নজরুল ইসলাম, একজন চাকরীজীবী। নিজে কিছু টাকা জমিয়ে আর বন্ধুদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মে মাসে একটি মোটরসাইকেল অর্ডার করেছিলেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে ইভ্যালিতে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতে তার মাথায় হাত। যেকোনোভাবে পণ্য কিংবা টাকা ফেরত চান এই গ্রাহক। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেলকে গ্রেফতারের পর তিনি এই দাবি জানান।
ইত্তেফাক অনলাইনের কাছে নজরুল ইসলাম বলেন, মে মাসে অর্ডার করেছি, এখনো পণ্য হাতে পাইনি। ফোনে যোগাযোগ করেছি, অফিসে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আরও সময় চান।
মনিরুল ইসলাম সবুজ নামের আরেক গ্রাহক বলেন, আমরা ডেসটিনির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। কারণ, ডেসটিনির কর্মকর্তাদের আটকের পর আর কারও স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আমাদের মতো ক্ষুদ্র গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়া হোক। আমরা সর্বস্ব দিয়ে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে এখানে বিনিয়োগ করেছি। তাই অনুরোধ আমাদের পণ্য বা টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
ইরফান কবীর নামে এক যুবক জানান, তিনি ৯ মাস আগে একটি মোটরসাইকেল কেনার জন্য ইভ্যালিতে বুকিং দিয়েছিলেন। এজন্য তিনি ৯৮ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। ৯ মাস পরও তিনি মোটরসাইকেল পাননি।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটা থেকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সিইও মো. রাসেলের মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পরে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে মো. রাসেল, তার স্ত্রী ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে আটক করে র্যাবের প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরআগে, বুধবার রাতে রাজধানীর গুলশান থানায় প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আরিফ বাকের নামে এক গ্রাহক।
এজাহারের বরাত দিয়ে গুলশান থানার পুলিশ জানায়, ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে গ্রাহক আরিফ বাকের ও তার বন্ধুরা ওই প্রতিষ্ঠানে কিছু পণ্যের অর্ডার দেন। এরপর গত ২৯ মে থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন সময় পণ্যের মূল্য বাবদ ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকা অনলাইন ব্যাংকিং ও একটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করেন আরেফ বাকের। অর্ডার করা পণ্য ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে দিতে ব্যর্থ হলে সম্পূর্ণ টাকা ফেরতের দেবে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি। সবশেষ ৫ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির কাস্টম কেয়ার সেন্টার এ যোগাযোগ করে পণ্য পেতে ব্যর্থ হন। এর আগে যতবার যোগাযোগ করা হয়, ততবারই দেব–দিচ্ছি বলে টালবাহানা করে তারা।
ইত্তেফাক/আরকে