একসময় সারা বছর নানা মেলার দখলে ছিল আউটার স্টেডিয়াম মাঠ। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে এখন মাঠটি ঘিরে চলছে খেলার উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার কর্মযজ্ঞ। ইতোমধ্যে নগরবাসীর দৃষ্টি কেড়েছে মাঠের সবুজ ঘাস। সবুজ ঘাসে যেন প্রাণ ফিরে পেতে চলেছে নান্নু-আকরামদের খেলা এ মাঠের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্ষার আগেই খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হবে আউটার স্টেডিয়াম মাঠ। ইতোমধ্যে সবুজ ঘাস লাগানো হয়েছে। মাঠের চারপাশে ফেন্সি দিয়ে কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ক্রীড়া সংগঠকরা বলছেন, একসময় অনেক খেলার মাঠ ছিল, ধীরে ধীরে তা হারিয়ে গেছে। নতুন করে আউটার স্টেডিয়াম খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, এটা অত্যন্ত আনন্দের খবর।
সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, আউটার স্টেডিয়ামে ইতোমধ্যে সবুজ ঘাস লাগানো হয়েছে। মাঠের চারপাশে ফেন্সিং দিয়ে প্রথম ধাপের কাজ শুরু করেছে টেন্ডারের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া প্রতিষ্ঠান। আসন্ন বর্ষার আগেই মাঠ খেলার উপযোগী হিসেবে গড়ে উঠবে। দীর্ঘদিন ধরে দখলদারদের হাতে থাকা এ স্টেডিয়াম খেলার উপযোগী করে নান্দনিকভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে, হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা হবে। জানা যায়, একসময় সারা বছরই আউটার স্টেডিয়াম দখল করে চলত বাণিজ্য মেলা, শিল্পমেলা, গরুমেলা, পণ্যমেলা, বৃক্ষমেলা, বিজয় মেলা, তাঁতশিল্প মেলাসহ হরেকরকম মেলা। ফলে যে মাঠে খেলে উঠে এসেছেন আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আশিষ ভদ্র, তামিম ইকবাল খান, আফতাব আহমেদের মতো খেলোয়াড়, সে মাঠে খেলার সুযোগ পাচ্ছে না বর্তমান প্রজন্ম। মাঠটি মেলামুক্ত করতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন করেছে রাজনৈতিক দল, ক্রীড়া সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ। যার ফলে সংস্কার হচ্ছে আউটার স্টেডিয়ামের মাঠটি। এ ছাড়া মাঠটি সগৌরবে ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করেছেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) নিজস্ব অর্থায়নে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে এ প্রকল্প। আউটার স্টেডিয়ামের বর্তমান আয়তন ১১ হাজার বর্গফুট। এর মধ্যে ৮ হাজার বর্গফুটে হবে ফুটবল খেলার মাঠ। মাঠের চারপাশে ক্রিকেট নেট প্র্যাকটিস, ভলিবলসহ নানা খেলাধুলার জন্য ব্লক থাকবে। সুইমিং পুলের দেয়ালের দিকে হবে নেট প্র্যাকটিস ব্লক। স্টেডিয়ামের গ্যালারির দিকে ১৫০ থেকে ২০০ লোকের বসার জন্য গ্যালারি এবং সার্কিট হাউস প্রান্ত ও নুর আহমদ চৌধুরীর প্রান্তে হবে ওয়াকওয়ে। এ ছাড়া বাকি জায়গায় টয়লেট সুবিধা, ড্রেসিং রুম ও বসার জায়গা থাকবে। এর আগে আউটার স্টেডিয়াম এলাকায় দুই পাশে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদ করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। খেলার মাঠ দখলমুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অংশ হিসেবে এ উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়। ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আউটার স্টেডিয়াম উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।