গতানুগতিক ধারার প্রচলন ভেদ করে নারীকেন্দ্রিক ও বক্তব্যনির্ভর সিনেমার উপস্থিতি ছিল ২০১৪ সালের বলিউড টাইমলাইন। পাশাপাশি বছর জুড়ে সিনেমা পর্দায় তিন খানের আধিপত্যতো ছিলই। এ সালটিতে বলিউডে নির্মিত হয়েছে বৈচিত্র্যপূর্ণ যতসব সিনেমা। আর দর্শকদের কাছে টেনেছে সব বৈচিত্র্যের সমারোহে এ সালের সেরা ১০ হিন্দি সিনেমা।
১। হাইওয়ে
এ সিনেমায় আলিয়া ভাটের অভিনয় শৈলী তাকে হিন্দি সিনেমার শীর্ষ অভিনয়শিল্পীদের কাতারে নিয়ে গেছে। সিনেমাটিতে ভিরা ত্রিপাঠির ভূমিকায় ভাট অভিনয় করেন।
ইমতিয়াজ আলির পরিচালিত সিনেমার সারমর্মে দেখা যায় এক তরুণীর অপহরণ ও নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কারের যাত্রা দর্শককেও নতুন করে চিনতে শেখায়। এতে সমাজের নানা অসঙ্গতিকে, আভিজাত্যের লেবাস আর শ্রেণী বিভেদের তলায় আমাদের চাপা দিয়ে রাখা বিশেষণের খবর চেনা যায়। গুন্ডা মহাভির ভাট্টির ভূমিকায় রানদিপ হুডার অভিনয়ও তার সেরা কাজের একটি। সেই সঙ্গে এ আর রেহমান সংগীতায়োজন সিনেমাটিকে এক আধ্যাত্মিক পর্যায়ে উন্নীত করে । সবমিলিয়ে ‘হাইওয়ে’-এই বছরের সেরা সিনেমা- একথা বলা যায় নির্দ্বিধায়।
২। পিকে
মুক্তির ছয় মাস আগ থেকেই খবরের পাতায় শুরু সিনেমাটির শিরোনাম হওয়া। আর মুক্তির পর এখন পর্যন্ত শিরোনামেই রয়ে গেছে। আমির খানের নগ্ন পোস্টার দিয়ে সমালোচনার শুরুটা আর মুক্তির পর ‘ধর্মানুভূতি’তে আঘাত হানার অভিযোগে। এতকিছুর পরও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের রায়ে সর্বকালের সেরা সিনেমার একটি 'পিকে'। রাজকুমার হিরানি আর আমির খান জুটির নতুন এই সিনেমা বিদ্যুৎগতিতে এগিয়ে চলেছে সর্বকালের সেরা বাণিজ্যিকভাবে সফল হিন্দি সিনেমা হওয়ার দিকেও।
৩। কুইন
কাঙ্গানা রানাওয়াত যে হিন্দি সিনেমার এই প্রজন্মের সবচেয়ে প্রতিভাবান শিল্পীদের একজন, সেটা তিনি প্রমাণ করেছিলেন ২০০৮ সালের ‘ফ্যাশন’ সিনেমাটি দিয়েই। ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারজয়ী এই অভিনেত্রী এবার ‘কুইন’ দিয়ে প্রমাণ করলেন, ভাল গল্প পেলে পুরো সিনেমাকে টেনে নিতে তিনি একাই যথেষ্ঠ।
৪। হায়দার
ভিশাল ভারাদওয়াজের শেক্সপিয়র ট্রিলজির শেষ পর্বটি ছিল এই সিনেমা। ‘হ্যামলেট’ থেকে অনুপ্রাণিত ‘হায়দার’-এর প্রেক্ষাপট হিসেবে গুণী এই নির্মাতা বেছে নিয়েছেন কাশ্মিরকে। আর তাই এই যাত্রায় সঙ্গী হিসেবে নিয়েছেন পঙ্কজ কাপুর, টাবু, কে কে মেনন, শাহিদ কাপুর, শ্রদ্ধা কাপুরকে।
৫।
৫.
আগলি
‘গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর’ খ্যাত নির্মাতা অনুরাগ কাশ্যাপ এবার হাজির হলেন ‘আগলি’ নিয়ে। সাসপেন্স থ্রিলারের পরতে পরতে মানবিক অবক্ষয় আর ভঙ্গুর মানবসম্পর্কের করুণ গল্প তুলে ধরে সিনেমাটি।
৬
.
ফাইন্ডিং
ফ্যানি
নাসিরউদ্দিন শাহ, ডিম্পল কাপাডিয়া, পঙ্কজ কাপুর - আর তাদের সঙ্গে দিপিকা পাড়ুকোন এবং অর্জুন কাপুর- ইংরেজি ভাষায় নির্মিত এই বিদ্রুপাত্মক কমেডি মুক্তির আগেই সাড়া ফেলেছিল অতীত ও বর্তমানের উজ্জ্বল এই তারকাদের জন্যই। সেই সঙ্গে ষাটোধ্বর্ এক বৃদ্ধের ৪৫ বছর আগে হারিয়ে ফেলা ভালবাসার মানুষটির খোঁজে বেরিয়ে পড়ার গল্পও সমানভাবে আকর্ষণ করে দর্শকদের।
৭
.
সিটি
লাইটস
গত বছর 'শাহিদ' সিনেমার জন্য জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত জুটি হান্সাল মেহতা ও রাজকুমার রাওয়ের নতুন এই চলচ্চিত্রটি প্রতীক্ষিত ছিল। অনবদ্য অভিনয়ে সিনেমার হৃদয়স্পর্শী গল্প জয় করেছে দর্শকদের মনও। ২০১৩ সালের ব্রিটিশ সিনেমা ‘মেট্রো ম্যানিলা’র এই হিন্দি রিমেইকে তুলে ধরা হয়েছে রাজস্থান থেকে জীবিকার সন্ধানে মুম্বাই আসা এক কৃষক পরিবারের গল্প।
৮
.
হাম্পটি
শর্মা
কি
দুলহানিয়া
চলতি বছরের অন্যতম ব্লকবাস্টার হিট এই সিনেমাটিকে বলা হচ্ছে নতুন প্রজন্মের ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’। ‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার’-এর পর এই সিনেমায় ভারুণ ধাওয়ান-আলিয়া ভাট জুটির রসায়ন মন কেড়েছে সবার। সেই সঙ্গে কুশলী নির্মাণশৈলী, দারুণ সব গান আর সহজ-সরল গল্প ‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহানয়া’কে পরিণত করেছে বছরের অন্যতম উপভোগ্য সিনেমায়।
৯
.
মেরি
কম
ভারতের অলিম্পিক পদকজয়ী মুষ্টিযোদ্ধা মেরি কমের জীবনভিত্তিক সিনেমা 'মেরি কম'- এ প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে অন্য রকম অবতারে দেখার অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। সঞ্জয় লিলা বানসালির প্রযোজনায় আর উমাঙ্গ কুমারের পরিচালনায় ১৫ কোটি রুপি বাজেটের সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী দারুণ ব্যবসা করেছে। ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে সিনেমাটি আয় করে ১০৪ কোটি রুপি।
১০
.
দেড়
ইশকিয়া
ছয় বছর পর মাধুরি দিক্ষিতের ফিরে আসার সিনেমা হিসেবে ‘দেড় ইশকিয়া’ ছিল চলতি বছরের অন্যতম প্রতীক্ষিত সিনেমা। সেই সঙ্গে ২০১০ সালের প্রশংসিত সিনেমা ‘ইশকিয়া’র সিকুয়াল হিসেবেও সিনেমাটির আবেদন ছিল অন্যরকম।
বক্স-অফিসে তেমন সাড়া জাগাতে না পারলেও সমালোচকদের মন কেড়েছে মাধুরি দিক্ষিত, নাসিরুদ্দিন শাহ, আরশাদ ওয়ার্সি এবং হুমা কুরেশির অনবদ্য অভিনয়। আর সেই সঙ্গে গল্পকথনের অভিনবত্ব আর গাঁথুনির জোর তো ছিলই। সে কারণেই বছরের অন্যতম ভাল সিনেমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে অভিষেক চৌবের এই ব্ল্যাক কমেডি থ্রিলার।