রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দেশে ফিরে সম্মানের সঙ্গে থাকতে পারবেন কি না, প্রত্যাবর্তনের পরই তা বোঝা যাবে। আগামী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে প্রথম দফায় ২ হাজার শরণার্থীর মিয়ানমার ফিরে যাওয়ার কথা। সেটা হতে চলেছে প্রত্যাবর্তনের প্রথম পরীক্ষা। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী আজ মঙ্গলবার রাজধানী দিল্লিতে বিদেশি কূটনীতিকদের এই কথা জানিয়ে বলেন, মিয়ানমারের ওপর ক্রমাগত আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের অনুঘটক হতে পারে।
প্রথম দফার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন যেদিন হতে চলেছে, সেই ১৫ নভেম্বর জাতিসংঘের তৃতীয় কমিটিতে বিবেচিত হবে মিয়ানমারে মানবাধিকার সংক্রান্ত পরিস্থিতির ওপর আনা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসি গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির প্রস্তাব। ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত ৯৯টি দেশ ওই খসড়া প্রস্তাবে যৌথ উদ্যোগী হয়েছে। অন্যান্য দেশগুলো যাতে ওই প্রস্তাব সমর্থন করে, সেই লক্ষে মঙ্গলবার হাইকমিশনে ৬১ দেশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাংলাদেশে এই দেশগুলোর কোনো দূতাবাস এখনো নেই। দিল্লি থেকে তারা বাংলাদেশ দূতাবাসেরও কাজ করে থাকে। এই সমাবেশে হাইকমিশনার মোয়াজ্জেম আলী রোহিঙ্গা সমস্যার বিভিন্ন দিক ও তার সম্ভাব্য সমাধান প্রসঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের সবকিছু অবহিত করেন।
হাইকমিশনার আলী বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ অগস্ট থেকে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয় দিয়েছেন। শরণার্থীদের দেশে ফিরে যাওয়ার সময় হয়েছে। টেকসই সমাধানের একমাত্র উপায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দফা সমাধান সূত্র যা তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে জানিয়েছেন। তিন দফা সূত্র হলো, সংখ্যালঘু গোষ্ঠীভুক্তদের প্রতি মিয়ানমারের বৈষম্যমূলক নীতি ও আইনের অবসান ঘটানো, আস্থা বাড়িয়ে ও অধিকার রক্ষার মাধ্যমে প্রত্যাবর্তনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অত্যাচার বন্ধ করা।
জাতিসংঘের তদারকিতে বৃহস্পতিবার যাঁদের মিয়ানমার ফেরত যাওয়ার কথা, তাঁদের সফল প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বোঝা যাবে এই উদ্যোগ আগামী দিনে কতটা সফল হবে। হাইকমিশনার বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বলেন, নীরবচ্ছিন্ন চাপ সৃষ্টিই সমাধানের উপায়।