসাবে দেখেছে। তারা মনে করেছে, এই টক্সিক বন্ধুত্বের বিষয়ে সরাসরি আলোচনা করা হলেও তা শেষমেষ কোনও কাজে আসবে না।

ছবির উৎস, Javier Hirschfeld/BBC
ছবির ক্যাপশান,
ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকা একটি পরিপূর্ণ জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
তবে মিজ ভেইথ একটি ভিন্ন, সম্ভবত আরও ভালো পদ্ধতির পরামর্শ দিয়েছেন। তা হলো– বন্ধুত্ব বজায় রাখা ও মজবুত করার উপায় শেখা এবং ঝগড়া বা মতবিরোধের মোকাবিলা করা।
"অনেক মানুষ রোমান্টিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মনে করেন, ঝগড়া মিটিয়ে নেওয়া জরুরি। এটি আমরা স্বাভাবিক মনে করি। কিন্তু বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে আমরা চাই, সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলুক। আর তা না হলে আমরা সহজেই হাল ছেড়ে দিই,” বলেন তিনি।
"অনেকেই মনে করেন, বন্ধুত্ব মানেই তা সহজ, আনন্দময়, মজাদার হওয়া উচিত। এটি সত্যি। কিন্তু এর ফলে অনেক সময় ধারণা জন্মায় যে বন্ধুত্বের ঝগড়া মেটানোটা প্রয়োজনীয় নয়।"
রোমান্টিক সম্পর্ক ও বন্ধুত্বে একই ধরনের আবেগীয় অনুভূতি থাকে। যেমন– উষ্ণতা আর আনন্দ।
তবে এই দুইয়ের মাঝে একটি বড় পার্থক্য হলো, রোমান্টিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একগামিতা প্রত্যাশা করা হয়। যদিও এটি সংস্কৃতি বা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে।
তবে বন্ধুত্বে একগামিতার কোনও প্রত্যাশা নেই। ফলে মাঝে মাঝে জটিলতা তৈরি হয়। যেমন, খুব কাছের কোনও বন্ধুর যদি অন্য কোনও খুব কাছের বন্ধু থাকে, তখন ঈর্ষা অনুভব হতে পারে।
এক্ষেত্রে মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ, অন্য বন্ধুরা থাকলেও আপনার বন্ধুত্ব হুমকির মুখে পড়বে না।
বন্ধুত্বের মনস্তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও, এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রচুর সময় আর মনোযোগ নিয়ে থাকে।
একটি সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ৬১ শতাংশ আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্ক মনে করেন যে ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকা একটি পরিপূর্ণ জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জীবনের অনেক সময়েই বন্ধুরা সেই স্থিতি ও সমর্থন দিতে পারে, যা শুধুমাত্র বিয়েতে পাওয়া যায়।
রোমান্টিক সম্পর্কে বিচ্ছেদ হওয়া এবং পরে ভেবে-চিন্তে আবার একসঙ্গে হওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়।
তাহলে কি আমরা পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে পুনর্মিলন বা তাদেরকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবতে পারি?
মিজ ফ্ল্যানেরি বলছেন, এটি নির্ভর করে বন্ধুত্বের ধরণের ওপর।
"আমার মনে হয়, কিছু ক্ষেত্রে সেই বন্ধুত্ব পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। আবার কিছু ক্ষেত্রে সেটি মিটিয়ে না ফেলাটাই ভালো," তিনি বলেন।
"এটি অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করে। আপনি কি সেই বন্ধুত্ব শেষ হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছেন? সেই সম্পর্ক কি আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে? যদি আপনার মনে হয় যে আপনি সত্যিই সেই বন্ধুত্বকে মিস করছেন, তাহলে সেটি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে।"