নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস, সকাল থেকেই ভারীবৃষ্টি। তার মধ্যে কাকরাইল মসজিদ ও মৎস্য ভবন মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ইশরাক হোসেন সমর্থকরা। অপর দিকে ঢাবি ছাত্র সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগ মোড় ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ছাত্রদল। এতে করে তীব্র যানজটে প্রায় অচল হয়ে পড়ে গোটা রাজধানী। ভয়াবহ গরম আর তীব্র যানজটে পড়ে ভোগান্তির শেষ ছিল না রাজধানীবাসীর।

সকাল থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এসব স্থান অবরোধের কারণে যানজট ছড়িয়ে পড়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। তার মধ্যে ভারী বৃষ্টির কারণে পানি জমে বেশির ভাগ রাস্তায়। পানির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়লেও গণপরিবহন থেকে নেমে হেঁটে যাওয়ার উপায় ছিল না অনেকের। এর মধ্যে জলাবদ্ধতার কারণে রিকশা, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে সড়কের মাঝে আটকে থাকতেও দেখা যায় কোনো কোনো এলাকায়।

ট্রাফিক পুলিশ, ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা যায়, রাস্তা অবরোধের পরও গণপরিবহনগুলো বিকল্প সড়ক ব্যবহার করে ধীরগতিতে চলাচল করছিল। কিন্তু সকালে বৃষ্টি শুরুর পর যানজট বাড়তে থাকে। এরপর যখন বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় তখন দুর্ভোগ বেড়ে যায়। এ ছাড়া শাহবাগ, মৎস্য ভবন মোড় ও কাকরাইল এলাকায় অবরোধ থাকায় দুর্ভোগের অন্ত ছিল না মানুষের।

সকাল গড়িয়ে দুপুরেও জলাবদ্ধতা আর আন্দোলনে যানজট ছিল চরমে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সব স্কুল-কলেজ ছিল খোলা। একই সাথে সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালতে ছিল ভিড়। সকাল থেকে কর্মজীবী মানুষ যখন সড়কে নেমেছে তখন তাদের দুর্ভোগ শুরু হয়। একপ্রকার যুদ্ধ করেই কর্মস্থলে যান মানুষ।

সকাল ৯টায় রাজধানীর ৬০ ফুট এলাকা থেকে পল্টনের উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছিলেন মামুন। সকাল পৌনে ১০টা থেকে ১০ টার মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিনি পল্টনে পৌঁছান বেলা ১টায়।

এক যাত্রী বলেন, এভাবে আর কতদিন চলবে? আমাদের মতো মানুষের কথা কেউ কখনো শুনেছে? কোনো সরকারই আমাদের কথা শোনেনি। রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন আর কতদিন চলবে বলতে পারেন কেউ? আমার মতো চাকরিজীবীদের যদি ৩-৪ ঘণ্টা ধরে অফিসে যেতে হয় তাহলে কিভাবে চাকরি থাকবে?

আরেক বেসরকারি চাকরিজীবী জানান, মুগদা থেকে মালিবাগ হয়ে সেগুনবাগিচায় এসেছেন। আধঘণ্টার রাস্তা আসতে সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টার বেশি। মাঝে মালিবাগ কমিউনিটি সেন্টার ও আশপাশের এলাকায় ছিল হাঁটু সমান পানি। জলাবদ্ধতা আর যানজটে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।

আজিমপুর থেকে আসাদগেট আসা শফিউল বলেন, আজিমপুর থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় রওনা হই। নিউ মার্কেট পার হয়ে ঢাকা কলেজের সামনের রাস্তা পানিতে ডুবে ছিল। এমন সময় রিকশা পানির মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। পাশ দিয়ে যখন বাস চলছিল তখন মনে হচ্ছিল যেন বড় স্রোত বয়ে যাচ্ছে।

মালিবাগের বাসিন্দা সাদেকুল বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে আমাদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। সামান্য বৃষ্টিতেই এলাকার অলিগলির রাস্তাগুলো ডুবে যায়। পুরো এলাকা পানিতে থই থই করে। এর কোনো স্থায়ী সমাধান নেই। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক না হলে এই দুর্ভোগ থেকে আমাদের মুক্তি নেই।

সড়কের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো: সরওয়ার বলেন, ঢাকার অনেক রাস্তায় অবরোধের কারণে বন্ধ। এরপর বৃষ্টির কারণে অনেক সড়ক ডুবে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের ট্রাফিক পুলিশেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অবরোধ উঠে গেলে সড়ক স্বাভাবিক হয়ে আসবে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews