জাপানের নাগাসাকি শহরের অলিগলি ও বাজারজুড়ে দেখা মেলে এমন কিছু বিড়ালের, যাদের লেজ কখনও খুঁটির মতো বাঁকা, কখনও বা গোছানো ঝুঁটির মতো গোঁজানো থাকে। জাপানে এই বাঁকা লেজের বিড়াল—স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘ওমাগারি নেকো’ বা ‘কাগি নেকো’ নামে— যেগুলোকে শুভ লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়।



ওমাগারি নেকো শ্রাইন নামে একটি শিন্তো মন্দিরও রয়েছে এই নাগাসাকিতে, যা এই বিশেষ প্রজাতির বিড়ালদের উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়েছে। বিড়ালপ্রেমীদের জন্য এটি এক ধরনের তীর্থস্থান।







ওমাগারি নেকো শ্রাইনের কর্মী ও নাগাসাকি ক্যাট সোসাইটির সদস্য কাজুয়া হিদেশিমা জানান—নাগাসাকির প্রায় ৮০% বিড়ালের লেজে এই ধরনের বাঁক পাওয়া যায়, যা জাপানের অন্য যেকোনো শহরের তুলনায় দ্বিগুণ।

ঐতিহাসিকদের মতে, জাপানে বিড়াল আসে ছয় শতকে, চীন থেকে আগত বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সঙ্গে। সেসময় বিড়ালদের কাজ ছিল জাহাজে থাকা ইঁদুর শিকার করে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ রক্ষা করা। নাগাসাকির বিড়ালদের উৎপত্তি আরও বৈচিত্র্যময়। ১৭ থেকে ১৯ শতকের মধ্যে, যখন জাপান ছিল বাইরের দুনিয়া থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন, তখন ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ থেকে পণ্য আসা শুরু হয়। সেই সময়ই সঙ্গী হয়ে আসে এই বাঁকা-লেজের বিড়ালরা। তাদের কাজ ছিল রত্ন, কাপড় ও খাদ্যপণ্যবাহী জাহাজে ইঁদুর ধরার মতো দায়িত্বপূর্ণ কাজ।

পশু চিকিৎসক ও বিড়াল বিশেষজ্ঞ সোশিন ইয়ামামোতো জানান, এটি একটি প্রাকৃতিক জেনেটিক মিউটেশন, যা বিচ্ছিন্ন পরিবেশে আরও গাঢ়ভাবে প্রকাশ পেয়েছে। তবে মানুষের কাছে থাকলে এদের লেজে বাঁক থাকাটা কোনও সমস্যা নয়, যতক্ষণ না তারা বনে-জঙ্গলে ছুটোছুটি করে বেড়ায়।

নাগাসাকির মানুষ এখন এই বিড়ালদের ঘিরেই পর্যটন ও স্থানীয় ব্যবসা বাড়াতে চাইছেন। সম্প্রতি টোকিও থেকে ঘুরতে আসা ৫০ বছর বয়সী পর্যটক নাটসুনো কানির কথায়, আমি জানতাম নাগাসাকির বিড়ালদের লেজ বাঁকা হয়, তাই মন্দির দেখতে এসেছি।

তবে স্পেন থেকে আসা শিল্পী আবিগেইল তারাসো বা যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পী সিন্ডি বিআইয়ের মতো বিদেশিদের কাছে এখনও এটি বিস্ময়কর নতুন অভিজ্ঞতা। সিন্ডি বলছিলেন, এই প্রথম শুনলাম এমন বিড়ালের কথা। এখন আশেপাশে খুঁজে দেখবো, যদি কোনওটা চোখে পড়ে।

নাগাসাকির বাঁকা লেজের বিড়াল শুধু ঐতিহ্য নয়, হয়ে উঠছে শহরের সৌভাগ্যের প্রতীকও।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এমএম



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews