কোলেস্টেরল কমাবেন কীভাবে

শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া-বিক্রিয়ার অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হলো কোলেস্টেরল। কোলেস্টেরল স্বাভাবিক মাত্রায় রক্তে থাকলে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। বেড়ে গেলেই শরীরে যত ঝক্কি-ঝামেলা দেখা দেয়। সবার উচিত বয়স ৩০ হলে অথবা পরিবার বা বংশে যদি অল্প বয়সে কেউ হৃদরোগ বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হন, তাহলে লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করা। 

ভালো বনাম খারাপ কোলেস্টেরল
রক্তনালির দেয়ালে জীবন্ত কোষের অবিরাম ভাঙা-গড়া চলতে থাকে। কোষের এই ভাঙা-গড়ার প্রক্রিয়ায় এইচডিএল বা গুড কোলেস্টেরল রক্তনালি রক্ষায় পজিটিভ ভূমিকা পালন করে। এলডিএল কোলেস্টেরল, বিশেষ করে পরিবর্তিত অক্সিডাইজড এলডিএল রক্তনালির দেয়ালে এক ধরনের প্রদাহ সৃষ্টি করে। ধীরে ধীরে এই প্রদাহের ফলে রক্তনালির গায়ে চর্বির দল বা প্লাক গড়ে ওঠে রক্তনালিকে সরু করে রক্তের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে। সাধারণ মানুষ এটিকে ব্লক বলে থাকেন। কোনো ব্লক যখন ধমনির ৭০ শতাংশ সরু করে দেয়, তখন অল্প পরিশ্রমে বুকে ব্যথা, চাপ, শ্বাসকষ্ট বা ধড়ফড় শুরু হয়ে যায়। চিকিৎসার ভাষায় এটিকে বলে অ্যানজাইনা।

প্রতিরোধের উপায়
যেসব কারণে কোলেস্টেরল মেটাবলিজম ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে, সেগুলোর প্রতিকার করতে হবে। ডায়াবেটিসকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। উচ্চ রক্তচাপের উপযুক্ত চিকিৎসা করতে হবে। ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করতে হবে। ওজন কমাতে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। প্রয়োজনে চর্বি কমাতে চিকিৎসকের পরামর্শে স্ট্যাটিন জাতীয় ওষুধ খেতে হবে। 

কোলেস্টেরল কমানোর লক্ষ্যমাত্রা
মন্দ কোলেস্টেরলের এলডিএলের মাত্রা সুস্থ মানুষের জন্য ১৩০ থেকে ১৬০ মিলিগ্রামের মধ্যে থাকতে হবে। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের ক্ষেত্রে ১০০-এর মধ্যে রাখা নিরাপদ। যাদের ইতোমধ্যে হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে বা ব্রেইন স্ট্রোক অথবা পায়ের রক্তনালিতে ব্লক ধরা পড়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এলডিএলের মাত্রা ৭০ মিলিগ্রামের নিচে রাখতে হবে। ট্রাইমিসারাইডসের মাত্রা ২০০ মিলিগ্রামের নিচে রাখলে ভালো।

কোলেস্টেরলের রোগীর খাদ্যতালিকা
প্রচুর তাজা শাকসবজি, ফলমূল, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বেশি করে খাবেন। পর্যাপ্ত মাছ খাবেন, সামুদ্রিক মাছ হলে আরও ভালো। সপ্তাহে দু’দিন মুরগির মাংস খেতে পারেন। দিনের দু’বেলা ব্রাউন রুটি এবং দুপুরে এক বেলা পরিমিত পরিমাণে (সম্ভব হলে টেকিছাঁটা চালের) ভাত খাবেন। শরীরের মোট চর্বির প্রায় ৮০ শতাংশ তৈরি বা নিয়ন্ত্রণ করে লিভার। বাকি মাত্র ২০ শতাংশ আসে খাবার থেকে। শরীরের প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল ও পর্যাপ্ত আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি জোগান দিতে প্রতিদিন একটি কুসুমসহ ডিম ও পাতলা সরযুক্ত এক কাপ দুধ পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

লেখক: পুষ্টিবিদ 



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews