নতুন এই শিশু সুরক্ষা আইন পাস করেছেন টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট। ছবি: রয়টার্স
নতুন এই শিশু সুরক্ষা আইন পাস করেছেন টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট। ছবি: রয়টার্স
অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে নতুন এক আইনে স্বাক্ষর করেছেন টেক্সাসের গভর্নর। অ্যাপল ও গুগলের জন্য বড় এক ধাক্কা হতে পারে রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্যটির তৈরি এ আইন।
নতুন এই শিশু সুরক্ষা আইনে স্বাক্ষর করেছেন টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট, যার অধীনে অ্যাপল ও গুগলকে নিশ্চিত করতে হবে, তাদের অ্যাপ স্টোরে ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই করা হচ্ছে।
আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল রাজ্যে কার্যকর হতে চলেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, ১৮ বছরের নিচের কেউ যদি অ্যাপ ডাউনলোড করতে চায় বা অ্যাপের মাধ্যমে কিছু কিনতে চায় এর জন্য তাদের মা-বাবার অনুমতি লাগবে। আর শুরু থেকেই এ আইনের বিরোধিতা করে আসছে আইফোন নির্মাতা কোম্পানি অ্যাপল ও মার্কিন সার্চ জায়ান্ট গুগল।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে অ্যাপলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা বিশ্বাস করি, এরচেয়েও ভালো কোনো উপায়ে অনলাইনে শিশুদের নিরাপদ রাখা যেতে পারে– যার জন্য লাখ লাখ মানুষকে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে না।”
এ বিষয়ে বিবিসির মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল।
টেক্সাসের আগে এ বছরের শুরুতে একই ধরনের আইন চালু করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি রক্ষণশীল অঙ্গরাজ্য ইউটাহ।
বিবিসি লিখেছে, ফেডারেল বা জাতীয় পর্যায়ে ‘কিডস অনলাইন সেইফটি অ্যাক্ট’ বা কেওএসএ নামের আইনটি প্রস্তাব করেছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা।
এ আইনের আওতায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিকে এমনভাবে তাদের অ্যাপ ও সাইট ডিজাইন করতে হবে, যাতে শিশুরা ক্ষতির শিকার না হয় বা সেই ক্ষতি কমানো যায়।
গত বছর মার্কিন সিনেটে পাস হয় কেওএসএ। তবে মার্কিন কংগ্রেসের হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস বা নিম্নকক্ষে গিয়ে তা আটকে যায়; যা আইনটিকে এ মাসের শুরুতে আবার কংগ্রেসে নিয়ে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রে এ বিষয়ে ফেডারেল আইনের অভাবে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য তাদের নিজস্ব আইন তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
মার্কিন বাণিজ্য দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদনে লিখেছে, এ মাসের শুরুতে এ আইন ঠেকানোর জন্য টেক্সাসের গভর্নর অ্যাবটকে ফোন করেছিলেন অ্যাপলের সিইও টিম কুক।
অ্যাপলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা বাড়ানোয় একমত অ্যাপল”। তবে, এ আইনটি সকল ব্যবহারকারীর প্রাইভেসির জন্য হুমকি তৈরি করেছে, যা নিয়ে “গভীরভাবে উদ্বিগ্ন” তারা।
ফেব্রুয়ারিতে বেশ কয়েকটি নতুন শিশু সুরক্ষা নিয়ম ঘোষণা করেছে অ্যাপল। যার মধ্যে একটি হচ্ছে, নতুন ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে বয়সের একটা সময়সীমা বেছে নিতে হবে ব্যবহারকারীদের।
১৩ বছরের নিচের ব্যবহারকারীদের জন্য মা-বাবা বা অভিভাবকের অনুমতি নিতে হবে। যাতে তারা অ্যাপ স্টোর ও ফেইস আইডি ব্যবহার করে অন্যান্য ফিচার ব্যবহার করতে পারে।
টেক্সারের এ আইনটি ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে চলেছে। এর আগেও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সিলিকন ভ্যালির ওপর চাপ তৈরি করেছে অঙ্গরাজ্যটি।
২০২১ সালে টেক্সাস একটি আইন পাস করেছিল। যে আইনে বলা হয়েছে, কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদেরকে তাদের ‘রাজনৈতিক মতামতের কারণে’ ব্যান বা নিষিদ্ধ করা যাবে না।
ওই সময় কিছু রিপাবলিকান রাজনীতিবিদরা অভিযোগ করেছিলেন, ফেইসবুক ও টুইটার (বর্তমানে এক্স) তাদের মতামত দমন বা কণ্ঠরোধ করছে।