নয়া দিগন্ত ডেস্ক

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করা এবং ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুতের লক্ষ্যে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, প্রতিদিন কিছু কিছু বিষয়ে অগ্রগতি ও সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর মাধ্যমে কাজ এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে। আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় সনদ তৈরি করতে আমরা সংকল্পবদ্ধ।

এ দিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের নতুন দফার আলোচনা ‘বয়কট’ করে প্রথম দিন না এলেও দ্বিতীয় দিন জামায়াতে ইসলামী যোগ দেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। একই সাথে বিএনপির প্রতি অন্তর্র্বর্তী সরকারের ‘একপক্ষীয় আচরণ’ নিয়ে ওঠা সমালোচনার বিষয়ে তার দাবি, বর্তমান সরকার ‘সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা’ বজায় রেখেছে।

গতকাল বিকেলে প্রেস সচিব জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের পর সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিফ্রিংয়ে জামায়াতের সংলাপে অংশ না নেয়া বিষয়ক প্রশ্নে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী আগামীকাল (বুধবার) যোগ দেবে। তাদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। একদিন অনুপস্থিত থাকতেই পারে। আগামীকাল ভালোভাবে থাকবে। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারণ জানি না, তবে আগামীকাল আসবে।

এর আগে সকালে সংলাপে না আসার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেছিলেন, আমরা অন প্রোটেস্ট আজকের বৈঠকে যাইনি। তখন বুধবার বৈঠকে যোগ দেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, এটা এখনই বলতে পারছি না। আমরা আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।

এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের সাথে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মুলতবি বৈঠক শুরু হয়। এতে জামায়াতের কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি। পরে জানা যায় লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যে যৌথ ঘোষণা দেয়া হয়েছে তার প্রতিবাদে কমিশনের এ বৈঠক ‘বয়কট’ করেছে জামায়াতে ইসলামী।

দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সংবাদমাধ্যমকে সকালে বলেন, দ্বিতীয় দফার সংলাপে তারা যোগ দেবেন না। বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদের আসনের পাশের আসনটি জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের জন্য রাখা হয়। তবে তা খালি দেখা যায়।

এ দিকে মধ্যাহ্ন বিরতিতে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে বের হওয়ার সময় কয়েকজন সাংবাদিক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের কাছে জামায়াতের যোগ না দেয়ার বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী প্রতীকী বয়কট করেছে। ‘বয়কটের’ কারণ লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠক কি না, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনারা বুঝে নেন।

প্রথম দিনের বৈঠক শেষে প্রেস সচিব শফিকুলের কাছে প্রশ্ন ছিল লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যৌথ বিবৃতি কারণে জামায়াত ক্ষুব্ধ হয়ে আসেনি বলে জামায়াতের নেতারা দাবি করেছেন- এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন? জবাবে তিনি বলেন, আমরা এমন কিছু জানি না।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির প্রতি একপক্ষীয় আচরণ করছে বলে জামায়াত ও এনসিপির উদ্বেগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, আমরা মনে করি আমরা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা মেনটেইন করছি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছে সবাইকে আমাদের অংশীজন মনে করি। আমার মনে হয় না যে, এটা সত্য। আমরা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতায় আছি। এক কথায় সব দিক থেকে আমরা নিরপেক্ষ। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব দল ও পক্ষকেই সরকার সমান গুরুত্ব দিচ্ছে, কাউকে আলাদা করে দেখছে না।’

পরে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজকে জামায়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে উনারা কালকে আসবেন।

জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব : আলী রীয়াজ

দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ সময় দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমরা আশা করি এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। চেষ্টা করছি সকলে না হলেও সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ে যেন আমরা একমত হতে পারি। আমি আবারো বলছি যেসব বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব না, তবুও আমাদের লক্ষ্য জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য যেন খানিকটা ছাড় দিয়ে যেন একটি জায়গায় আসতে পারি, সে চেষ্টা কমিশন সব রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে লক্ষ্য করেছে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, কাঠামোগত দিক থেকে আমরা চেষ্টা করছি কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করতে। আলোচনা করে একটি পর্যায়ে আসার ধারণা থেকেই আমরা এখানে সমবেত হয়েছি।

আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুব মিয়া, মো: ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

এ ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা: তাসনিম জারা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা: মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (বিএলডিপি) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ জাসদের পক্ষ থেকে ডা: মুশতাক হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে আমন্ত্রণ পেলেও বৈঠকে উপস্থিত হননি জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি।

এর আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানায়, গতকালের সভার আলোচ্য সূচিতে রয়েছে- সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, আইনসভায় নারী প্রতিনিধিত্ব, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়া। ১৭, ১৮ ও ১৯ জুন এ তিনদিন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করার কথা।

আমাদের প্রস্তাবের বাইরেও অনেক বিষয়ে একমত হয়েছি : সালাহউদ্দিন

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে সংলাপে বিএনপি তাদের মূল প্রস্তাবের বাইরেও অনেক প্রস্তাবে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি একথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব ছাড়াও অনেক বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছি। বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, ম্যাজিস্ট্রেসি ও নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নীতিগত ও আংশিক ঐকমত্যে পৌঁছেছি।’

প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, ‘বর্তমানে রাষ্ট্রপতির হাতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পূর্ণ ক্ষমতা থাকায় আইনের শাসনের প্রশ্নে শঙ্কা তৈরি হয়। আমরা চাই- রাষ্ট্রপতি যেন নির্ধারিত যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেন। বেশির ভাগ দল এ বিষয়ে একমত হয়েছে।’ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাব নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা দলের ৩১ দফায় সিনেট নামে ১০০ আসনের একটি উচ্চকক্ষের প্রস্তাব দিয়েছি। বেশির ভাগ দল এ বিষয়ে একমত, যদিও কিছু রাজনৈতিক দলের আপত্তি রয়েছে।’ এর আগে সংলাপের বিরতিতে সাংবাদিকদের সামনে দলের ভাবনা স্পষ্ট করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, আগামী মাসের মধ্যে জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করে নতুন গন্তব্যে পৌঁছে দেশে শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় বিএনপি।

এদিন সংলাপ যতটুকু হয়েছে তাতে বিএনপি সন্তুষ্ট কী না জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সন্তুষ্ট কী না সেটা আলোচনার পরে বলা যাবে, তবে আমরা চাই সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের নতুন গন্তব্যে পৌঁছে শক্তিশালী গণতন্ত্র যেন আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারি। ‘একটা জায়গায় এসে সংস্কারের বিষয়গুলো সমাপ্ত করতে পারি এবং জুলাইয়ের মধ্যে যেন জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হতে পারে।’

বিএনপির প্রস্তাবের দিকে ‘হেলে গেছেন’ ড. ইউনূস : এনসিপি

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ‘বিএনপির প্রস্তাবের’ দিকে হেলে যাওয়ার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। দলটির রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, কমিশনের ছয়টি প্রস্তাবের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা যেটির দিকে ‘হেলে গেছেন’, সেটি মূলত বিএনপির দেয়া প্রস্তাব।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে পদ্ধতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাদের দল বাছাই করার যে পদ্ধতি, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। ঈদের আগে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে সরকার প্রধানের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। ‘সংস্কার কমিশন আগে বলেছিল, কোনো পদ্ধতিতে জাতীয় সনদ বা জুলাই সনদ তৈরি হবে, সেটা নিয়ে তারা ছয়টা প্রস্তাব দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটা প্রস্তাব ছিল, সংসদ নির্বাচনের পর সাংবিধানিক সংস্কার করা।’

আদিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ঈদের আগে (জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে) নির্বাচনের যে তারিখ (এপ্রিলের প্রথমার্ধ) ঘোষণা করেছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি হিসেবে, সেখানে তিনি কমিশনের ছয়টা প্রস্তাবের মধ্যে একটির দিকে হেলে যান, যেটি দিয়েছে বিএনপি।’ আদিব বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন এখন যে পথে এগোচ্ছে, সেখানে নির্বাচনে কোন কোন বিষয় থাকবে, তা নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের অবস্থান কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ। বিএনপি যেখানে পরবর্তী সংসদের সংস্কার হবে বলেছে, সেখানে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য কিছুটা হেলে যায়।’

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূর বলেন, ‘একটি বিশেষ দলকে প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ বা আলোচনাটা নিয়ে যাওয়ার একটা অভিযোগ জামায়াতসহ কিছু কিছু দল তুলেছে। আমরাও বলেছি, এখানে রাজনৈতিক দলের বাইরেও গণ-আন্দোলনে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এখানে সাংবাদিকসহ সব পেশাজীবী সংগঠনের মতামত নেয়া দরকার। এখানে কোন দলকে কোন মানদণ্ডে বাছাই করা হয়েছে, সেটাও আমরা জানি না।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews