শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের মধ্যকার গল টেস্ট ড্র দিয়ে বর্ণাঢ্য টেস্ট ক্যারিয়ারকে বিদায় জানালেন শ্রীলংকান অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। বিদায়বেলায় সতীর্থ, কোচ, সমর্থক— সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এ ক্রিকেটার। অন্যদিকে সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে দারুণ এক বিদায় সিক্ত ম্যাথুস।
এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেকবারই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছেন ম্যাথুস। তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমদের চেনেন অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের ক্রিকেট থেকে। বাংলাদেশের বিপক্ষেই ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টটি খেলে ফেললেন এ লংকান অলরাউন্ডার।
ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাথুস বলেছেন, স্পেশাল অনুভূতি, হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সমর্থকরা আমার পাশে থেকেছে, ভালো সময়ে ও খারাপ সময়েও। অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল, অনেক উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু আমি সব কিছু উতরে যেতে পেরেছি সবার সাহায্যে।
তিনি বলেন, বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই আমার পরিবারকে। আমার বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানদের। সৃষ্টিকর্তা আমাকে দুর্দান্ত এক ক্যারিয়ার উপহার দিয়েছেন। অনেকবার আমি চোটে পড়েছি, আমি কখনো ভাবিনি ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলক ছুঁতে পারব। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। আমি লড়াই করে গেছি, ফিরে এসেছি এবং কঠোর পরিশ্রম করেছি।
ম্যাথুস বলেন, সামনে আরও ছয় মাস আছে। আমি আমার সর্বোচ্চটুকু ঢেলে দিতে চাই ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য। আমি চাই বিশ্বকাপ জিতে টি-টোয়েন্টি বিদায় জানাতে। দেখি, আমার শরীর কতটা সাপোর্ট করে। তিনি বলেন, নির্বাচকরা যদি আমাকে প্রয়োজন মনে করেন (বিশ্বকাপে), আমি দেশের জন্য আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব।
ম্যাথুস বলেন, আমি এমন একজন ছিলাম, যে সমালোচনাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতাম - গঠনমূলকভাবে, যেটা ভালো ব্যাপার। কারণ একজন প্লেয়ার হিসেবে আপনি অনেক ভুল করবেন, কিন্তু সেখান থেকে শেখার চেষ্টা করতে হবে। আমি সব কিছু ভালোভাবে নিয়েছি, কখনো লড়াই করার মতো মনোভাব দেখাইনি। হ্যাঁ, কিছু কিছু সময় মনে হয়েছে, কিছুটা বেশি কঠোর হয়ে গেছে, কিন্তু দিনশেষে এটি আমাকে এমন একজন ব্যক্তি বানিয়েছে যে, দেশের জন্য সব কিছু বিসর্জন দিতে রাজি।
ম্যাথুস আরও বলেন, সব কিছু হাসিমুখে মেনে নিয়েছি, ইতিবাচকভাবে নিয়েছি এবং সামনে এগিয়ে গেছি। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা এত বছর ধরে আমাকে সমর্থন করেছে।
গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম নিয়ে এ ক্রিকেটার বলেন, এটা (গল) আমার জন্য খুবই বিশেষ স্থান। আমি আমার প্রথম ম্যাচ, শততম ম্যাচ এবং শেষ ম্যাচ— সব এখানেই খেলেছি। এটা জাতীয় দলের জন্য গত দুই দশক ধরে একটা দুর্গের মতো ছিল এবং এটা সবসময়ই আমার জন্য খুব বিশেষ একটা জায়গা হয়ে থাকবে। আমি খুশি যে আমরা ভালো কিছু করতে পেরেছি। এখানে সবচেয়ে খারাপ ফল হতে পারত হার, কারণ বাংলাদেশ এই টেস্টে দারুণ খেলেছে। কিন্তু আমরা লড়াই করেছি, হেরে যাইনি। কারণ এখনো এক ম্যাচ বাকি আছে, (সেখানে জিতে) সিরিজ জেতা এখনো সম্ভব।
ম্যাথুস বলেন, আমি দলের জন্য শুভকামনা জানাই। যারা আমাকে সবসময় সমর্থন করেছে, সেই সব প্লেয়ারকে ধন্যবাদ। আগের এবং বর্তমান কোচদের, সবাইকে ধন্যবাদ। ড্রেসিংরুমে অনেক প্রতিভা আছে। এখন সময় নতুনদের, যারা তাদের হাতে ব্যাটনটা তুলে নেবে এবং সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
দুই দলের মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ ড্র হয়েছে। সিরিজে ০-০ সমতা। আগামী ২৫ জুন কলম্বোতে মাঠে গড়াবে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ।