ছয়জনের পরিবারে চারজনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তাঁদের মধ্যে পরিবারের প্রধান মো. কামাল হোসেন মাঝি নিজেও একজন। জন্ম থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষটির জীবনের শুরু হয়েছিল বড় একটি স্বপ্ন নিয়ে—ধর্মীয় বক্তা হবেন, মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে তিলাওয়াত করবেন, হামদ-নাত গাইবেন, মানুষকে আলো দেখাবেন। মুখস্থ করেছিলেন পবিত্র কোরআনের ১৫টি পারা। কিছুদিন মাদ্রাসায়ও পড়েছেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়নি। অভাব আর দারিদ্র্য তাঁকে নামিয়ে এনেছে এমন এক বাস্তবতায়, যেখানে এখন তাঁর একমাত্র চাওয়া—দুই বেলা খেতে পারা আর মাথার ওপর ছাউনি।
ভোলার সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কন্দর্পপুর গ্রামে থাকেন কামাল। জনতাবাজার থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে তাঁর ঘর। বর্ষায় কর্দমাক্ত রাস্তা পেরিয়ে কোনো রিকশা যায় না, হাঁটতে হয়। গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশীর আধা মণ বীজধানের বস্তা মাথায় নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কামাল পড়ে যান। পথচারীরা আবার বস্তা কাঁধে তুলে দেন তাঁর। হয়তো এর বিনিময়ে কিছু টাকা পেয়েছেন, কিন্তু এত কষ্টের কাজ করেও পরিবারে তেমন কিছু যোগ হয় না।