দেশের প্রথম চ্যালেঞ্জ কাপের ম্যাচশেষে যখন বসুন্ধরা কিংসের সবাই আনন্দে উদ্বেল, সে সময় একজন কিন্তু কাঁদছিলেন। মাঠে তার অঝোর ধারায় কান্নার দৃশ্য দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল। সতীর্থরা এসে কান্নারত ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছিলেন। এই কান্না কিন্তু দুঃখের ছিল না, স্বস্তির। মনে হয়েছে অনেক দিন পর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা ভারী কোনও বস্তুর নিমিষে সরে যাওয়া! 

একে তো দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তার ওপর অনেক দিন পর কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পেয়েছেন ফাহিম। অথচ ফরোয়ার্ড হয়ে বহুদিন গোল না পাওয়া ও চোটে থাকায় সমর্থক কিংবা কাছের অনেক মানুষের কাছ থেকে বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে হতাশা কম ছিল না। কিংস অ্যারেনায় মোহামেডানের বিপক্ষে গোল করে লিড এনে দিয়েছেন তিনি। তাই রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই ফাহিমের চোখ বেয়ে নেমে পড়ে অশ্রু।

অশ্রু যেন থামতেই চাইছিল না। দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। নিজে গোলও পেয়েছেন। তাহলে ফাহিমের এমন কান্না কেন? প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিতেই ফাহিম অন্য প্রান্ত থেকে বাংলা ট্রিবিউনের কাছে সব কিছু খোলাসা করেছেন এভাবে, ‘আসলে আমি দীর্ঘ ৭ মাস চোটে ছিলাম, ফিরে জাতীয় দলে খেলেছি। এর আগেও ক্লাব- জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা তো ছিলই। এই সময়ে সেভাবে গোল করতে পারিনি। দীর্ঘসময় চোটে থাকায় ও গোল করতে না পারার কারণে বুলিংয়ের শিকার হয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়াসহ সামনেও অনেকে বাজে কথা বলেছে। তাই কাল গোল করতে পেরে মনে হয়েছে বুক থেকে ভারী কিছু নেমে গেলো। হালকা লেগেছে। এসব চিন্তা করে কেঁদে ফেলি।’

রাকিবের সঙ্গে ফাহিম (বামে)।





গোল করে এখানেই থেমে থাকতে চান না সিরাজগঞ্জ থেকে উঠে আসা ফুটবলার। চ্যালেঞ্জ কাপে রাকিব হোসেন না থাকায় চাপটা বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন ফাহিম, ‘রাকিব অনেক ভালো খেলোয়াড়। সে থাকলে ম্যাচের চেহারা আরও আগে থেকে পাল্টে যেতে পারতো। তবে সামনের দিকে সে থাকবে। আমরা সবাই মিলে আরও ভালোভাবে ম্যাচ জিততে পারবো। গোলও করতে চাইবো।’

শুক্রবার গোল করে ফাহিম ছুটে গিয়েছিলেন ডাগ আউটে থাকা রোমানিয়ান কোচ ভ্যালেরি তিতার দিকে। যেন গোলটা কোচকেই উৎসর্গ করেছেন তিনি। যদিও তিতা সেই অ্যাক্রোবেটিক গোলকে ইউরোপীয় মানের বলেছেন। ফাহিম শুনে বলেছেন, ‘কোচ সবসময় আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে আসছেন। কোনও সময় আশাহত করেননি। তার প্রেরণা থেকে অবশেষে দীর্ঘদিন পর আমি গোল করতে পেরেছি। তাই গোল করার পরই কোচের দিকে ছূটে যাই।  তার সঙ্গে আনন্দটা ভাগাভাগি করার চেষ্টা করেছি।’

লেবানন ম্যাচে ফাহিম (ডানে)।





ম্যাচে কিংস যখন এক গোলে পিছিয়ে। মোহামেডান তখন জয়ের স্বপ্নে বিভোর। তার পরই কোচের নির্দেশনায় খেলার চিত্র বদলে যায় বলে জানালেন ফাহিম, ‘বিরতির পর কোচ আমাদের বলেছে আশাহত না হতে। আক্রমণ করে গেলে সুযোগ আসবে। সেটা করেই আমরা সফল হয়েছি।’

শনিবার ছুটিতে স্ত্রীকে নিয়ে পিত্রালয়  সিরাজগঞ্জ গেছেন ফাহিম। দুই দিন ছুটির পর আবার ফিরবেন ক্লাবের ডেরায়। নতুন করে প্রিমিয়ার লিগ ও ফেডারশন কাপের প্রস্তুতি নেবেন। নিশ্চয় তখন প্রত্যাশা থাকবে চ্যালেঞ্জ কাপের মতো একের পর এক গোল করে দলকে জেতাতে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews