রেঙ্গুন, ২৮ অক্টোবর- মিয়ানমারে প্রথমবারের মতো এক গর্ভবতী বিদেশি নারীর শরীরে জিকা ভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। শুক্রবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার এ খবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ডাক্তারি পরীক্ষার পর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয়েছে যে ৩২ বছর বয়সী এক বিদেশি নারী জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত। তিনি দেশের বৃহত্তম নগরী ইয়াঙ্গুনে অবস্থান করছিলেন।

স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়, এর মধ্য দিয়ে এই প্রথম বারের মতো মিয়ানমারে জিকা রোগীর সন্ধান পাওয়া গেল। তবে ওই নারী পর্যটক কিনা তা  জানানো হয়নি।

মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের  মুখপাত্র মাইন্ত কিয়াও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, মিয়ানমারের এটাই জিকা ভাইরাস শনাক্তের প্রথম ঘটনা। এর আগে চলতি বছর সেপ্টেম্বরে সিঙ্গাপুরে বসবাসরত মিয়ানমারের দুই নাগরিকের শরীরে এ ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে।

মিয়ানমারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ড. নিয়ান উইন জানান, চলতি মাসের শুরুতে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে জিকা ভাইরাস শনাক্তকরণ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও’র এক প্রতিবেদনে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জিকার সম্ভাব্য বিস্তারের ব্যাপারে সতর্কবাণী করেছে। এতে বলা হয়েছে, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ দেশ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জগুলোতে এ রোগ ব্যাপকভাবে বিস্তারের আশঙ্কা রয়েছে।

বিশ্বের অন্তত ৬০টি দেশে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। গত বছর ব্রাজিলে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিশ্বব্যাপী জিকা ভাইরাস নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। গর্ভবতী নারীরা এ ভাইরাসে আক্রান্ত তাদের গর্ভের শিশুরা বিভিন্ন শারীরিক বিকৃতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।

জিকা ভাইরাসের আক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়েছে ব্রাজিলে। এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৯০০ টি অস্বাভাবিক শিশুর জন্ম হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত্রের সংখ্যা সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি। বেশ কয়েকজন গর্ভবতী নারীসহ  জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮০০ জন।

এডিস প্রজাতির মশা থেকে জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। জ্বর, জয়েন্ট পেইনসহ ছোটখাটো কিছু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় এ ভাইরাসের কারণে। আবার তা এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে সেরেও যায়। তবে বিপত্তি তৈরি হয় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে। গত বছর ব্রাজিলে মাইক্রোসেফালি বা অস্বাভাবিক আকৃতির মাথা নিয়ে শত শত শিশুর জন্ম হয়। মশাবাহিত ভাইরাস জিকাকে এ ধরণের শিশু জন্মানোর কারণ বলে সে সময়ই সন্দেহ করা হচ্ছিল। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নানা গবেষণা শুরু করেন। গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,জিকা ভাইরাস থেকে যে মাইক্রোসেফালি হতে পারে সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। এর আগে যৌন মিলনের মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ছড়ানোর কথাও নিশ্চিত করেছিলেন তারা।

জিকা ভাইরাস সর্বপ্রথম ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় রেসাস ম্যাকাক নামের বানরের দেহে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে উগান্ডা ও তানজানিয়াতে মানবদেহে প্রথমবারের মতো ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়।  এডিস প্রজাতির মশা থেকে জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ব্রাজিলসহ ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ব্যাপক আকারে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সূত্র: রয়টার্স।

এফ/২১:২৭/২৮ অক্টোবর



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews