পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ইশতিয়াক আহমেদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এ অভিযোগ জমা দেন রাশেদ।পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এসএম নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. খালিদ হোসেন, সুপ্রিমকোর্ট শাখার সদস্য সচিব ড. শোয়েব মাহমুদ, ঢাকা বারের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোছা. নার্গিস পারভীন, সুপ্রিমকোর্ট শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সাজেদুল ইসলাম রুবেল প্রমুখ।
অভিযোগে ২০১৮ সালের ১ জুলাই ইশতিয়াক আহমেদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটে তার কক্ষে রাশেদ খানের ওপর নির্যাতন চালান বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে রাশেদ খান জানান, ২০১৮ সালে গ্রেফতার করার পর পুলিশ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ইশতিয়াক আহমেদের কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি বুট জুতা পরা অবস্থায় তার (রাশেদ খান) গোপন অঙ্গে লাথি মারেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে গালিগালাজ ও অনবরত চড়থাপ্পড়, লাথি-ঘুসি মারতে থাকেন।ওই নির্যাতনের রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। সেই নির্যাতনে তার শরীরের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়। অনেক জায়গা থেঁতলে যায়। এখন মাঝেমধ্যে প্রেশার কমে শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ব্যথায় ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না, ঘুমের মধ্যে আঁতকে উঠেন।
অত্যাচার করা হলেও পুলিশ তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি- এমন অভিযোগ করে রাশেদ খান বলেন, ‘আমাকে মাত্র কয়েকটি ব্যথার ট্যাবলেট দিয়েছিল পুলিশ।’
ইশতিয়াক আহমেদকে গ্রেফতারে দেরি করা হয়েছে উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘বিচার যত ধীরে শুরু হবে, অপরাধীরা তত দেশ ছেড়ে পালাবে। প্রশাসনের গাফিলতির সুযোগে অনেক অপরাধী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অন্য অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।’
ইশতিয়াকের নির্যাতনের শিকার অন্য ভুক্তভোগীদেরও মামলা করার আহ্বান জানান রাশেদ খান।তিনি বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, ইশতিয়াক আহমেদ জামিন পেয়ে যেতে পারেন। তাকে ছাড়া হলে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে অন্যায় করা হবে।’
উল্লেখ্য, গত রোববার সিটিটিসির সাবেক এই এডিসিকে রাঙামাটি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল (মঙ্গলবার) ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।