নির্বাচনের আগে ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও নিয়ন্ত্রিত রাখার উদ্দেশ্যে রোববার নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সভা করেছে। সভায় নির্বাচন কমিশন ভোটের মাঠে সহনীয় ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য নানা পদক্ষেপের বিষয় আলোচনা করেছে।

তফসিল ঘোষণা হওয়ার পরই এক প্রার্থীকে লক্ষ্য করে ঘটানো গুলির ঘটনা দেশের রাজনৈতিক মহলে নতুন চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এই প্রেক্ষাপটে কমিশন দলগুলো ও প্রার্থীদের সতর্ক করেছে যে, ভোটের মাঠে যারা ‘বন্ধু সেজে’ পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাদের মধ্যে নাশক বা অনুপ্রবেশকারীরা থাকতে পারে।

নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “যারা আমাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। বিশেষ করে রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তিরা যারা ভোটের মাঠে রয়েছেন। এই ঘটনা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে যে সহযোগী সেজেও অনুপ্রবেশকারীরা থাকতে পারে।” সভায় ভোটারদের মধ্যে ভয় দূর করার উপায়, প্রার্থীদের নিরাপত্তা এবং সম্ভাব্য হুমকির প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সরকারের কঠোর পদক্ষেপের বিষয়ও উঠেছে। নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করেছে, ভোটে যে কোনো বাধা বা নাশকতা প্রতিহত করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় থাকবে।

ভোটকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে অনেক সন্ত্রাসী জামিনে বেরিয়ে গেছেন, যার হাতে অবৈধ অস্ত্র থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৫ আগস্টের পর হারিয়ে যাওয়া অস্ত্র ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কমিশনার সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, ‘ডেভিল হান্ট অপারেশনের’ দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিযান সমন্বিতভাবে চলবে।

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে খুলনা ও সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোর কথাও বৈঠকে আলোচিত হয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা এবং সীমান্ত অঞ্চলে সাম্প্রতিক প্রবণতা খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে।

সভায় নির্বাচন কমিশন সতর্ক করেছে যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথভাবে কাজ করলেও ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কঠোর হওয়া প্রয়োজন। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক হাদির ওপর গুলির ঘটনা ভোটের পরিবেশে ভীতি সৃষ্টি করেছে। কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠ পর্যায়ে কার্যকরভাবে কাজ করছে এবং চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে প্রতিহত করা হবে।”

নির্বাচন কমিশন সহযোগী বা বন্ধু সেজে দলের ভিড়ে প্রবেশ করা অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। সানাউল্লাহ বলেন, “যারা সহযোগী সেজে থাকলেও নাশকতা বা অনুপ্রবেশকারীদের উপস্থিতি হতে পারে, তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”

সভায় দলগুলোর মধ্যে একে অপরকে দোষারোপ না করার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশকে স্থিতিশীল রাখতে এবং সন্ত্রাসীদের সুযোগ না দেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে না দেওয়ার জন্যও সতর্ক করা হয়েছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই সম্ভাব্য প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ইসি তদারকিতে রেখেছে। কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, “যারা ভীতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, তাদের লক্ষ্য ডিফাই করা। এসব ঘটনা যেন সাফল্য পায় না, তা নিশ্চিত করা হবে।”

সভায় ভোটের নিরাপত্তা, প্রার্থীদের নিরাপত্তা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং গোয়েন্দা কার্যক্রম সমন্বয়সহ সার্বিক নির্বাচন পরিবেশের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইসি জানিয়েছে, নির্বাচনের সময় যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাব মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews