শরৎকাল মানে যেমন বাঙালির আনন্দ উৎসবের দুর্গাপূজা, তেমনই শিউলি ও কাশ ফুলও দুর্গাপুজোর আবহাওয়া তৈরি করে। 

শিউলি আর কাশ ফুলের মিলিত প্রকাশ মানেই  শরৎকাল। আর শরৎকাল মানেই বাঙালির হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পূজার আগমন। চারিদিকে  ঢাকের আওয়াজ, শিউলি ফুলের গন্ধ, কাশফুলের মেলা, সব মিলিয়ে উৎসবের ছটা। শোনা যায় মায়ের পদধ্বনি.. তাই, প্রত্যেক বাঙালির কাছে শিউলি ফুল, কাশ ফুল আর শরৎ কালের একটা আলাদাই গুরুত্ব আছে। কারণ, সর্বপ্রথম এরাই জানান দেয় দুর্গা পূজা আসছে। 

শিউলি ও কাশ ফুল ছাড়া শরৎ যেমন নিষ্প্রাণ, তেমনি শারদীয় উৎসবও অনেকটাই অসম্পূর্ণ। মিষ্টি শিশিরের পরশ, ঢাকের শব্দ আর ভোরের শিউলি তলা-এসবই একে অন্যের পরিপূরক। কথিত আছে, দেবী দুর্গার সব থেকে পছন্দের ফুল শিউলি। তাই, দুর্গাপুজোর অঞ্জলিতে শিউলি ফুলের গুরুত্ব অপরিসীম। শরতের ভোরে ঘাসের ডগায় শিশির জমে। আর এই শিশির ভেজা ঘাসে পা দিলেই যেন স্বর্গসুখের অনুভূতি।

হিন্দু পুরাণ মতে, শিউলি ফুলের আরেক নাম পারিজাত। কথিত আছে, শ্রী কৃষ্ণের স্ত্রী রুক্মিণী ও সত্যভামার বড় ইচ্ছে ছিল তাদের বাগানে স্বর্গের পারিজাত বৃক্ষ বসানোর। স্ত্রীয়ের ইচ্ছা পূরণের জন্য কৃষ্ণ স্বর্গের বাগান থেকে পারিজাত বৃক্ষের একটি শাখা ভেঙ্গে এনে সত্যভামার বাগানে বসিয়ে দেন| সেই গাছে ফুল ফোটার পর সেই ফুল রুক্মিনির বাগানেও পড়ে| এই ঘটনাটি ইন্দ্রদেব জানার পর যথারীতি রেগে যান এবং অভিশাপ দেন ওই গাছে ফুল ফুটলেও ফল কোনদিনও হবে না| সেই থেকে পারিজাত ফুলের গাছে তথা শিউলি ফুলের গাছের বীজ থেকে প্রাণ সঞ্চার হয় না|

আরেকটি গল্প থেকে জানা যায়, পারিজাতিকা নামক এক অপূর্ব সুন্দরী নাগরাজকন্যা সূর্যদেবের প্রেমে পড়ে তাকে কামনা করেন| কিন্তু অধিক চেষ্টার পরেও ব্যর্থ হওয়াতে তিনি দুঃখে আত্মহত্যা করেন| তার শরীরের চিতাভস্ম থেকে জন্ম হয় পারিজাত বৃক্ষের| যার ফুল সূর্যের স্পর্শ পাওয়া মাত্রই মাটিতে ঝরে পড়ে অশ্রুবিন্দুর মতো এক ব্যর্থ প্রেমের প্রতীক হিসেবে| তাই আজও সূর্য ওঠার আগেই ঝরে যায় স্বর্গীয় শোভাধারী শিউলি| 

কিন্তু যত গল্পই প্রচলিত থাকুক না কেন এই ফুলকে কেন্দ্র করে, শিউলির গন্ধ কিন্তু শরতের আগমনের বার্তা বহন করে আনে তা কখনোই অস্বীকার করা যাবে না। 

বেল পাতা, শিউলিফুল, ঢাকের কাঠি, ঘণ্টা-কাঁসার আওয়াজ, মঙ্গল শাঁখ ও উলু ধ্বনিতে কেঁপে উঠবে প্রতিটি মন্দির। দেবী দুর্গাকে সবাই মা দুর্গা, পার্বতী, মহামায়া, কৈলাশি, দুর্গতিনাশিনী, পরমা প্রকৃতি, নারায়ণী, মাহেশ্বরী ইত্যাদি নানা নামে অভিহিত করেন। 

মায়ের আগমনে চারদিকে আনন্দ আয়োজন সম্পন্ন করার তাড়া এখন সবার। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। খুশির আনন্দ ছুঁয়ে যাচ্ছে ঘরে ঘরে, সব বয়সী মানুষের মনে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews