আবারও এমন এক ঘোষণায় কাঁপিয়ে দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যার প্রতিধ্বনি যেন ছড়িয়ে পড়ল পৃথিবীর প্রতিটি পরাশক্তির শিরায়-উপশিরায়। ২০২৩ সালে এক ভাষণে পুতিন স্পষ্ট জানান—রাশিয়ার তৈরি ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর পারমাণবিক মিসাইল আর এস–২৮ সারমাট, যাকে 'স্যাটার্ন টু' নামেও ডাকা হয়, এখন কমব্যাট ডিউটিতে। সরাসরি উচ্চারণে তিনি জানালেন—এই অস্ত্র আছে বলেই দুশমনরা যেন দুবার ভাবে।
কিন্তু এই ঘোষণার গভীরে আছে আরো অজানা শঙ্কা। প্রশ্ন হচ্ছে—এই একটি মিসাইল দিয়েই আসলে কতটা ধ্বংস সম্ভব?
একাই ধ্বংস করতে পারে ১৫টি শহর
বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্যাটার্ন টু মিসাইলে একসঙ্গে ১০ থেকে ১৫টি পারমাণবিক ওয়ারহেড বসানো যায়। এর প্রতিটি ওয়ারহেড আলাদাভাবে ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, হিউস্টন—এমনকি ১৫টি শহরকেও একসঙ্গে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা সম্ভব এই মিসাইল দিয়ে।
এসব ওয়ারহেডের বিস্ফোরণ শক্তি হিরোশিমা বা নাগাসাকির বোমার চেয়েও বহু গুণ বেশি, যা মুহূর্তেই গুঁড়িয়ে দেবে শহর, শিল্পাঞ্চল, সামরিক ঘাঁটি ও বন্দর। আর শুধু ধ্বংস নয়, বিস্ফোরণের পর ছড়িয়ে পড়বে ভয়ঙ্কর রেডিয়েশন, বিষাক্ত পানি ও দূষিত বাতাস, যা জলবায়ুকেও চিরতরে বদলে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি পারমাণবিক যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, তবে কোটি কোটি মানুষ অনাহারে মৃত্যুবরণ করবে। এই প্রযুক্তি এখন শুধু এক দেশের নয়, গোটা মানবজাতির অস্তিত্বের হুমকি।
প্রযুক্তির দানব: গতি ও কৌশলে অপরাজেয়
২০১৮ সালে রাশিয়া এই মিসাইল তৈরি করে। এটি একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল (ICBM)। শব্দের চেয়েও অনেক দ্রুতগতিতে ছুটে চলে এবং মাঝ আকাশেই নিজের পথ পরিবর্তন করতে পারে। ফলে, রাডারে শনাক্ত করা বা মাঝপথে ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব।
রাশিয়ার দাবি, এর শর্ট বুস্ট ফেজ এবং মহাকাশ ভিত্তিক প্রযুক্তি একে পৃথিবীর সবচেয়ে অপ্রতিরোধ্য পারমাণবিক অস্ত্রে পরিণত করেছে।
শুধু অস্ত্র নয়, এক হুশিয়ারি
পুতিনের বার্তা স্পষ্ট—এই মিসাইল শুধু অস্ত্র নয়, একটি হুশিয়ারি। পৃথিবীর প্রতিটি দেশ যেন প্রতিটি সিদ্ধান্তের আগে শিউরে ওঠে। কারণ, একটি ভুল বোতাম, একটি ভুল সিদ্ধান্ত—যুদ্ধ ছাড়াই শেষ করে দিতে পারে সব।
শেখ ফরিদ