দুদকে দেওয়া ওই বক্তব্য প্রত্যাহারের পাশাপাশি প্রকাশ্যে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সত্য স্বীকার করে নেওয়ার জন্য ব্র্যাক-ইপিএলকে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে ওই নোটিসে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে সেখানে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এবং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট নোমান হোসাইন তালুকদার সোমবার এই উকিল নোটিস ব্র্যাক-ইপিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডকে পাঠান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে ব্র্যাক-ইপিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল হক খান এ বিষয়ে কথা বলেতে রাজি হননি।

নোটিসে বলা হয়, ব্র্যাক-ইপিএলের সঙ্গে সুসম্পর্কের ভিত্তিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম তাদের স্বত্বাধিকারী কোম্পানি বাংলাদেশ নিউজ ২৪ আওয়ার্স লিমিটেডের একটি ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট তৈরি করে দিতে অনুরোধ করেছিল, যাতে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের আলোচনায় তা উপস্থাপন করা যায়।

এর ভিত্তিতে ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল ব্র্যাক-ইপিএল এবং বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মধ্যে একটি এনডিএ (নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়। দুই পক্ষের মধ্যে অনেকগুলো বৈঠক এবং দফায় দফায় আলোচনা চলে।

নোটিসে বলা হয়, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে বেশ কিছু ইমেইলে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত এবং নথি ব্র্যাক-ইপিএলকে সরবরাহ করা হয়। পরে ব্র্যাক-ইপিএলের পক্ষ থেকে একটি খসড়া ইনফরমেশন মেমোরেন্ডাম (আইএম) তৈরি করে পাঠানো হয়, যেখানে স্পষ্ট বলা ছিল, সম্ভাব্য প্রাইভেট ইক্যুইটি ইনভেস্টরদের জন্যই সেটা তৈরি করা হয়েছে।

ব্র্যাক-ইপিএলের পক্ষ থেকে পরে বিভিন্ন সময়ে আরও কিছু নথি চাওয়া হলে সে অনুযায়ী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম তা সরবরাহ করে। এরপর ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আরেকটি ইমেইলে ব্র্যাক-ইপিএল হালনাগাদ ইনফরমেশন মেমোরেন্ডামটি (আইএম) পাঠায়, যেখানে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ভ্যালুয়েশন করা হয় ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

উকিল নোটিসে বলা হয়, ওই ইমেইলে ব্র্যাক-ইপিএলের তরফ থেকে সুনির্দিষ্ট করে বলা হয় যে, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জবসাইট এবং অন্যান্য খাত থেকে আয়ের তথ্য যোগ করে ইনফরমেশন মেমোরেন্ডামটি তৈরি করা হয়েছে, ফলে তাতে আগের খসড়ার তুলনায় ‘ভ্যালুয়েশন’ বেড়েছে। ‘ডিসকাউন্টেড ক্যাশ ফ্লো’ পদ্ধতি (ডিসিএফ) ব্যবহার করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ওই দাম নির্ধারণ করার কথাও সেই ইমেইলে জানানো হয়।

ওই ভ্যালুয়েশনের ভিত্তিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম একাধিক সম্ভাব্য বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চালায় এবং ব্র্যাক-ইপিএলের তৈরি করা ইনফরমেশন মেমোরেন্ডামটি সেসব আলোচনায় উপস্থাপন করে।

২০১৮ সালে বিনিয়োগে আগ্রহী নিউ ইয়র্কভিত্তিক একটি মিডিয়া ফাউন্ডেশন এবং পরে সুইডিশ এক একুইটি ফার্মের সঙ্গে আলোচনায় সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা কোনো কোনো বিষয়ে ব্যাখ্যার জন্য ব্র্যাক-ইপিএলের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার আগ্রহ দেখায়। ব্র্যাক-ইপিএলও সে সময় তাতে সম্মতি দেয়।

এ বিষয়ে এখন কথা বলতে রাজি নন ব্র্যাক-ইপিএল ইনভেস্টমেন্টের সিইও দিদারুল হক খান

এ বিষয়ে এখন কথা বলতে রাজি নন ব্র্যাক-ইপিএল ইনভেস্টমেন্টের সিইও দিদারুল হক খান

পরে বিনিয়োগে আগ্রহী আরেকটি কোম্পানি এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা শুরুর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে ইনফরমেশন মেমোরেন্ডাম ও ভ্যালুয়েশন রিপোর্টের একটি হালনাগাদ সংস্করণ চাওয়া হয়। সে অনুযায়ী ব্র্যাক-ইপিএল ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে নোটিসে।

সেখানে বলা হয়, “দর কষাকষির সময় আমাদের ক্লায়েন্ট ওই ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট উপস্থাপন করেন, যা আলোচনা শুরুর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিভিন্ন দিকের পাশাপাশি ওই ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট বিবেচনায় নিয়ে আলোচনা চালায়। এবং শেষ পর্যন্ত তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে বিনিয়োগ করে।”

কিন্তু গত ৩০ জুলাই দুদক তাদের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে একটি মামলা (জিআর নম্বর ৪৭/২০২০, মামলা নম্বর ১০) দায়ের করে, যেখানে বলা হলা হয়, এ ধরনের ভ্যালুয়েশন প্রতিবেদন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে ‘জমা দেননি’ বলে লিখিত দিয়েছেন ব্র্যাক-ইপিএলের সিইও এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ওই এজাহারের প্রসঙ্গ ধরে ব্র্যাক-ইপিএলের সিইওকে পাঠানো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের উকিল নোটিসে বলা হয়, “অথচ আমাদের মক্কেলকে পাঠানো ইমেইলে আপনারা স্পষ্ট করেই লিখেছিলেন যে, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের জন্যই আপনারা ওই ভ্যালুয়েশন প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

“এতে প্রতীয়মান হয় যে, আপনারা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং বেআইনিভাবে নিজেদের বিবৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বক্তব্য দুদকে দিয়েছেন এবং বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য তৈরি ও সরবরাহ করা ওই ভ্যালুয়েশন রিপোর্টের বিষয়ে নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন, যা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের দিয়েছে।” 

নোটিসে বলা হয়, ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনেও একটি চিঠি দিয়েছিল ব্র্যাক-ইপিএল, যেখানে স্পষ্টতঃ স্বীকার করা হয়েছিল যে, ২০১৮ সালে তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রথম ইনফরমেশন মেমোরেন্ডামের খসড়াটি তৈরি করেছিল, কারণ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সে সময় একটি বিদেশি ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করছিল।

“সেহেতু, এখন আপনারা সেটা অস্বীকার করে বলতে পারেন না যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য ওই ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট আপনারা তৈরি করেননি।”

 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আইনজীবী নোটিসে বলেন, “আপনারা ইমেইলের মাধ্যমে আমাদের মক্কেলকে ওই ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট পাঠিয়েছেন এবং এখন আপনারা তা অস্বীকার করে বলছেন, ওইরকম কোনো প্রতিবেদন আপনারা তৈরি করেননি। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ, বেআইনি, অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং এটাও প্রতীয়মান হয় যে কোনো অবৈধ সুবিধা পাওয়ার জন্যই আপনারা এটা করছেন। 

“আর এর মধ্য দিয়ে আপনারা অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে নির্লজ্জভাবে আমার মক্কেলকে হয়রানি করার অন্যায় কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন। আপনাদের এই অবৈধ এবং অপেশাদার কর্মকাণ্ডের কারণে আমার মক্কেলের বিপুল অংকের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি তার ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আইনজীবী ব্র্যাক-ইপিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডকে দেওয়া নোটিসে বলেছেন, “ভ্যালুয়েশন করার কথা অস্বীকার করে যে লিখিত বক্তব্য আপনারা দিয়েছেন, তা প্রত্যাহার করে নিতে অনুরোধ করছি। এবং আপনারা যে ওই ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট তৈরি করে আমাদের মক্কেলকে তা সরবরাহ করেছেন, সে বিষয়টি প্রকাশ্যে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকার করে নিতে অনুরোধ করছি।

“এই নোটিসপ্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে তা করতে ব্যর্থ হলে আমরা রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব; সেরকম স্পষ্ট নির্দেশনা আমাদের মক্কেল আমাদের দিয়েছেন।”

ভ্যালুয়েশনের বিষয়টি কেন দুদকের কাছে অস্বীকার করেছেন জানতে ব্র্যাক-ইপিএল ইনভেস্টমেন্টের সিইও দিদারুল হক খানকে ফোন করা হলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন না।

ব্র্যাক-ইপিএল কোনো চাপের মুখে এখন ভ্যালুয়েশনের কথা অস্বীকার করছে? আসিফ মাহমুদ বলছেন, “হতেও পারে।”

ব্র্যাক-ইপিএল কোনো চাপের মুখে এখন ভ্যালুয়েশনের কথা অস্বীকার করছে? আসিফ মাহমুদ বলছেন, “হতেও পারে।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের একজন মুখপাত্র জানান, ব্র্যাক-ইপিএল যখন ভ্যালুয়েশনের কাজটি করছিল, তখন বাংলাদেশ নিউজ ২৪ আওয়ার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন আসিফ মাহমুদ। ব্র্যাক-ইপিএলের সিইও দিদারুল হক খানের সঙ্গে প্রতিটি বৈঠকেই তিনি উপস্থিত ছিলেন। কলেজ জীবন থেকেই তারা দুজন পরিচিত।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও ব্র্যাক-ইপিএলের মধ্যে এনডিএ হয়েছে, ব্র্যাক-ইপিএল আইএম তৈরি করেছে, বিভিন্ন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে আলোচনার জন্য সেই আইএম হালনাগাদ করেছে- এরপরও এখন কেন তারা অস্বীকার করছে? তারা কোনো চাপের মুখে এ কাজ করছে?

এ প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাও হতে পারে। চাপে পড়েও করতে পারে। আমি তা জানি না।” 

আসিফ মাহমুদ তার হাতে থাকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে কোম্পানি ছাড়েন ২০১৯ সালের মে মাসে। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে এলআর গ্লোবালের সিইও এবং চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার রিয়াজ ইসলামের সঙ্গে বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা শুরু করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

মুখপাত্র বলেন, “বিনিয়োগটি প্রাতিষ্ঠানিক হওয়ায় এবং রিয়াজ ইসলামের দৃশ্যত পেশাদার মনোভাবের কারণে আলোচনা ও সব প্রক্রিয়া বেশ দ্রুত (এক মাসের মধ্যে) সম্পন্ন হয়। তারা নতুন করে নিজেরা ভ্যালুয়েশন করে ৩৩ শতাংশ মালিকানা ৫০ কোটি টাকায় কেনার প্রস্তাব দেন। যদিও দুই বছর আগেই ব্র্যাক-ইপিএলের ভ্যালুয়েশন ছিল ৩৭১ কোটি টাকা।

“তারপরও কোম্পানির দেনা ও কর্মীদের বকেয়া পরিশোধের কথা চিন্তা করে প্রায় এক তৃতীয়াংশ মূল্যে ওই শেয়ার বিক্রি করা হয় (ব্র্যাক-ইপিএলের ভ্যালুয়েশনে প্রতিটি শেয়ারের দাম ৩৭ হাজার ১০০ টাকা ধরা হলেও বিক্রি করা হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ টাকায়)।”

“আমি শুধু আশা করতে পারি, বিচার প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে চলতে দেওয়া হবে। আমরা সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হব, এ বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই,” বলেছেন তৌফিক ইমরোজ খালিদী

“আমি শুধু আশা করতে পারি, বিচার প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে চলতে দেওয়া হবে। আমরা সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হব, এ বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই,” বলেছেন তৌফিক ইমরোজ খালিদী

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম আরও ২০ হাজার নতুন শেয়ার ইস্যু করে ২৫ কোটি টাকায় এবং এর প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী তার নামে থাকা কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ২০ হাজার শেয়ার ২৫ কোটি টাকায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করেন।

২০১৯ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে এ বিষয়ে চুক্তি হওয়ার পর ৬ অক্টোবর সেই টাকা ব্যাংক ড্রাফট হিসেবে বাংলাদেশ নিউজ টোয়েন্টিফোর আওয়ার্স লিমিটেড এবং তৌফিক ইমরোজ খালিদীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়।

এরপর ১৩ অক্টোবর এক প্রতিবেদনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, তাদের কোম্পানিতে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ। ওই বিনিয়োগের একটি বড় অংশ তারা ব্যয় করবে ডিজিটাল সংবাদ সেবার সম্প্রসারণ ও উদ্ভাবনে।

এর দুই সপ্তাহের মাথায় ওই শেয়ার হস্তান্তর নিয়ে অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দেয় দুদক। তাদের চিঠি পেয়ে গত ২৬ নভেম্বর কমিশনের কার্যালয়ে গিয়ে নিজের বক্তব্য জানিয়ে আসেন তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

এরপর দুদকের আবেদনে আদালত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এবং তৌফিক ইমরোজ খালিদীর এফিডিআর অ্যাকাউন্টগুলো ‘অবরুদ্ধ’ করার আদেশ দেয়, এখনও তা সেই অবস্থাতেই আছে।

অনুসন্ধান শুরুর নয় মাসের মাথায় গত ৩০ জুলাই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদকের বিরুদ্ধে ‘অসাধু উপায়ে’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক।

অবরুদ্ধ থাকা অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগের ওই অর্থের কথা তুলে ধরে এজাহারে বলা হয়, তৌফিক ইমরোজ খালিদী চারটি ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাবে ৪২ কোটি টাকা জমা রেখেছেন, যার ‘বৈধ কোনো উৎস’ দুদক পায়নি।

ব্র্যাক ইপিএলের ‘লিখিত বক্তব্য’ পাওয়ার কথা জানিয়ে তার ভিত্তিতেই মামলায় অভিযোগ করা হয়, তৌফিক ইমরোজ খালিদী ‘ভুয়া কাগজপত্র সৃষ্টি করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় প্রতারণার মাধ্যমে’ ওই টাকা অর্জন করেছেন এবং ৫০ কোটি টাকার মধ্যে ৪২ কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা করেছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মুখপাত্র বলেন, “বিনিয়োগ থেকে পাওয়া ওই টাকা আলাদা করে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে এফডিআর করে রাখা হয়েছিল, যাতে প্রয়োজন অনুযায়ী তা কর্মীদের দীর্ঘদিনের বকেয়া এবং ভেন্ডরদের বিল পরিশোধে ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া ওয়েবসাইটের উন্নয়ন এবং ডিজিটাল সংবাদ সেবার সম্প্রসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট কন্ট্রাক্টরদের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হয়েছিল, সেজন্যও টাকার প্রয়োজন হত।

“বিনিয়োগপ্রাপ্তিতে যেসব পরিকল্পনা আমরা নিয়েছিলাম, বর্তমান পরিস্থিতিতে তার সবই আটকে আছে। আর এই পরিস্থিতি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরনের সমস্যার মুখে ঠেলে দিয়েছে।”

তৌফিক ইমরোজ খালিদী শুরু থেকেই বলে আসছেন, তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’, কোনো ‘অবৈধ সম্পদ’ তার নেই।

মামলা হওয়ার খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ৩০ জুলাই তিনি বলেছিলেন, “আমি শুধু আশা করতে পারি, বিচার প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে চলতে দেওয়া হবে। আমরা সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হব, এ বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।”



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews