সুন্দরবন লাগোয়া কয়রার ৪ নম্বর গ্রামে এক বনজীবী পরিবারে আমার জন্ম। এখন বয়স প্রায় ৬০। ছোটবেলা থেকেই বাপ-চাচাদের সঙ্গে বনে যেতাম, দেখতাম কেমন করে তাঁরা মাছ ধরেন। ধীরে ধীরে আমিও নেমে পড়লাম বনের কাজে। মাছ ধরা হয়ে উঠল আমার পেশা, আমার জীবন। ঘরবাড়ি, নৌকা, জাল—সবই অল্প অল্প করে মাছ বেচা টাকায় বানিয়েছি।
তিন মাস সুন্দরবন বন্ধ থাকায় ঢুকতে পারিনি। সংসার চালাতে ঋণও নিতে হয়েছে। নৌকা আর জাল সব ঠিকঠাক করতে দুই দিন দেরি হয়েছে। তিন মাস পরে যাচ্ছি সুন্দরবনে, আল্লাহ চাইলে সাত-আট দিন পর ফিরব।
সুন্দরবনে আমাদের জীবন বড় অনিশ্চিত। কখনো মনে হয়, এবার আর বাড়ি ফিরব না। বনের মধ্যে কতবার যে বাঘের মুখোমুখি হয়েছি, হিসাব নেই। রাতে ছোট খালের মধ্যে নৌকায় শুয়ে শুয়ে শুনেছি বাঘের বুক কাঁপানো হুংকার। নদীর, খালের চরে কুমিরও দেখেছি। সব ভয়, সব বিপদ মেনে নিয়েই বনের পেশায় আছি। আমার চাচাকে একবার বাঘ ধরেছিল।