দুর্বল সম্পাদনার এক দুর্দান্ত উদাহরণ স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন। সমগ্র প্রতিবেদনে অসংখ্য বানান ভুল। ১০টি পরিচ্ছেদের মধ্যে ভারসাম্য নেই, কোনোটি ১ পৃষ্ঠার, কোনোটি ৮২ পৃষ্ঠার। প্রতিবেদনজুড়ে অসংলগ্ন বাক্যের ছড়াছড়ি। পুরো প্রতিবেদন পড়লে মনে হতে পারে, অযত্নে-অবহেলায় তৈরি করা দলিল, যেন অভিভাবকহীন। জাতীয় দলিল এমন হওয়া উচিত নয়।
প্রতিবেদনের প্রধান দুর্বলতা এর বিষয়বস্তুতে। পুরো প্রতিবেদন একটি কারিগরি দলিল হয়ে উঠেছে। প্রতিবেদন প্রস্তুতকারীরা স্বাস্থ্যের সমস্যাকে মূলত কারিগরি সমস্যা হিসেবে দেখেছেন এবং সমস্যার কারিগরি সমাধানের মধ্য দিয়ে সুপারিশমালা তৈরি করেছেন। এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানুষ, এ দেশের পানি, বাতাস, মাটি, কৃষি, সংস্কৃতির উল্লেখ নেই। খুবই সচেতনভাবে এ দেশের স্বাস্থ্য আন্দোলনের ইতিহাসকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ভাষার ব্যবহার দেখে অনুমান করা যায়, কমিশনের সদস্যরা দেশকে চেনেন না।
কমিশনের সদস্য ১২ জন। তাঁদের ১০ জন চিকিৎসক, ১ জন সাবেক আমলা ও ১ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী। কমিশনের প্রধান বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান। প্রতিবেদন তৈরির আগে কমিশন নিজেদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক করেছে ৫১টি, অন্যদের সঙ্গে পরামর্শ সভা করেছে ৩২টি। এসব পরামর্শ সভা হয়েছে ঢাকাসহ আরও আটটি জেলায়। এসব পরামর্শ সভায় কমপক্ষে ৩৬০ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। কমিশন লিখিত পরামর্শ পেয়েছে ৪৬ ব্যক্তি, ২৩টি মন্ত্রণালয় বা সরকারি সংস্থা, ৩টি দাতা সংস্থা এবং ৮৭টি বেসরকারি সংস্থা ও সংগঠনের কাছ থেকে। এ ছাড়া কমিশন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছে।