একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনও আট মাসের বেশি সময় বাকি। সেই সঙ্গে রয়েছে নির্বাচনে অংশ নেওয়া, না নেওয়ার শঙ্কাসহ নানা প্রশ্নও। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত অংশ নেওয়া সম্ভব কিনা, এমন সব প্রশ্নের মধ্যেও তলে-তলে প্রার্থী বাছাইয়ে নতুন একটি প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে তিনটি মাপকাঠি সামনে রেখে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী নির্ধারণ করতে চান দলটির নেতারা। বিএনপির নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগে বেশকিছু রাজনৈতিক সমাধান চায় বিএনপি। এগুলোর মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনকালীন সরকার, সব দলের অংশগ্রহণের মতো বিষয়গুলো রয়েছে। তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনও কূলকিনারা না হলেও নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি সেরে নিতে চায় বিএনপির হাইকমান্ড। লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় স্থায়ী কমিটির উচ্চ পর্যায়ের একটি বিশেষ টিম ইতোমধ্যেই প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে। এই কমিটিতে স্থায়ী কমিটির চার জন কাজ করছেন।

সূত্র বলছে, তিনটি মাপকাঠিতে আগামী জাতীয় সংসদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরি করতে চায় বিএনপি। প্রথমত, বিগত নির্বাচনগুলোয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গেছেন, এমন প্রার্থী। এই প্রার্থীদের মধ্যে আবারও কেউ প্রার্থী হতে চাইলে দলের হাইকমান্ডের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। তবে সূত্র বলছে, বারবার হেরে যাওয়াদের নতুন সুযোগের বাইরে রাখা হবে। দ্বিতীয়ত, ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো নির্বাচন করেছে, এমন আগ্রহীরা ও তৃতীয়ত, গত ৮ বছরে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যোগ্যতা দেখিয়েছে এবং দলের কর্মকান্ডে নিয়মিত অংশ নিয়েছেন। এক্ষেত্রে সর্বশেষ ২০০৮ সালে নির্বাচনে বিজয়ীদের প্রার্থী তালিকায় ওপরেই রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে নবম সংসদের যে আসনগুলোর বিজয়ীদের মধ্যে কয়েকজন মারা গেছেন। তাদের জায়গায় নতুন কাউকে মনোনয়ন দিতে চায় বিএনপি। তবে যারা হেরে গেছেন, তাদেরও ব্যাখ্যার আওতায় আসতে হবে।

সূত্র বলছে, তিন ক্যাটাগরির মধ্যে প্রথম দুই ক্যাটাগরির আগ্রহীদেরই লিখিতভাবে ব্যাখ্যা জানাতে হবে, আগামী নির্বাচনেও কেন তারা প্রার্থী হতে চান। বিশেষ করে বিশ দলীয় জোট ও জোটের বাইরের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনি ঐক্য গড়ে তুলতে হলে মার্কার সঙ্গে প্রার্থীও গুরুত্বপূর্ণ। ফলে, সব দিক বিবেচনা করে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে চায় বিএনপির হাইকমান্ড।এছাড়া সংস্কারপন্থীদের মধ্যে এখনও স্থানীয়ভাবে যাদের প্রভাব ও ভোটব্যাংক অক্ষত রয়েছে, তাদেরও সুযোগ দিতে বদ্ধপরিকর বিএনপির হাইকমান্ড।

বিষয়টি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির দায়িত্বশীলের কাছে জানতে চাইলে তারা পরিষ্কার করে মন্তব্য করতে রাজি হননি। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মনে করেন, ‘নির্বাচনের আগে প্রাথমিক শর্ত, নির্বাচনি পরিবেশ। আরও অনেকগুলো ইস্যু রয়েছে। সেই পরিবেশ এখনও সৃষ্টি হয়নি। তবে তার মতে, বিএনপির একটি নির্বাচনি দল হিসেবে সব সময়ই প্রস্তুত।’ নির্বাচনের গ্রাউন্ড তৈরি হলেই এ বিষয়গুলো সামনে আসবে বলে জানান স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অবশ্য কোনও মন্তব্যই করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমরা জানলেও মন্তব্য করবেন একমাত্র মহাসচিব ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।’ তবে  এই দুজনকে কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকের কাছেই বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। ধারণা করা হচ্ছে, আগামীকাল ২২ মার্চ যৌথসভায় আলোচনা হতে পারে।

যদিও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের কয়েকজন জানান, বৃহস্পতিবার ২৬ মার্চের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ওইদিনটিকে ব্যাপকভাবে উদযাপন করা হতে পারে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews