ছবির উৎস, KAMOL DAS
ছবির ক্যাপশান,
সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড় হিন্দু ধর্মের অন্যতম তীর্থ স্থান
Author,
মুকিমুল আহসান
Role,
বিবিসি নিউজ বাংলা
২ ঘন্টা আগে
সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণ নিয়ে একটি তথ্য গত দুইদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ার পর উপজেলা প্রশাসন সেখানে কোনো মসজিদ নির্মাণ করতে দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।
মূলত সাইফুল ইসলাম নামের একজন মুসলিম যুবকের ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টকে কেন্দ্র করেই আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে ওই যুবক বেশ কয়েকটি পোস্ট দেন। সেসব পোস্টে তিনি দাবি করেন, চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণের বিভিন্ন উদ্যোগ ও এ নিয়ে স্থানীয় আলেম সমাজের প্রতিনিধিদের সাথেও সাক্ষাৎ করেছেন।
মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে ওই যুবক লেখক ও হেফাজতে ইসলামের নেতা হারুন ইজহারের সাথে সাক্ষাৎও করেন।
এই ঘটনার পরই বিষয়টি নতুন মাত্রা পায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মসজিদ নির্মাণের জন্য আর্থিকভাবে সহযোগিতার উদ্যোগও নিতে দেখা যায়।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ দেখা যায়।
সাইফুল ইসলাম নামক ওই যুবকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। তিনি যে ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিটি ব্যবহার করতো সেটি ব্যক্তিগতভাবে চিনেন না বলে দাবি করেন মি. ইজহার।
মি. ইজহার অবশ্য বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, "ওই পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণ নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে সেটি নিয়ে অনেক প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হচ্ছে"।
ওই ঘটনার পর গতকাল রোববার চন্দ্রনাথ মন্দির পরিদর্শনে গিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, "সম্প্রতি একজন পর্যটক ওই পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়ার পর নামাজে লেট হয়েছিল। যে কারণে তিনি মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। তবে আমরা বলেছি- মন্দির এলাকায় মসজিদ নির্মাণের কোন সুযোগ নাই"।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশে সনাতন ধর্মের অন্যতম তীর্থ স্থানে মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ও এ নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট না করতেও অনেককে প্রচারণা চালাতে দেখা যায়।
লেখক ও বিশ্লেষক মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, "কোন স্থানে পর্যটকদের নিয়মিত বিচরণ না থাকলে কিংবা প্রাসঙ্গিকতা না থাকলে, নামাজের জন্য মুসল্লি না থাকলে সেখানে মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না"।

ছবির উৎস, Md Zakir Hossainvia Getty Images
ছবির ক্যাপশান,
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের একটি পাহাড়ের চূড়ায় চন্দ্রনাথ মন্দিরটি রয়েছে
গত ১৫ই অগাস্ট এম এম সাইফুল ইসলাম নামে ঢাকার একজন জুতার ব্যবসায়ী চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ঘুরতে যান।
পাহাড় থেকে ফিরেই ওইদিন তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্টে একটি পোস্ট দেন।
সেখানে তিনি লিখেন- "৯৩ শতাংশ মুসলমানের দেশে সীতাকুণ্ড চন্দ্রিমা পাহাড়ের চূড়ায় মন্দির আছে, মসজিদ নেই কেন। অথচ আমার চোখে দেখা ৯৮ শতাংশ পর্যটকই মুসলিম"।
এরপর তিনি আরেকটি ফেসবুক পোস্টে লিখেন, "একদম ক্লিয়ার করে বলছি, তোরা যেহেতু আমাকে ও আমার সাথীকে নামাজ পড়তে দিস নাই, আজ না হোক কাল সীতাকুণ্ড পাহাড়ে নামাজের জায়গা করবোই করবো ইনশাল্লাহ"।
পরের দিন এই ঘটনাটি নিয়ে মি. ইসলাম ফেসবুকে আবার একটি পোস্ট দেন।
সেই পোস্টে হেফাজতে ইসলামের নেতা ও ধর্মীয় আলোচক হারুন ইজহারের সাথে একটি ছবি আপলোড করে পোস্টে লিখেন- "সীতাকুণ্ড পর্বতের চূড়ায় মসজিদ ৯০ শতাংশ কনফার্ম"।
মূলত এই ঘটনার পর স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ তৈরি হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সীতাকুণ্ডের স্থানীয় এক সাংবাদিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, "সীতাকুণ্ডে চন্দ্রনাথ পাহাড় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান। সেখানে পাহাড়ে বেশ কয়েকটি শত শত বছরের পুরনো মন্দির রয়েছে। মূলত ওই জায়গায় মসজিদ নির্মাণ নিয়ে এই ধরনের পোস্ট প্রদানের পর তাতে আলোচিত ব্যক্তিত্ব হারুন ইজহারের সমর্থনের পর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সনাতন ধর্মের মানুষদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়"।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট দেয়। সেখানে ওই মন্দির চন্দ্রনাথ পাহাড়ে কোন মসজিদ নির্মাণ করতে না দেওয়ারও ঘোষণা দেওয়া হয়।
সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ের এই মন্দিরের এলাকার দায়িত্ব সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির। কমিটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অপূর্ব ভট্টাচার্য বিবিসি বাংলাকে বলেন, "হিন্দুদের মন্দির এলাকায় মসজিদ নির্মাণ করা হবে এমন ঘোষণা দিয়ে কেউ কেউ উত্তেজনা তৈরি করেছিল"।

ছবির উৎস, NurPhoto via getty Images
ছবির ক্যাপশান,
এই পাহাড়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট মন্দির ও উপাসনালয়
ফেসবুকে এম এম সাইফুল ইসলামের পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ার পর সেখানে কেউ কেউ এই মসজিদ নির্মাণে আর্থিক সহায়তার কথাও বলেন। অনেকেই ফেসুবকে পোস্টে শেয়ার দিতে থাকেন।
বিষয়টি নিয়ে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি নষ্টের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়।
তখন স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধর্মীয় নেতা হারুন ইজহারের সাথে যোগাযোগও করা হয়।
এরপর রোববার নিজের ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট দেন মি. ইজহার।
সেখানে তিনি লিখেন, "ঢাকার কিছু তরুণ আলেম উদ্যোক্তা গতকাল আমার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে আসেন। আমি তখন সফরে বের হচ্ছিলাম, মাত্র কয়েক মিনিট কথা হয় তাদের সাথে। সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় কোনো মসজিদ নির্মাণের অভিপ্রায় তারা ব্যক্ত করেন নি"।
মি. ইজহার আরো লিখেন, "তারা শুধু বলেছেন পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত কোনো জায়গায় একটা মসজিদ দরকার এবং এ বিষয়ে তারা অর্থায়নে আগ্রহী। আমি তাদের এর জন্য সাধুবাদ জানাই। আর আমিও মনে করি ইকোপার্ক অংশে মুসলিম পর্যটকদের সুবিধার জন্য ইবাদতখানা নির্মাণের জন্য প্রশাসনের সাথে পরামর্শ করে একটা উদ্যোগ নেয়া যায়। কিন্তু বাস্তব ঘটনার বিপরীতে একটি মহল এ বিষয়ে প্রোপাগাণ্ডা চালিয়ে হিন্দু সমাজকে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে"।
সোমবার এই বিষয়টি নিয়ে বিবিসি বাংলাকে মি. ইজহার বলেন, "তারা বললো মসজিদ হলে তারা অর্থায়ন করবে। কিন্তু তারা আমাকে এটা বলে নাই যে সেখানে হিন্দুদের সম্পত্তি"।
তিনি এটিও বলেন, ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের লিখিত সম্পত্তির ওপর মসজিদ বা মন্দির নির্মাণ করতে পারবে না ধর্মের নামে।

ছবির উৎস, KAMOL DAS
ছবির ক্যাপশান,
বিভিন্ন উৎসবে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে হাজার হাজার হিন্দু ধর্মালম্বীদের আগমন ঘটে
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পাহাড়ের শীর্ষে অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির। এই মন্দিরের আশ আরো বেশ কয়েকটি মন্দিরও রয়েছে।
একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডে যখন হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হলে চন্দ্রনাথ মন্দির কমিটি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে।
সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অপূর্ব ভট্টাচার্য বিবিসি বাংলাকে বলেন, "চন্দ্রনাথ পাহাড়ের ওই এলাকার পুরোটা তীর্থ ক্ষেত্র এবং স্রাইনের (স্থানীয় হিন্দুদের কমিটি) সম্পত্তি। সেখানে মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া পর আমরা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছি"।
এমন পরিস্থিতিতে রোববার চন্দ্রনাথের ওই মন্দির এলাকা পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সীতাকুণ্ডের ওসিসহ প্রশাসনের লোকজন।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, ''সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে করা একটি ফেসবুক পোস্ট আমাদের নজরে এসেছে। পোস্টটি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।''
উপজেলা প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে এটিও জানানো হয়, চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে এবং সেখানে মসজিদ নির্মাণের কোনো উদ্যোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে আশ্বস্ত করা যাচ্ছে, চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় মসজিদ নির্মাণের কোনো অনুমতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, "মসজিদ নির্মাণ নিয়ে স্থানীয়ভাবে কোনো ধরনের উদ্যোগ বা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমি সব পক্ষের সাথে কথা বলেছি। একজনের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে বিষয়টি সামনে আসছে। এর বাইরে অন্য কিছু হয় নি এখানে"।
বিষয়টি নিয়ে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে বসার পর এম এম সাইফুল ইসলামের ওই ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিটি আর সক্রিয় পাওয়া যায়নি।

ছবির উৎস, KAMOL DAS
ছবির ক্যাপশান,
হিন্দু ধর্মের অন্যতম তীর্থস্থান চট্টগ্রামের চন্দ্রনাথ পাহার
সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে অবস্থিত বিভিন্ন মন্দির উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি পবিত্র তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত।
চন্দ্রনাথ পাহাড়ের ওপরেই আছে এক জাগ্রত শিবমন্দির। সাধু-সন্নাসীসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্ত অনুরাগীদের তীর্থ স্থান এটি।
অন্যদিকে, মনোরম সৌন্দর্যের এই পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন অনেকে আসেন এখানে।
পৌরাণিক স্মৃতিবিজড়িত অসংখ্য মঠ-মন্দির আছে এই পাহাড়ে। প্রতিবছর ফাল্গুন মাসে শিবচতুর্দশী মেলা হয় চন্দ্রনাথ পাহাড়ে। দেশ-বিদেশের অনেক সাধু-সন্ন্যাসী আসেন মেলায়।
স্থানীয় স্রাইন কমিটি জানিয়েছে, নেপালের এক রাজা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় শিবমন্দির নির্মাণ করেন। এর মধ্যে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের শিবমন্দিরটি অন্যতম।
স্রাইন কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য অশোক চক্রবর্তী বিবিসি বাংলাকে বলেন,"নেপালের এক রাজা চন্দ্রনাথ মন্দির করে দিয়েছিল ৬০০ থেকে ৮০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে। এই জায়গার বিশাল অংশ এখানে দান করে দিয়েছিলনে"।
তিনি জানান, হিন্দু শাস্ত্রমতে এই এলাকায় রাম এবং সীতা গোসল বা স্নান করেন সেখান থেকেই এই স্থানটির নাম সীতাকুণ্ড হয়।
মন্দির কমিটি জানায়, চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠলেই শিব মন্দিরের দেখা পাওয়া যায়। মন্দিরের ভেতরে শিব লিঙ্গ রাখা আছে। এর আশেপাশে অনেক সাধু-সন্ন্যাসীরা বসে ধ্যান করেন। কেউ কেউ পূজাও করে থাকেন।
স্রাইন কমিটির দাবি, গত কয়েক বছর ধরে এই চন্দ্রনাথ পাহাড়ে পর্যটকদের আনাগোনা অনেকটাই বেড়েছে। যে কারণে তাদের কিছুটা ক্ষোভও রয়েছে।
স্রাইন কমিটির। কমিটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অপূর্ব ভট্টাচার্য বিবিসি বাংলাকে বলেন, "ঐহিত্যবাহী এই তীর্থস্থানে পর্যটকদের অবাধ যাতায়ত বন্ধ করতে হবে। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা সরকারের সাথে বসবো"।