রাজশাহী: মরুদ্যানের মতো তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহীতে। বইছে লু-হাওয়া।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত বছরের ১৭ এপ্রিল রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর চলতি বছরে ২৬ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলো ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ২০০৫ সালের এপ্রিলও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।  

তাই অচল হয়ে পড়েছে রাজশাহীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিরূপ প্রকৃতির কাছে যেন হার মানছে সবকিছুই। থমকে দাঁড়িয়েছে জনজীবন। এপ্রিলজুড়ে স্মরণকালের তপ্ত মৌসুম পার করছেন রাজশাহীর মানুষ। মৃদু থেকে মাঝারি, মাঝারি থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে খরাপ্রবণ এ রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে। সবশেষ তিনদিনেই রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ গিয়ে ঠেকল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।  

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানিয়েছে- বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। চলতি মওসুমে গতকাল পর্যন্ত এটিই ছিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছি ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন রোববারও (২১ এপ্রিল) একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর ২২ এপ্রিল রেকর্ড হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৩ এপ্রিল রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ২৪ এপ্রিল ছিল ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ তাপমাত্রার নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে পদ্মাপাড়ের এ মরু শহর। টানা তীব্র তাপপ্রবাহ যেন স্থায়ী রূপ নিয়েছে এখানে।  

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল এ রাজশাহীতেই। ওইদিন রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। আর বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত তাপমাত্রার এ রেকর্ড আর ভাঙেনি।  

তবে দেশে এবারের চলমান অস্বাভাবিক তাপমাত্রা আগের সেই সর্বোচ্চ রেকর্ড অতিক্রম করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।  

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক মো. গাওসুজ্জামান বলেন, ভারী বর্ষণ ছাড়া আপাতত এ তীব্র তাপপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আর দুই একদিনের মধ্যে রাজশাহীতে বৃষ্টিপাতেরও কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই আপাতত বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  

এদিকে টানা তাপপ্রবাহে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। খরতাপে ঝরে পড়ছে আম ও লিচুর গুটি। বৃষ্টির জন্য হাহাকার থামছেই না। দুঃসহ এ গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে আজও ‘সালাতুল ইস্তিসকার’ আদায় করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টায় রাজশাহীর তেরখাদিয়ায় থাকা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়াম মাঠে এ সালাতুল ইস্তিসকারের আয়োজন করা হয়। নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে তওবা করে সব পাপ থেকে পানাহ চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে বৃষ্টির জন্য আল্লাহর কাছে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। অনাবৃষ্টি ও তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে টানা তৃতীয় দিনের মতো নামাজ অনুষ্ঠিত হবে আগামী শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
এসএস/আরবি



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews