সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক। দেশের সর্বদক্ষিণে টেকনাফে সাগরতীরে ৪২১ মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রকল্প। বিগত আওয়ামী সরকার ৫০০ কোটি টাকার বেশি খরচ করা প্রকল্পের ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১২০ একর জমি বরাদ্দ দেয়। সম্প্রতি এটি ভাঙনের কবলে পড়েছে। ইকো পার্কটি সাগরে মিশে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা ভেঙে গেছে।

প্রকল্পটির রক্ষণাবেক্ষণে কোনো উদ্যোগ আছে কিনা জানতে চাইলে এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী বোর্ডের সেক্রেটারি যুগ্ম সচিব মো. আহসান উল্লাহ বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ফোকাল পয়েন্ট উপপরিচালক (মনিটরিং) শেনজুতি বড়ুয়ার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

জানতে চাইলে শেনজুতি বড়ুয়া যুগান্তরকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে কাজ চলছে।’

বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। অমিত সম্ভাবনাময় এ স্থানটিকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক স্থাপন করছে বেজা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এটি হবে বাংলাদেশের ট্যুরিজমের অন্যতম আকর্ষণীয় ও বিনোদনের কাঙ্ক্ষিত স্থান, উন্মোচন হবে নতুন দিগন্ত। বিদেশি পর্যটকরাও আকৃষ্ট হবেন। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে অন্তত ৩৫ হাজার লোকের।

সরেজমিন দেখা যায়, সম্প্রতি জলোচ্ছ্বাস ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ওই প্রকল্পের সুরক্ষা বাঁধ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভরাট করা বালি প্রতিনিয়ত সাগরে তলিয়ে যাচ্ছে। ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে ভরাটের যে ব্যবস্থা করা হয় তা ভেঙে প্রতিদিন সাগরে মিশে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই ২০-৩০ একর জমির বালি সাগরে ভেসে গেছে। সুরক্ষা বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে প্রকল্পের ভরাট করা বিস্তীর্ণ এলাকার বালি সাগরে ভেসে যাবে। প্রকল্পটিই চরম হুমকির মুখে পড়বে।

বেজা সূত্র জানায়, সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ২৭ বিনিয়োগকারীর অনুকূলে ১১২ একর ২৯ শতক জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যাদের প্রস্তাবিত বিনিয়োগ ৪১৩ মিলিয়ন ডলার। ইফাদ গ্রুপ, ডিআইআরডি কম্পোজিট টেক্সটাইলস লিমিটেড, পাটোয়ারী এন্টারপ্রাইজ, ইস্ট ওয়েস্ট ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস এবং ডিআইপিটিএ গার্মেন্টস লিমিটেডের মতো স্থানীয় কোম্পানিগুলো পার্কে হোটেল উন্নয়নের জন্য জমি বরাদ্দ নিয়েছে।

তবে, এ চারটি কোম্পানির প্রতিনিধিদের মতে, অবকাঠামোগত অভাব তাদের নির্মাণ শুরু করতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুটি বিদেশি কোম্পানিরও সাবরাংয়ে হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো সিঙ্গাপুরভিত্তিক ইন্টার-এশিয়া গ্রুপ, যা ইতোমধ্যেই ৪০ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে এবং নেদারল্যান্ডসভিত্তিক কোম্পানি লিজার্ড স্পোর্টস। এ ট্যুরিজম পার্কে থাকবে পাঁচ তারকা হোটেল, ইকো-ট্যুরিজম, মেরিন একুয়ারিয়াম, সি-ক্রুজ, বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিশেষ সংরক্ষিত এলাকা।

এ ছাড়াও সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের বিশেষ ব্যবস্থা, ভাসমান জেটি, শিশুপার্ক, ইকো-কটেজ, ওসানেরিয়াম, আন্ডার ওয়াটার রেস্টুরেন্ট, ভাসমান রেস্টুরেন্টসহ নানাবিধ বিনোদনের সুবিধা। সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের ভেতরে ১০০ একর জায়গায় বিদেশিদের জন্য একটি ‘এক্সক্লুসিভ জোন’ স্থাপনের পরিকল্পনা আছে বেজার। ওই জোনে প্রবেশ করতে হলে বিদেশি প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা হবে। এ বিষয় বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টার-এশিয়া লিমিটেড সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সাবরাং ট্যুরিজম পার্কসংলগ্ন মেরিন ড্রাইভ থেকে নেটং হিল হয়ে নাফ ট্যুরিজম পার্ক পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার কেবলকার স্থাপনের জন্য একটি সমীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদন করা হচ্ছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews