চলতি মৌসুমে দেশে আলুর উৎপাদন হয়েছে এক কোটি টন। কিন্তু চাহিদা রয়েছে ৮০ লাখ টন। বাকি ২০ লাখ টন আলুই বিক্রি করা যাচ্ছে না। এ কারণে সরকার, কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায়ী ও আলুচাষীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রায় দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন। এ লোকসান পোষাতে সরকারের কাছে বিনা সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো. মোশারফ হোসেন। এ সময় উপস্থিত সংগঠনটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. কামরুল হোসেন চৌধুরী, পরিচালক এমএ খান বেলাল, সচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ৮ দফা দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আলুর উৎপাদন অব্যাহত রাখতে আলু চাষীদের সহজ শর্তে বিনা সূদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা। ত্রাণকার্যে, কাবিখায়, ভিজিএফ-ভিজিডি এবং ওএমএসে চালের সঙ্গে আলু বিতরণের ব্যবস্থা করা। সরকারের বিভিন্ন বাহিনী, এতিমখানায়, জেলখানা, আবাসিক হলে ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আলুর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা। এছাড়া হিমাগার শিল্পের বিদ্যুৎ বিলের ২০ শতাংশ মওকুফসহ সরকারি পর্র্যায়ে শক্তিশালী মনিটরিং সেল গঠন করা। মোশারফ হোসেন বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় আলুর উৎপাদন ১৫-২০ লাখ টন বেশি। উৎপাদন বেশি থাকায় আলুর বাজারমূল্য সবসময় কম। দীর্ঘদিন সব ধরনের শাক-সবজির উচ্চ দাম থাকলেও আলুর দাম পাচ্ছে না কৃষক। আলু বিক্রি না হলে ফেলে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।’ তিনি বলেন, ‘কৃষক পর্যায়ে সরকার সারের মাধ্যমে ভর্তুকি দিচ্ছে। কৃষকের কাছ থেকে এই আলু কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে সংরক্ষণ করছে এবং সারা বছর সেটার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করছে। অথচ জুলাই থেকে আলুর ক্রমাগত দরপতনে এখন আলু বিক্রি করতে হচ্ছে ২-৩ টাকায়। এই লোকসান তো শুধু আমাদের নয়, এটা কৃষক -সরকারেরও। আমরা হিসাব করে দেখেছি এর পরিমাণ ২ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে আলু কেনা যাবে না। আর আলু না কিনলে কৃষক মার খাবে।’ আলু চাষের সঙ্গে দেশের প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষ নানাভাবে জড়িত বলেও উল্লেখ করেন সংগঠনের সভাপতি।