সৌদি রিয়াল ও ডলার প্রতারণা চক্রের পাঁচ সদস্য শানু ফকির, তৈয়ব হাওলাদার, মিজানুর রহমান মিজান, আল ইমরান ওরফে সুজন সিকদার ও শাহীন বয়াতিকে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেফতার করেছেন। বোরবার রাতে আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রাম থেকে প্রতারণা করার সময়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ চক্রের মূল হোতা কুকুয়া ইউপি সদস্য জালাল হাওলাদার পলাতক রয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। সোমবার তাদের আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের বিচারক মো: আরিফুর রহমান তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের হরিমৃত্যুঞ্জয় গ্রামের আজাহার হাওলাদারের ছেলে জালাল হাওলাদার গত ৪০ বছর ধরে ডলার ও সৌদি রিয়াল বিক্রির নামে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। ওই এলাকায় তার এ চক্রের ৪৫-৫০ জন সদস্য রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডলার ও সৌদি রিয়াল বিক্রির নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। গত রোববার রাতে ওই চক্রের হোতা ইউপি সদস্য জালাল হাওলাদারসহ ৬/৭ সদস্য উপজেলার গাজীপুর গ্রামের সৌদি রিয়াল বিক্রির নামে প্রতারণা করে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি বশিরুল আলমের নেতৃত্বে ওই গ্রামে অভিযান চালানো হয়। পরে ওই চক্রের সদস্য শানু ফকির, তৈয়ব হাওলাদার, মিজানুর রহমান মিজান, আল ইমরান ওরফে সুজন সিকদার ও শাহীন বয়াতিকে আটক করে। কিন্তু মূল হোতা জালাল হাওলাদার পালিয়ে যায়। ওই সময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে ৩০০ আসল রিয়াল ও কাগজ দিয়ে মোড়ানো গামছায় পেচানো ভুয়া রিয়ালের পোটলা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আমতলী থানায় প্রতারণার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার আমতলী থানা পুলিশ তাদের আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালতের বিচারক মো: আরিফুর রহমান তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় অহিদুল আলমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ইউপি সদস্য জালাল হাওলাদার আসল ডলার ও সৌদি রিয়াল দেখিয়ে প্রতারণা করে মানুষকে ফাঁদে ফেলে। পরে ভুয়া রিয়াল ও ডলার দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে গত ৪০ বছরে জালাল কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা আরো বলেন, জালাল এলাকায় ৪৫-৫০ জনের একটি প্রতারক চক্র গঠন করেছে। ওই চক্র ডলার ও সৌদি রিয়ালের প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দ্রুত এ চক্রের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ইউপি সদস্য জালাল হাওলাদারের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, আমার স্বামী আগে ডলার ও সৌদি রিয়াল বিক্রির নামে প্রতারণা করত কিন্তু এখন আর করে না।
বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মারুফ আহম্মেদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে প্রতারণা চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি বশিরুল আলম বলেন, চক্রের হোতা ইউপি সদস্য জালাল হাওলাদারকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এদের বিরুদ্ধে বরিশাল বিমান বন্দর থানায় মামলা আছে। তিনি আরো বলেন, পাঁচজনকে আটককালে ৩০০ আসল রিয়াল ও কাগজ দিয়ে মোড়ানো গামছায় পেচানো ভুয়া রিয়ালের পোটলা উদ্ধার করা হয়। এদের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় মামলা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত পাঁচজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।