জন্ম : ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৬

বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের প্রথম অধিনায়ক তিনি। ফুটবলে নেতৃত্ব দিয়ে লিগ জিতিয়েছেন আবাহনীকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন লং জাম্পে। এমনকি আরমানিটোলা স্কুলের হয়ে ক্রিকেটে হারিয়েছেন প্রথম বিভাগের দল বিবিসি ও বাংলাদেশ স্পোর্টিং ক্লাবকে! একই সময়ে শীর্ষ পর্যায়ে খেলে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাওয়া কিংবদন্তি আব্দুস সাদেকের ৭৫তম জন্মদিন আজ। করোনার এই মহামারিতে ভয়ংকর ভাইরাসটি বাসা বেঁধেছিল তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী ড. নিলুফার সাদেকের শরীরে। জন্মদিনের সপ্তাহখানেক আগে ছাড়া পেয়েছেন হাসপাতাল থেকে। বয়সের কারণে কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল আব্দুস সাদেকেরও। হাঁপাতে হাঁপাতেই জানালেন, ‘বেঁচে আছি, এটাই সেরা উপহার। করোনামুক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে স্ত্রীর বাড়ি ফেরাটাও অনেক বড় পাওয়া। মহান আল্লাহ পৃথিবীকে করোনামুক্ত করে দিন, এটুকুই চাই আমি।’

১৯৬৮ মেক্সিকো অলিম্পিকের হকিতে সোনা জিতেছিল পাকিস্তান। সেই দলে থাকতে পারতেন বাংলাদেশ হকির এই নক্ষত্রও। অলিম্পিকের ২৬ জনের ক্যাম্পে ছিলেন তিনি। চোটের জন্য সেবার খেলা না হলেও পরের বছর ডাক পান পাকিস্তানের ইউরোপ সফরের দলে। সাতটি ইউরোপীয় দেশ ও মিসরে ২২টি ম্যাচ খেলেছিল পাকিস্তান, সাদেক খেলেন ৯টিতে। ক্লাবে কিংবা পূর্ব পাকিস্তান দলে সেন্টার হাফে খেললেও পাকিস্তান জাতীয় দলে পজিশন ছিল রাইট হাফ। সে সময় বাঙালিদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করত পাকিস্তান। অথচ স্টিকের জাদু আর সাবলীল ইংরেজিতে সবার হৃদয়ই কেড়েছিলেন সাদেক। বাঙালিরাও পিছিয়ে নেই—বুঝিয়েছিলেন ভালোভাবে।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল গড়ে তোলেন আবাহনী ক্লাব। তখনকার হকির বিখ্যাত দল ইস্পাহানির প্রায় সব খেলোয়াড় সাদেকের নেতৃত্বে যোগ দেন আবাহনীতে। শিরোপাও জেতে কয়েকবার। পাশাপাশি ১৯৭২ সালে আবাহনীর ফুটবল দলের অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছিল স্টপার পজিশনে খেলা সাদেককে। আবাহনীতে ১৯৭৯ পর্যন্ত খেলার পর সাদেক পালন করেন কোচের দায়িত্ব। পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের প্রথম এই অধিনায়ক নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ১৯৭৮ এশিয়ান গেমসেও।

১৯৮২ সালে হকি ফেডারেশন সম্পাদক হন আব্দুস সাদেক। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতায় ১৯৮৫ এশিয়া কাপের স্বাগতিক হয় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের সফল আয়োজনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে আবারও হন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। এরপর দায়িত্ব পালন করেছেন অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদকেরও।

তাঁর ছোট ভাই আহমেদ আকবর সোবহানও দুর্দান্ত হকি খেলতেন। খেলেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান যুব হকি দলে। এখন তিনি দেশের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান। বাবা আবদুস সোবহান ছিলেন উকিল। এলএলবি পাস করে কিছুদিন উকিল হওয়ার চেষ্টা করলেও মন বসেনি সাদেকের। খেলাধুলা ছাড়ার পর একবার ব্যবসায়ী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কয়েকজন মিলে গার্মেন্ট ব্যবসাও শুরু করেন। কিছুদিন পর বুঝলেন সেটাও তাঁর দ্বারা হবে না! স্ত্রী ড. নিলুফার সাদেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। ছেলে ইশতিয়াক সাদেক বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের প্রধান নির্বাহী। দেশের প্রথম স্পোর্টস চ্যানেল ‘টি স্পোর্টস’-এরও প্রধান নির্বাহী ইশতিয়াক। অবসর জীবন নিয়ে আব্দুস সাদেকের সন্তুষ্টি, ‘স্ত্রীর সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছি আর খানিকটা সমাজসেবার চেষ্টা করছি।’



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews