চীনের নতুন আবিষ্কৃত একটি ফসিলের সম্ভারে ৫১ কোটি ৮০ লাখ বছরেরও পুরনো প্রচুর পরিমাণ জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই জীবাশ্মগুলোর অর্ধেকেরও বেশি প্রজাতি বিজ্ঞানীদের কাছে অপরিচিত বলে জানানো হয়েছে একটি গবেষণাপত্রে।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, ওই ফসিল সমৃদ্ধ জায়গাটি একেবারেই অনন্য। সেখানে শুধু ভালভাবে সংরক্ষিত জীবাশ্মই নেই, দেহ এখনও নরম আছে এমন জীবেরও সন্ধান পাওয়া গেছে।
গত বৃহস্পতিবার ‘সায়েন্স’ জার্নালে এই সংক্রান্ত গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, চীনের এক নদীর পারে তারা হাজার হাজার জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন।
তারা বলছেন, এই জীবাশ্মগুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণ এই প্রাণীগুলোর দেহের কোমল কোষ, যেমন ত্বক, চোখ বা দেহের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো এত বছর পরও সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে।
জীবাশ্মবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কার ‘একেবারে মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মতো’ কারণ এদের অর্ধেকেরও বেশি প্রজাতি অনাবিষ্কৃত ছিল।
এই জীবাশ্মগুলির নাম দেয়া হয়েছে ‘চিঙজিয়াং বাইওটা’।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, চীনের হুবেই প্রদেশের ডানশুয়ে নদীর তীরে এগুলোকে খুঁজে পাওয়া যায়।
বিজ্ঞানীরা সেখান থেকে এ পর্যন্ত ২০,০০০ নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
এর মধ্যে ৪৩৫১টি নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
নমুনাগুলোর মধ্যে রয়েছে নানা রকম পোকা, জেলিফিশ, সি অ্যানেমোনে এবং শ্যাওলা।
চীনের নর্থওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিংলিয়াং ঝ্যাং, যিনি এই বিষয়ে একটি গবেষক দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘প্রাণীর উদ্ভবের গোড়ার দিক সম্পর্কে গবেষণায় এই জীবাশ্মগুলো গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হিসেবে কাজ করবে।’
এই আবিষ্কারটি বিশেষভাবে বিস্ময়কর এই জন্য যে নরম দেহের যেসব প্রাণী সেগুলো সাধারণত জীবাশ্মতে পরিণত হয় না।
সম্ভবত কোনো ঝড়ের ধাক্কায় এই প্রাণীগুলো দ্রুত নদীতে পলির নীচে চাপা পড়ে যায় বলে অধ্যাপক ঝ্যাং জানান।
জীবাশ্মবিজ্ঞানী অ্যালিসন ডেলি, যিনি এই নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করেছেন, তিনি বলছেন, জীবাশ্ম বিজ্ঞানে গত ১০০ বছরের মধ্যে এতবড় আবিষ্কার আর হয়নি।
এমআর/এএসটি