বায়ু দূষণ: প্রধান যে কারণগুলো দায়ী, ঝুঁকিতে প্রজনন স্বাস্থ্য

  • সানজানা চৌধুরী
  • বিবিসি বাংলা, ঢাকা

২৪ মিনিট আগে

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

বাতাসে ধূলিকণা।

নতুন এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশে ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫৪টি জেলারই বায়ুর মান আদর্শ মাত্রার চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। আদর্শ মাত্রার মধ্যে আছে মাত্র ১০টি জেলার বায়ুর মান।

এই অতিরিক্ত বায়ু দূষণের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়ছে মানুষের প্রজনন ক্ষমতাসহ সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর।

বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর জরীপে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ক্যাপসের গবেষণায় অতিরিক্ত দূষিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বাংলাদেশের ১৮টি জেলাকে।

সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ পরিমাপ করা হয়েছে গাজীপুরে, এরপরেই রয়েছে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ, যেখানে বায়ুতে অতি ক্ষুদ্রকণার মাত্রা বাংলাদেশের আদর্শ মান প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রামের চাইতে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি।

আর বায়ু দূষণের জন্য দায়ী যে অতি ক্ষুদ্র কণা সেটি আদর্শ মাত্রায় আছে কেবল ১০টি জেলায়। সর্বনিম্ন বায়ুদূষণ পরিমাপ করা হয়েছে মাদারীপুর, পটুয়াখালী ও মেহেরপুরে।

এই অতি ক্ষুদ্রকণা বলতে ২.৫ মাইক্রন বা তার কম আকারের বস্তুকণার কথা বলা হচ্ছে।

ক্যাপসের ৮১ সদস্যের একটি গবেষক দল দেশটির ৬৪ জেলার তিন হাজারের বেশি স্থানের বায়ুর অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার মান পরীক্ষা করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন।

তারা এসব জেলার প্রতিটিতে ২.৫ মাইক্রন বা তার কম আকারের ধূলিকণার ব্যাপকতা পরিমাপ করেছেন।

একটি চুলের সাথে তুলনা করলে এসব ধূলিকণার আকার চুলের প্রায় ২০ ভাগের এক ভাগের সমান। যা সহজেই মানবদেহে প্রবেশ করে নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করতে পারে।

আরও পড়তে পারেন:

ময়লা আবর্জনা পোড়ানো হচ্ছে।

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

ময়লা আবর্জনা পোড়ানো হচ্ছে।

দূষণ কম বা বেশি হওয়ার কারণ কী?

এসব জেলায় বায়ুদূষণ বেশি ও কম হওয়ার কারণ হিসেবে গবেষক দল তাদের পর্যবেক্ষণে দেখেছে যে, সবচেয়ে দূষিত ওই তিনটি শহরে অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ কাজ ও সমন্বয়হীন সংস্কার কাজ ও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে।

আশেপাশের প্রায় ১২০০ ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্প কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো সেখানকার দূষণের অন্যতম কারণ বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।

আবার যেসব অঞ্চলে বায়ু দূষণ কম সেখানে তারা এর কারণ হিসেবে রাস্তাঘাটে জ্বালানি তেলে চালিত যানবাহনের সংখ্যা, ইটের ভাটা কম থাকাকে চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা।

সেই সাথে ওইসব অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ গাছপালা এবং প্রাকৃতিক জলাধার লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন।

এইসব এলাকায় রাস্তা সংস্কার কাজের পরিমাণ খুব একটা চোখে পড়েনি বলে উল্লেখ করেন গবেষক দলের প্রধান আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।

তিনি বলেন, "যেসব অঞ্চলে বায়ু দূষণের মাত্রা কম দেখা গিয়েছে সেখানে দেখা গিয়েছে বড় ধরণের কোন প্রকল্পের কাজ বা শহরের প্রাণকেন্দ্রে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বা সংস্কারের কাজ হচ্ছে না। হলেও সংখ্যায় খুব কম।"

গবেষণায়, সবচেয়ে বেশী বায়ু দূষণ দেখা গেছে মিশ্র এলাকায়। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে বাণিজ্যিক, রাস্তার সংযোগস্থল, আবাসিক, শিল্প এবং সংবেদনশীল এলাকা। এদিক থেকে তুলনামূলক কম দূষণ পরিলক্ষিত হয় গ্রামীণ এলাকায়।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশে দূষণ পরিস্থিতি কোথায় কেমন।

ছবির উৎস, CAPS

ছবির ক্যাপশান,

বাংলাদেশে দূষণ পরিস্থিতি কোথায় কেমন।

ঝুঁকির মুখে প্রজনন স্বাস্থ্য

বিশ্বব্যাপী যেসব অসংক্রামক রোগে মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে- তার অধিকাংশই বায়ু দূষণজনিত। গবেষণা বলছে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের কয়েকটি শহরে বায়ু দূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সেখানে বসবাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এই অতিক্ষুদ্র কণা এতোটাই ক্ষুদ্র যে এটি সহজেই মানুষের চোখ-নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে রক্তের সাথে মিশে যায় এবং ফুসফুস, হার্ট, কিডনি লিভার আক্রান্ত করে থাকে।

তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রজনন স্বাস্থ্য। বিশেষ করে গর্ভপাত, জন্মগত ত্রুটি, শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে বায়ু দূষণ বড় ধরণের প্রভাব ফেলে বলে জানান চিকিৎসক রাশিদা বেগম।

তিনি বলেন, "বায়ু দূষণ, সার্বিকভাবে পরিবেশ দূষণের এক ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে মানুষের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর। এতে পুরুষের শুক্রাণু তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটছে, শুক্রাণুর মান কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে মেয়েদের ডিম্বাণু কল্পনাতীতভাবে কমে গিয়েছে। আবার যেসব ডিম্বাণু রয়েছে সেগুলোও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।"

"এসব দুর্বল বা নষ্ট ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর যখন নিষেক ঘটে এতে যে ভ্রূণ তৈরি হয় সেটা গর্ভে জায়গা করতে পারে না, আবার জায়গা করতে পারলেও বাঁচে না, গর্ভপাত হয়ে যায়। আর এই সমস্যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বর্তাতে পারে। " বলেন রাশিদা বেগম।

ফুসফুসের এক্স রে

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

বায়ু দূষণের কারণে ফুসফুসের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।

গড় আয়ু কমে যাচ্ছে

গত বছরে শিকাগো ইউনিভার্সিটির এনার্জি পলিসি ইন্সটিটিউট প্রকাশিত সর্বশেষ এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সে বলা হয়েছে যে, বায়ু দূষণের কারণে সারা বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু কমেছে প্রায় পাঁচ বছর চার মাস। ঢাকায় কমেছে প্রায় সাত বছর সাত মাস।

এছাড়া বায়ু দূষণের ফলে গাছের খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া বা সালোকসংশ্লেষণ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এর প্রভাব পুরো প্রাণীজগতের ওপর পড়ছে বলে জানা গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, "বায়ু দূষণের কারণে খাদ্য উৎপাদনের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে উদ্ভিদ নিজেও বিপদে পড়ে এবং উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল প্রাণীরাও বিপদে পড়ে। এছাড়াও উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও প্রজনন বাধাগ্রস্ত হয়।

উদ্ভিদের জৈবনিক প্রক্রিয়া ঠিক না থাকলে পৃথিবীতে খাদ্য শৃঙ্খল ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।

রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে।

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে।

কী করা প্রয়োজন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী বায়ু দূষণের কারণে বছরে ৪২ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। এর আগেও বায়ুর মানের সূচকে বাংলাদেশ বিশেষত ঢাকা শহর কয়েক দফা সবচেয়ে দূষিত শহর হিসেবে উঠে এসেছে।

গবেষকরা একে এক ধরণের মানবিক বিপর্যয় বললেও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের সমন্বিত, বিজ্ঞানভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়।

সারা বাংলাদেশে বায়ুর মান নিয়ে এর আগে কোন গবেষণা না হওয়ায় দূষণের মাত্রা আগের চাইতে বেড়েছে নাকি কমেছে সেটার তুলনামূলক কোন চিত্র পাওয়া যায়নি।

যেখানে বায়ু দূষণ দেশটির সার্বিক পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ সেক্ষেত্রে পরিবেশ নিয়ে সরকারি উদ্যোগে আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে মনে করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেলিন চৌধুরী।

এমন পরিস্থিতিতে বায়ুদূষণ রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে স্বল্প/মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ১৫ দফা সুপারিশ করেছেন গবেষকেরা।

এরমধ্যে রয়েছে শুষ্ক মৌসুমে দূষিত শহরগুলোয় দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর পানি ছেটানোর ব্যবস্থা করা, নির্মাণ কাজের সময় নির্মাণ স্থান ঢেকে রাখা, নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের সময় ঢেকে নেয়া, রাস্তায় ধুলা সংগ্রহের জন্য সাকশন ট্রাক ব্যবহার করা, অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ করে উন্নত প্রযুক্তির সেন্ড ব্লকের প্রচলন বাড়ানো, ব্যক্তিগত গাড়ি ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা।

প্রয়োজনে নম্বর প্লেট অনুযায়ী জোড়-বিজোড় পদ্ধতিতে গাড়ি চলাচলের প্রচলন করা যেতে পারে।

এছাড়া গাছ লাগানো, ছাদ বাগানে উৎসাহিত করা, জলাধার সংরক্ষণ সেইসাথে নির্মল বায়ু আইনের বাস্তবায়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণে বাজেট ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদন।

ছবির উৎস, CAPS

ছবির ক্যাপশান,

সংবাদ সম্মেলনে ক্যাপস তাদের গবেষণার ফল ঘোষণা করে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, দেশের ১২০টি স্থানে নির্মাণ কাজ চলছে। বায়ু দূষণ ঠেকাতে যেসব প্রটোকল মানার কথা কেউ মানছে না। এ বিষয়ে কঠোর হতে হবে এবং বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

নির্মল বায়ু আইন প্রবর্তন ও পরিবেশ আদালত কার্যকর করা আবশ্যক বলেও তিনি জানান।

এছাড়া বায়ু দূষণ রোধে যে আইনগুলোর খসড়া তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোকে দ্রুত পাশ করা এবং আইনের প্রয়োগ জরুরি বলে মনে করছেন ক্যাপসের আইন উপদেষ্টা মারুফা গুলশান আরা।

তিনি বলেন, "আদালতে মামলা বলতেই আমরা বুঝি ফৌজদারি, দেওয়ানী নাহলে পারিবারিক মামলা। কিন্তু পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়েও যে মামলা করা যায় সেই ধারণা অনেকের নেই। আমাদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। আর যেসব আইন খসড়া হয়ে পড়ে আছে সেগুলো পাস হওয়া প্রয়োজন।"

বায়ু দূষণকোন জেলায় কেমন

ক্যাপসের গবেষণা অনুযায়ী ২০২১ সালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১০২.৪১ মাইক্রোগ্রাম, যা দৈনিক আদর্শ মানের চেয়ে প্রায় ১.৫৭ গুণ বেশি।

এরমধ্যে গাজীপুর জেলায়, যেখানে সবচেয়ে বেশী দূষণ পরিলক্ষিত হয়েছে সেখানে বায়ুর যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২৬৩.৫১ মাইক্রোগ্রাম।

অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী জেলা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বায়ুমান ছিল যথাক্রমে ২৫২.৯৩ এবং ২২২.৪৫ মাইক্রোগ্রাম।

গবেষণার তথ্যানুযায়ী পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম এবং কিশোরগঞ্জ।

অন্যদিকে সবচেয়ে কম দূষিত শহরের মধ্যে রয়েছে মাদারীপুর যার বায়ুমান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৪৯.০৮ মাইক্রোগ্রাম।

দূষণ কম হওয়ার ক্ষেত্রে পরের অবস্থানে রয়েছে পটুয়াখালী, মেহেরপুর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রাজশাহী, রাজবাড়ী, জয়পুরহাট, নাটোর এবং কুড়িগ্রাম।

এই ১০ জেলার বায়ুতে অতি ক্ষুদ্রকণার পরিমাণ প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রাম নিচে রয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

উপকূলীয় এলাকার মধ্যে শুধুমাত্র পটুয়াখালীর বায়ুমান ভালো বায়ুর পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত কিন্তু ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, কক্সবাজার, নোয়াখালী বায়ুদূষণ মাত্রা অনুযায়ী অতিমাত্রার দূষণ এলাকার অন্তর্ভুক্ত।

পাহাড়ি জেলার অর্থাৎ খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবন, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জে অতিমাত্রা থেকে মধ্যম মাত্রার দূষণ দেখা গিয়েছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews