প্রথমত, জিয়াউর রহমান জোর করে প্রথমে সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব নেন নাই। বিচারপতি সায়েম স্বেচ্ছায় তাঁকে সেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এখানে সেটা তিনি স্পষ্ট করেই লিখেছেন।
দ্বিতীয়ত, জিয়াউর রহমান জোর করে অস্ত্রের মুখে ক্ষমতা দখল করেন নাই। সায়েমের বিশেষ সহকারী বিচারপতি আব্দুস সাত্তার ও তাঁর উপদেষ্টারাই তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখে তাঁকে জিয়াউর রহমানের অনুকূলে পদত্যাগের অনুরোধ জানান। কেউ তাঁকে কোনো জোরই করেন নাই। উল্টো ওনার দুজন ডাক্তারই ওনাকে প্রোস্টেটের চিকিৎসা করাতে বলেছিলেন এবং এরপর বিচারপতি সায়েম নিজেই পদত্যাগ করার চিন্তা করছিলেন।
তৃতীয়ত, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবেও ক্ষমতা দখল করেন নাই। আওয়ামী লীগ নেতা, শেখ মুজিবের এক কালের পরম বন্ধু যাকে জেতানোর জন্য কুমিল্লায় ভোট ডাকাতি করা হয়েছিল ১৯৭৩ সালে, সেই খন্দকার মোশতাকই খালেদ মোশাররফের নিয়োগ করা রাষ্ট্রপতি সায়েমকে দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে প্রয়োজনে যেকোনো সঠিক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করার ক্ষমতা দিয়েছিলেন। সেই ধারাবলেই জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করেন বিচারপতি সায়েম।
সাবেক প্রেসিডেন্ট আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের “বঙ্গভবনে শেষ দিনগুলি” গ্রন্থের ৩৪ নং পৃষ্ঠায় লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সপ্তাহ খানিক আগে আমার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী ও আমার সার্জন মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান আমাকে পরীক্ষা করে বললেন, আমার প্রোস্টেট অপারেশন করতে হবে। তাঁরা বললেন, ওষুধ কিছু চলবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অপারেশন করতেই হবে। কিছু ট্যাবলেট দেওয়া হলো, কিছুটা আরাম পাওয়া গেল। পরিস্থিতি ছিল এ রকম। আমি সরকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ দ্রুত হারাচ্ছিলাম। তখন আমি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার চিন্তা করি।