কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন ও অভিনেতা সুব্রতকে নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন নন্দিত গীতিকবি মুনশী ওয়াদুদ। তবে এই বিব্রতকর পরিস্থিতির পেছনে সাবিনা-সুব্রতর কোনও হাত নেই। পুরো দায়টি পড়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ঘাড়ে।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় আজ রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সাবিনা ইয়াসমীনকে সম্মাননা প্রদান এবং তার একক সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যা সাতটায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে এ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছেন দেশের শিল্প-সংস্কৃতির বিশিষ্টজন। বিশেষ করে সাবিনা ইয়াসমীনের দীর্ঘ সংগীত জীবনে যাদের অংশগ্রহণ রয়েছে।

সেই সূত্রে গীতিকবি মুনশী ওয়াদুদের বাসায় পাঠানো হয়েছে অনুষ্ঠানটির আমন্ত্রণপত্র। প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়ানো উক্ত প্যাকেট খুললে দেখা যায়, এটির খামে লেখা অভিনেতা সুব্রতর নাম! বিষয়টি দেখে বেজায় বিব্রত হলেন গীতিকবি। তিনি দ্বিধায় পড়ে গেলেন, অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণের বিষয়ে।

যা তিনি ছবিসহ ভাগ করে নিলেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে। জানতে চাইলেন, এমন পরিস্থিতিতে তিনি এখন কী করবেন? তার ভাষ্যে, ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে আমার নাম-ঠিকানায় এই আমন্ত্রণপত্রটি পাঠানো হয়েছে। পলিথিনের ব্যাগ খুলে দেখি খামের ওপর আমার নাম নয়, অভিনেতা সুব্রতের নাম লেখা। এখন এই অনুষ্ঠানে কি আমার যাওয়া শোভন হবে? আমি এখন কী করবো?’

কবির এমন জিজ্ঞাসার উত্তরে বেশিরভাগই বলেছেন, যাওয়া ঠিক হবে না। কারণ এটি এক ধরনের অপমান। আবার অনেকে বলেছেন, ভুল হতেই পারে। অনুষ্ঠানে তার অংশ নেওয়া উচিত। যদিও শেষ পর্যন্ত এই গীতিকবি অনুষ্ঠানটিতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বাংলা ট্রিবিউন-এর কাছে। বলেছেন, ‘আমার খুবই ইচ্ছা ছিল অনুষ্ঠানটিতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে। কিন্তু এখন শুনছি অনেকের বেলাতেই এমন ভুল হয়েছে। যা মোটেই ঠিক হয়নি।’ 

এদিকে শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, আজকের অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাবিনা ইয়াসমীনকে সম্মাননা প্রদান করবেন। উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান।

‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ শিরোনামে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে প্রদর্শিত হবে সাবিনা ইয়াসমীনকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র। থাকছে দেশবরেণ্য শিল্পীদের স্মৃতিচারণা, নবীন শিল্পী ও সংগীত পরিচালকদের কম্পোজিশনে তার গান পরিবেশনা এবং শিল্পীর একক সংগীতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন অভিনেতা, নির্মাতা আফজাল হোসেন।

সাবিনা ইয়াসমীন ও সুব্রতকে নিয়ে বিব্রত মুনশী ওয়াদুদ!





বাংলা গানের গৌরব সাবিনা ইয়াসমীন ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছয় বছর বয়সে গান গেয়ে প্রথম পুরস্কার জেতেন অল পাকিস্তান স্কুল মিউজিক কম্পিটিশনে। ১৯৬২ সালে রবীন ঘোষের সুরে ছোটদের জন্য গান গেয়ে সংগীতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশ করেন। একই বছর এহতেশাম পরিচালিত নতুন সুর ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে গান করেন। ১৯৬৭ সালে আমজাদ হোসেন ও নুরুল হক বাচ্চু পরিচালিত ‘আগুন নিয়ে খেলা’ চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাক করেন।

এরপর একে একে হয়ে ওঠেন বাংলা গানের অপরিহার্য কণ্ঠস্বর। সত্য সাহা, আলম খান, সুবল দাস, আলাউদ্দিন আলী, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলসহ অসংখ্য কিংবদন্তি সুরকারের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রের গানসহ বিভিন্ন ধারায় ১৬ হাজারের বেশি গান রেকর্ড করেছেন তিনি। আধুনিক গান, পল্লিগীতি, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত ও গজল—সব ক্ষেত্রেই রেখেছেন সুরেলা স্বাক্ষর। 

বাংলাদেশে তিনিই একমাত্র শিল্পী, যিনি ১৫ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে রেকর্ড গড়েছেন। পেয়েছেন একুশে পদক (১৯৮৪), স্বাধীনতা পুরস্কারসহ (১৯৯৬) দেশে-বিদেশে বহু সম্মাননা।

ওই যে ডুবলাম আর ভাসতে পারিনি: মুনশী ওয়াদুদ



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews